RAM, অস্থায়ী স্মৃতি -
১) Static RAM বা ক্যাশ মেমোরী
২) Dynamic RAM
RAM এর পূর্ণ নাম (Random Access Memory)| ইহাকে আভ্যন্তরীন মেমরি বলে। কিন্তু ইহা অস্থায়ী অর্থাৎ বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে গেলে RAM সংরক্ষিত তথ্য সম্পূর্ণ ভাবে মুছে যায়। RAM অত্যন্ত সহজে তথ্য সংরক্ষণ করা যায় এবং সহজ ভাবেই র্যাম থেকে তথ্য মুছে দেয়া যায়। এজন্য RAM কে লিখন/পঠন মেমরিও বলা হয়ে থাকে।
বৈশিষ্ট্য -
o RAM উদ্বায়ী মেমরি।
o RAM প্রতিটি মেমরি স্থানের জন্য এক্সেস টাইম (Access time) বা নাগাল সময় সমান।
o সমান সুবিধায় র্যামে তথ্য সংরক্ষণ করা যায় এবং র্যাম থেকে তথ্য পঠন করা যায়।
RAM দুই ধরনের -
o স্ট্যাটিক RAM
o ডাইনামিক RAM
Static RAM (বা ক্যাশ Cache মেমরী) - মাইক্রোপ্রসেসরের কাজ ডাটা প্রসেস করা। এর যখন কোন ডাটার প্রয়োজন তখন সেই ডাটার এড্রেস মেমরি লোকেশন উল্লেখ করে তার জন্য অনুরোধ করে। একে আমরা বলি রিড অপারেশন। এই ডাটা প্রসেসের পর তার ফলাফলকে মেমরির কোথাও সংরক্ষণ করে রাখা হয়। কোথায় সংরক্ষণ করা হবে তা মাইক্রোপ্রসেসর উল্লেখ করে দেয়।
কম্পিউটারের গতি বা কার্যক্ষমতা নির্ভর করে প্রসেসর কত দ্রুত বিভিন্ন ডাটা মেনিপুলেট করতে পারে প্রধানতঃ তার উপর। একটু আগে আমরা দেখেছি ডাটা প্রসেসিং এর পুর্বে মাইক্রোপ্রসেসরকে মেমরী থেকে সে ডাটা পেতে হয় এবং প্রসেসিং এর পরে মেমরিতে তা সংরক্ষণ করতে হয়। এমনও হতে পারে যে ডাটা প্রসেস করতে মাত্র ২ টি ক্লক সাইকেলই যথেষ্ট। আবার এমনও দেখা যায় যে, ডাটা মেমরী থেকে পড়ে আনতে এবং তা আবার মেমরিতে জমা করতে ২০ টি ক্লক সাইকেল খরচ হয়ে যায়। এর কারণ হল সাধারণত যে মেমরি চিপগুলো (অর্থাৎ র্যাম) আমরা ব্যবহার করি তা ততটা দ্রুত গতি সমপন্ন হয় না। অর্থাৎ তারা মাইক্রোপ্রসেসর এর গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। এখানে উলে¬খ্য যে সাধারণ র্যাম-এর এক্সেস টাইম ৭০/৬০ ন্যানো সেকেন্ড।
ডাটা মাইক্রোপ্রসেসর-এর নিয়ন্ত্রণে আসা এবং তা জমা করার জন্য যে বিপুল সময়ের দরকার হয় তা আমরা অনেকখানি কমিয়ে ফেলতে পারি যদি আমরা ষ্ট্যাটিক র্যাম বা ক্যাশ মেমরী ব্যবহার করি। ক্যাশ মেমরি থাকে মাইক্রোপ্রসেসর এবং প্রধান মেমরি-এর মাঝামাঝি। ক্যাশ মেমরি সাধারণত আকারে ছোট, দামে বেশি এবং বেশ দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়। বাজারে বর্তমানে যে ক্যাশ মেমরি পাওয়া যায় তার এক্সেস টাইম ১৫ ন্যানোসেকেন্ড-এর মত। বাজারে বিভিন্ন আকারের (৫১২ কিলোবাইট থেকে ৬ মেগাবাইট) ক্যাশ মেমরি পাওয়া যায়।
ক্যাশ মেমরি দুই ধরনের হয় -
• ইন্টারন্যাল ক্যাশ মেমরি - এটা সিপিইউ-এর ভিতরে অবস্থিত। ইহাকে এল-১ (লেভেল-১) ক্যাশ মেমরি বলে। এর আকার ৫১২ কিলোবাইট পর্য্যন্ত হতে পারে।
• এক্সটারনাল ক্যাশ মেমরি (এল-২,এল-৩ মেমোরী) - এটা মাদারবোর্ডে বসানো থাকে। ইহাকে এল-২ (লেভল-২) ক্যাশ মেমরি বলে। এর আকার ৫১২ থেকে ২০০০ কিলোবাইট পর্য্যন্ত হতে পারে। কোন কমিপউটারে এক্সটারনাল ক্যাশ মেমরি থাকলে মাইক্রোপ্রসেসর রিড রিকোয়েস্ট ইস্যু করার সাথে সাথে ক্যাশ মেমরি থেকে সেই ডাটা দ্রুত মাইক্রোপ্রসেসর পৌঁছাতে পারে। বর্তমানে ডাবল ও কোয়াড কোর প্রসেসরে ১ -২ মেগাবাইট এল-৩ (লেভেল-৩) ক্যাশ ব্যবহৃত হচ্ছে।
এখানে উল্লেখ্য যে মাইক্রোপ্রসেসর যে ডাটার জন্য অনুরোধ করলো তা ক্যাশ-এ না থাকে তাহলে আবার মেইন মেমরি থেকে পড়ে নিতে হবে এবং এতে করে সেই আগের মতই অনেক সময়ের অপচয় হবে। তাহলে দেখা যাচেছ মাইক্রোপ্রসেসর-এর কখন কোন ডাটা প্রয়োজন হবে তা আগে থেকেই আমাদের জানতে হবে এবং সেইমত সেগুলোকে ক্যাশ-এ এনে রাখতে হবে। প্রকৃতপক্ষে এর উপরই নির্ভর করবে ক্যাশ-এর কার্যকারিতা এবং কর্মক্ষমতা। আমরা জানি কমিপউটারের প্রোগ্রাম হল কতক গুলো নির্দেশনা বা ইন্সট্রাকশন এর সমষ্টি। প্রোগ্রামগুলো যতক্ষণ ধরে চলে তার অধিকাংশ সময়ই ব্যয় হয় বিশেষ কতগুলো ইন্সট্রাকশন কে সমপাদন করার জন্য। এই ইন্সট্রাকশন গুলো বিভিন্ন ধরনের লুপ হতে পারে বা হতে পারে কিছু ছোট প্রোসিডিওর বা ফাংশন , যারা একে অপরকে সম্পাদন করছে বার বার । এই ইন্সট্রাকশন গুলো সাধারণত মেমরিতে পাশাপাশি অবস্থান করে। প্রোগ্রাম-এর এই ধর্মকে বলা হয় লোকালিটি অব রেফারেন্স। এখন মাইক্রোপ্রসেসর যখন কোন বিশেষ ইন্সট্রাকশনের উপর কাজ করছে তখন যদি আমরা ঐ ইন্সট্রাকশন এবং তার সাথে সমপর্ক যুক্ত অন্যান্য তথ্যকে ক্যাশ-এ এনে রেখে দেই তা হলে মাইক্রোপ্রসেসর বার বার ক্যাশ থেকেই তা পড়তে পারবে, দুরের কম গতি সমপন্ন মেইন মেমরি থেকে পড়তে হবে না। এতে করে অল্প সময়ে অনেক কাজ করা সম্ভব হবে। এখন ধরা যাক ক্যাশ মেমরি তথ্য দ্বারা পরিপুর্ণ এবং এই অবস্থায় মাইক্রোপ্রসেসর এমন কিছু তথ্য চাইল যা ক্যাশ-এ নাই। সেক্ষেত্রে মেইন মেমরি থেকে তা পড়ে মাইক্রোপ্রসেসরকে সাপ্লাই দিতে হবে এবং আগের মত এই তথ্য এবং তার আশে পাশের কিছু তথ্য (ডাটা বার ইন্সট্রাকশন) এনে ক্যাশ-এ রাখবে এই আশাতে যে মাইক্রোপ্রসেসর একটু পরেই আবার এখান থেকে তথ্য চাইবে। প্রশ্ন হলো পরিপুর্ণ ক্যাশ-এর কোন তথ্য টুকু মুছে ফেলে আমরা নতুন তথ্য রাখবো। এক্ষেত্রে বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করা হয়। আমরা লক্ষ্য করবো ক্যাশ-এ অবস্থিত তথ্য-এর কোন অংশটুকু সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা হচেছ না। যে অংশটুকু সবচেয়ে বেশি সময় অব্যবহৃত আছে তাকে আমরা বাদ দেব বা মুছে ফেলব (অবশ্যই প্রধান মেমরিতে একটা কপি রাখতে হবে)। এই পদ্ধতিকে বলা হয় এলআরইউ (LRU= Least Recently Used replacement algorithm)|
বর্তমানে যত নতুন নতুন মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি হচেছ সেগুলোতে বেশি বেশি করে ইন্টারন্যাল ক্যাশ ব্যবহার করা হচেছ তাদের পারফরমেন্স বৃদ্ধির জন্য। অনেক মাইক্রোপ্রসেসরে আবার ইন্সট্রাকশন এবং ডাটা এর জন্য আলাদা ক্যাশ ব্যবহার করা হচেছ। যেমন মটোরোলা -৬৮০৪০-এ ৪ কিলোবাইট করে ইন্সট্রাকশন ও ডাটা ক্যাশ রয়েছে। পাওয়ার পিসি ৬০৪ এর ইন্সট্রাকশন ডাটা ক্যাশ প্রতিটিই ১৬ কিলোবাইট। ইন্টারনাল ক্যাশ-এ তো আমরা হাত দিতে পারবো না। তবে এক্সটারনাল ক্যাশ-এর পরিমাণ বাড়িয়ে আমরা আমাদের পিসির কর্মদক্ষতা কিছুটা হলেও সাফল্যজনকভাবে বাড়াতে পারি।
বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটিক RAM-
• ASRAM (Asynchronous SRAM) - ইহাই সেই সনাতন এল-২ ক্যাশ মেমোরী যার access rate (20ns,15ns,12ns) DRAM এর চেয়ে বেশী।
• SSRAM/SBSRAM (Synchronous-Burst SRAM) - এই এল-২ ক্যাশ মেমোরীর access rate তুলনামুলক কম ( 8.5 &12ns) । ইহা 60-66 MHz স্পীডযুক্ত মাদারবোর্ডে দ্রূত কাজ করে।
• PBSRAM(Pipeline Burst SRAM)- ইহাই সবচেয়ে দ্রূতগতির ক্যাশ মেমোরী (access rate 4.5 ns to 8 ns) । ইহা 75 MHz স্পীডযুক্ত মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে।
(Dynamic RAM ) - ইনপুট ডিভাইস হতে আগত সব তথ্য রামে এসে জমা হয় এবং প্রক্রিয়াজাত হওয়ার জন্য অবস্থান করে। সিপিইউ অতি সহজে র্যাম থেকে তথ্য বা নির্দেশ নিয়ে ফলাফল তৈরি করে সংরক্ষণের জন্য আবার র্যামে পাঠায়। র্যামে তথ্য জমা থাকে অস্থায়ী ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে। এ জন্য র্যামে সব তথ্য থাকে অস্থায়ীভাবে। মাইক্রোপ্রসেসর সরাসরি র্যামের জন্য অস্থায়ী ঠিকানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কাজ করে বা তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে। এখানে সরাসরি (Random) তথ্য সংগ্রহ করার জন্য যাওয়া যায় (Access) বলে একে Random Access বলা হয়। কম্পিউটারের স্যুইচ বন্ধ করলে বা কোন কারণে বিদ্যুৎ প্রবাহ বিঘ্ন ঘটলে র্যামে সঞ্চিত সকল তথ্য বা প্রোগ্রাম মুছে যায়। মাদার বোর্ডে র্যামগুলো স্লটে ব্যাংক আকারে বসানো থাকে। বাজারে বর্তমানে সর্বোচচ ৬৪ -১২৮ মেগা-বাইট (MB-Mega Byte) মানের র্যাম পাওয়া যায়। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত র্যাম লাগিয়ে কম্পিউটারে অস্থায়ী মেমোরি বাড়ানো যায়। রামের ধারন ক্ষমতা বেশি হলে উন্নতর এপ্লিকেশন প্রোগ্রাম (যেমন- উইন্ডোজ এক্সপি, ফটোসপ ইত্যাদি ) নিয়ে দ্রূত কাজ করা যায়। র্যামের ক্ষমতা বেশি হলে কাজের গতি ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে উইন্ডোজ ভিত্তিক উন্নত প্রোগ্রাম চালনা করতে বেশী র্যাম এর প্রয়োজন হয়।
মেমোরী ষ্ট্রাকচার এবং প্যাকেজ ষ্টাইল - এক্সপানশন ডিভাইসের উপর ভিত্তি র্যামের ষ্ট্রাকচার বিভিন্ন রকমের হয় । নিম্নে বিভিন্ন প্যাকেজের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো -
o SIMM (Single In-Line Instruction Module) - ৩০ পিন বিশিষ্ট সিম প্যাকেজ ৮-বিট ডাটা ট্রান্সফার করে এবং ৪ মে:বা: র্যাম ধারন করতে পারে। ৭০ পিন বিশিষ্ট সিম প্যাকেজ ৩২-বিট ডাটা ট্রান্সফার কবে এবং ৩২ মে:বা: এবং তদোর্ধ র্যাম ধারন করতে পারে। বর্তমানে ইহার ব্যবহার নাই বললেই চলে।
o DIMM (Double In-Line Instruction Module) - ইহা ১৬৮ (উভয় পার্শ্বে ৮৪) পিন বিশিষ্ট এবং ৩২-৬৪ বিট ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। ইহা ৫১২ মে:বা: এবং তদোর্ধ র্যাম ধারন করতে পারে। বর্তমানে ইহাই সবচেয়ে বেশী প্রচলিত র্যাম।
o DIP (Dual In-Line Package) - বর্তমানে ইহার ব্যবহার খুব বেশী হয়না। তবে কোন কোন ভিডিও বোর্ডে ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ইহা বড় সাইজের বলে বেশ জায়গা দখল করে।
o SIP (Single In-Line Package) -এই ধরনের আইসি আর ব্যবহার হয় না বললেই চলে । ২৮৬ এবং ৩৮৬ মডেলের কমপিউটারের সময় এর আবির্ভাব হয়।
o SOJ (Single Outline "J" Lead)- ইহাও পুরাতন (২৮৬ এবং তার পুর্বের মডেলের) পিসিতে ব্যবহার হতো।
o TSOP (Thin, Small Outline Package)- ইহা ছোট এবং পাতলা বিধায় নোটবুক এবং পিসি কার্ডে ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্ন ধরনের ডাইনামিক RAM (Dynamic RAM )
• FPM DRAM (Fast Page Mode DRAM)- ইহা সাধারন DRAM এর মতই - আজকাল শুধু ভিডিও বোর্ডে এই র্যাম ব্যবহার হচ্ছে।
• EDO RAM (Extended Data Output RAM) - ইহা DRAM এর উন্নত সংস্করন। ইহা সাধারন DRAM এর চেয়ে ১৫-৩০% ভাল পারফামেন্স দেয় , তবে এজন্য EDO সাপের্টিং মাদারবোর্ড তথা চিপসেট লাগবে। ইন্টেলের Triton ছাড়াও আধুনিক অন্যান্য চিপসেট এই র্যাম সাপোর্ট করে।
• BEDO RAM (Burst Extended Data Output RAM) - ইহা EDO DRAM এর উন্নত ও শক্তিশালী ভার্সন । কিন্তু ইহা VIA chipset ছাড়া অন্য কোন চিপসেট সাপোর্ট করে না এবং ৬৬ মেহাহার্জ এর উপরে বাস সাপোর্ট করে না।
• SDRAM (Synchronous DRAM)- ইহা Pipeline Burst mode সাপোর্ট করে বলে ইহা দ্রূত গতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে ( Access rate 10 ns এবং ডাটা ট্রান্সফার রেট 100MB/Sec )। তদুপরি ইহা ১০০ মেগাহার্জ বাস স্পীড সম্পন্ন মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে। ফলে ইহা সবচেয়ে জনপ্রিয় ডি-র্যাম।
• CDRAM (Cached DRAM) - DRAM এবং Cache মেমোরী একই আইসিতে তৈরী বলে এল-২ ক্যাশ প্রয়োজন হয় না। ইহা EDRAM এর চেয়ে ১৫-২০% বেশী দ্রূত কাজ করে।
• VDRAM(Video DRAM) - ইহা ভিডিও মেমোরীতে সাধারন ডি-র্যামের চেয়ে ভাল পারফরমেন্স দেখায়। বিশেষ করে উচ্চ রিজলিউশন ( ১০২৪ 1024´ ৭৬৮ বা তার উর্দ্ধ) যুক্ত সিষ্টেমে।
• WDARM(Windows DRAM)- ইহা একটি ভিডিও ভিত্তিক মেমোরী ডিভাইস। ইহার ডাটা ট্রান্সফার রেট 640MB/Sec. ( প্রায় ৫০% বেশী) এবং দামেও সস্তা।
• Rambus DRAM : ইহা Rambus কোম্পানীর তৈরী নতুন পজম্মের বিশেষ ধরনের মেমোরী আর্কিটেকচার , যা Rambus Channel নামে পরিচিত। ইহা 500MB/Sec গতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে । কিন্তু ইহা বর্তমানে প্রচলিত মেমোরী আর্কিটেকচার সাপোর্ট করে না বলে ইহার ব্যবহার সীমিত ।
• DDR DRAM: আরডি র্যামের বিস্তর সমস্যা উপলব্ধি করে প্রসেসর নির্মাতা এএমডি এবং চিপসেট নির্মাতা কোম্পানি ভায়া বিকল্প পদ্ধতি হিসাবে এসডি র্যামের দ্বিতীয় প্রজন্ম ডিডিআর (ডাবল ডাটা রেট) এসডির্যাম তৈরী করেছে। এটি যদিও এসডির্যামের একটি উন্নত সংস্করণ তথাপি এটি আরডির্যামের প্রায় অনুরূপ ব্যান্ডউইডথ তথা ডাটা প্রবাহ প্রদান করতে সক্ষম । এসডির্যাম-টুতে প্রত্যেক ক্লক সাইকেলের উভয় অংশে (উত্থান ও পতন) ডাটা আদান- প্রদান সম্ভব হবে বলে এটিকে ডাবল ডাটা রেট (ডিডিআর) বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বর্তমানে কোর প্রসেসরের সাথে ডিডিআর র্যাম অবিচ্ছেদ্য হার্ডওয়ার হিসাবে বাজার জাত করা হচ্ছে।
স্থায়ী স্মৃতি- রম (ROM)
পূর্ণ নাম রিড অনলি মেমরি (Read Only Memory) । ইহা স্থায়ীভাবে উপাত্ত/তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত অ-উদ্বায়ী অর্ধপরিবাহী মেমরি। বর্তমানে এমন অনেক ধরনের রম উদ্ভাবিত হয়েছে- যাতে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষিত তথ্য মুছে আবার নতুন তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।
রম (ROM) এর বৈশিষ্ট্য -
• সাধারণত রমে নতুন উপাত্ত/তথ্য লিখা হয় না। কিন্তু যখনই প্রয়োজন রম থেকে উপাত্ত/তথ্য পড়ে নেয়া হয়।
• রম উদ্বাযী নয়। বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে গেলে রমে সংরক্ষিত উপাত্ত/তথ্য মুছে যায় না।
• সচরাচর পরিবর্তনযোগ্য তথ্য/উপাত্ত রমে সংরক্ষণ করা হয় না।
• সাধারণ রমকে একবার প্রোগ্রাম করা হলে তাতে আর কোন ধরনের পরিবর্তন সাধন সম্ভব নয়। হবে, তথ্য মুছে পুনঃ পুনঃ প্রোগ্রাম করা যায় এমন রমও বয়েছে।
• রমকে সাধারণত ফ্যাক্টরিতেই প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে।
চার ধরনের রমের নাম নিচে দেয়া হল -
• এমরম (MROM-Mask Programmable Read Only Memory)
• পিরম (PROM-Programmable Read Only Memory)
• ইপিরম (EPROM-Erasable Programmable Read Only Memory)
• ইইপিরম (EEPROM-Electrically Programmable Read Only Memory)
এম রমের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য -
1. ফটোগ্রাফিক মাস্ক ব্যবহার করে প্রোগ্রামের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। সাধারণত ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী ফ্যাক্টরিতেই এমরম প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে।
2. এমরম বেশ ব্যয় বহুল। হবে একই ধরনের প্রোগ্রাম সম্বলিত অনেক এমরমের ব্যবহার অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।
3. একবার প্রোগ্রাম করা হয়ে এমরমকে পুনঃ প্রোগ্রাম করা যায় না।
ইপিরমের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যঃ
• প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবহারকারী নিজেই ইপিরমে উপাত্ত/ তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে। সংরক্ষিত তথ্য মুছে ইপিরামকে পুনঃ প্রোগ্রাম করা সম্ভব।
• ইপিরম উদ্বায়ী নয় অর্থাৎ প্রোগ্রামকৃত তথ্য কোন অবস্থায়ই মুছে যায় না।
• ইপিরম তৈরিতে সাধারণত ফিল্ড একেই ট্রানজিস্টর (FET-Field Effect Transistor) ব্যবহার করা হয়।
• ইপিরম প্রোগ্রামের জন্য সাধারণত বিশেষ ধরনের বর্তণী প্রয়োজন হয়।
• সাধারণত অতি বেগুণী রশ্নি ব্যবহারের মাধ্যমে ইপিরমে সংরক্ষিত তথ্য মুছে দেয়া হয়।
ইইপিরমের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যঃ
• ব্যবহারকারী প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইইপিরমে উপাত্ত সংরক্ষণ করতে পারেন।এতে সংরক্ষিত তথ্য ইলেকট্রিক্যাল পদ্ধতিতে মুছে পুনঃ পুনঃ প্রোগ্রাম করা যায়।
• প্রোগ্রাম করার সময় ইইপিরমকে সকেট থেকে খুলতে হয় না।
• ইইপিরম প্রোগ্রামিং এবং এতে সংরক্ষিত তথ্য মুছতে ইপিরমের তুলনায় অনেক কম সময় লাগে।
বায়োস রম - বায়োস হচেছ Basic Input Output System এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সহজ ভাষায় এটা হচেছ ইন্সট্রাকশনের সেট অর্থাৎ ( পিরম PROM-Programmable Read Only Memory) বা এক গুচছ নির্দেশ এবং কিছু তথ্য যা আপনার কম্পিউটারকে নির্জীব অবস্থা থেকে বুট করতে সাহায্য করে এবং কম্পিউটার কমপোনেন্ট সমূহের মধ্যে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করে। এই ইন্সট্রাকশন গুলো সাধারণত একটি রম চিপ এ মাদার বোর্ডে বিল্ট -ইন থাকে, যাকে বায়োস -চিপ বলে।
ফ্লাস বায়োস রম - Flash BIOS কি ? সাধারণ বায়োস রম হচ্ছে EP-ROM (Erasable Programmable)| এ থেকে সাধারণ ভাবে কেবল পড়াই যায়, তথ্য লেখা যায় না। তাই বিশেষ উপায় Ultraviolet Ray EP-ROM Writer ছাড়া এই বায়োস পরিবর্তনের কোন উপায় নেই। বায়োস চিপের আপডেট সহজ করতে EEP-ROM (Electrically Erasable Programmable ROM) নামের নতুন ধরনের রম চিপের প্রবর্তন করা হয়েছে যার ডাটা ইলেকট্রিকালী পরিবর্তন করা যায় এবং এটা বায়োস চিপের কোন স্থানান্তর করা ছাড়াই সম্ভব। এধরনের বায়োসেই Flash BIOS নামে পরিচিত। এতে বায়োস র্নিমাতা কোম্পানীর Update patch এর মাধ্যমে সহজেই বায়োস রমকে আপডেট, Bug fix, Enhancement ইত্যাদি করে নেয়া যায়। সহজে ডাটা করাপশনের ভয় থাকে বলে সাধারণ অবস্থায় একে বিশেষ জাম্পারের মাধ্যমে রাইট প্রোটেক্টেড রাখা হয়।
চিপসেট Chipsets
চিপসেট Chipsets হচ্ছে একগুচ্ছ চিপসের সমন্বয়, যেগুলো মাদারেবোর্ডে সংযোজীত অবস্থায় একসাথে কাজ করে। এগুলো একটি প্রডাক্ট হিসাবে বাজারজাত করা হয় এবং এর উপরে মাদারবোর্ডের মান নির্ভর করে। পারসোনোল কমপিউটারের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে চিপসেট তৈরী করা হয় তার নাম নিয়াট চিপসেট। ইহা ইন্টেল প্রসেসর ৮০২৮৬ -এর জন্য তৈরী করে 'চিপস এন্ড টেকনোলজী' কোস্পানী। এর পরে সিস, ভায়া সহ অনেক কোম্পাণী কর্তৃক অনেক চিপসেট তৈরী হতে থাকে কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রীয় যে চিপস তা হচ্ছে ইন্টেলের (ট্রাইটন চিপসেট)। ইহা চিপসেটের বাজারে বিপ্লব ঘটায় ফলে সব কোম্পানী এই চিপসেট তৈরী করতে থাকে।
এখানে মাদারবোর্ডে চিপসেট দেখা যাচ্ছে। নর্থব্রিজ চিপসেটটি হিটসিংক ও ফ্যান দ্বারা ঢাকা আছে। সাউথব্রীজ চিপটিও হিটসিংক দিয়ে ঢাকা।
প্রসেসরের গতি দ্রুত বাড়তে থাকার ফলে ইন্টেল পেন্টিয়াম প্রসেসরের জন্য নতুন যে চিপসেটের জন্ম হয় তা হচ্ছে নর্থব্রীজ ও সাউথব্রীজ নামের একজোড়া চিপসেট। নর্থব্রীজ সিপিইউ-এর সাথে দ্রুতগতি সম্পন্ন ডিভাইস যেমন প্রধান মেমোরী এবং গ্রাফিক্স কন্ট্রোলারের সংযোগ সাধন করে এবং সাউথব্রীজ অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্ব সম্পন্ন যেমন, ইথারনেট, ইউএসবি ও অডিও ডিভাইসের সাথে সংযোগ সাধন করে। ইহা যেহেতু প্রসেসর এবং বাহিরের ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ সাধন করে তাই সিস্টেমের পারফরমেন্সের জন্য ইহার ভুমিকা অশেষ।
ডায়াগ্রামের মাধ্যমে নথর্ব্রীজ ও সাউথব্রীজের সংগে সিপিইউ, এজিপি, রাম ও অন্যান্য ডিভাইসের সাথে সংযোগ -এর পথ/বাস দেখানো হলো। চিপসেটের সাথে সিপিইউ-এর মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের পথকে ফ্রন্টসাইড বাস বলা হয়।
মাদারবোর্ড ও চিপসেট প্রস্তুতকারক স্বাধীনভাবে তাদের পন্য উৎপাদন করে। বর্তমানে যে সমস্ত কোস্পানী চিপসেট তৈরী করে তারা হলো - NVIDIA, AMD, VIA Technologies, SiS, Intel and Broadcom. নিচে বাজারে বর্তমান ইন্টেল চিপসেটের তালিকা দেওয়া হলো -
• P35 Express (for Intel Core 2 Duo/Quad/Extreme)
• Intel G31 Express (supports DDR2, officially supports up to 1066 MHz System Bus)
• Intel G33 Express (supports DDR2 and DDR3)
• Intel G35 Express (supports only DDR2)
• Intel X38
• Intel X48
• Intel P43
• Intel G43
• Intel P45
• Intel G45
• (Q4 2008) Intel X58
• (Q3 2009) Intel PCH
ইনপুট ইউনিট/ডিভাইস Input unit/Device
ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে বাহির থেকে কমিপউটারে তথ্য সরবরাহ করা হয় এবং কার্য্য সমপাদনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে কিবোর্ড, মাউস, লাইট প্রেন্ট, ডিজিটাইজার, জয়স্টিক এবং ট্রাকবল, টাচস্কীন সমপর্কে আলোচনা করা হল :-
কিবোর্ড (Keyboard) - কমিপউটারের কী-বোর্ড এবং সাধারণ টাইপ রাইটারের কী-বোর্ড দেখতে প্রায় একই রকম এবং টাইপ করার পদ্ধতিও একই রকম। টাইপ রাইটারের কী-বোর্ডের বোতাম গুলো শুধুমাত্র অক্ষর টাইপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। পক্ষান্তরে, কমিপউটারের কী-বোর্ডের বোতামের সাহায্যে টাইপ করা ছাড়াও কমিপউটারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নির্দেশ প্রদান করা হয় এবং আরো নানা রকম কাজে ব্যবহার করা হয়। কী-বোর্ডের যে সকল বোতাম চেপে কোন অক্ষর বা বর্ণ টাইপ করা হয় না, কিন্তু অক্ষর বা বর্ণ বিন্যাসের কাজ এবং অন্যান্য ধরনের কাজ করা হয়, সে সব বোতামকে বলা হয় মডিফইয়ার কী (Modifier Key) - যেমন, শিফট (Shift), অপশন (Option), কমান্ড (command), কন্ট্রোল (Ctrl) ,অল্টার (Alt) ইত্যাদি বোতাম। কি বোর্ডে সাধারনতঃ ১০১ টি বোতাম থাকে, তবে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ষ্টার্ট মেনু সচল করার উপযোগী কীবোর্ডে ১০৪ টি কী থাকে। বর্তমানে ইন্টারনেট চালাবার উপযোগী আর এক ধরনের কিবোর্ডে আরও অতিরিক্ত কি সেট করা থাকে।
মাউস (Mouse) : মাউস হচেছ ক্যাবল (Cable) বা তারের সাহায্যে কমিপউটারের সঙ্গে সংযুক্ত ছোট একটি যন্ত্রাংশ। তারের প্রান্ত ধরে যন্ত্রটি ঝুলিয়ে ধরলে দেখতে অনেকটা ইঁদুরের মতো দেখায়। হয়তো সে জন্যই এর নাম হয়েছে মাউস। মাউসটি কমিপউটারের পাশে রাখা হয়। মাউসটি নাড়াচাড়া করলে কমিপউটারের পর্দায় একটি তীর (Arrow) নড়াচড়া করে। তীরটির গতিবিধি বা চলাচল টেবিলের উপর রাখা মাউস নাড়াচাড়া করে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং পর্দার তীরটিকে বিভিন্ন নির্দেশের (Command) উপর ক্লিক করে কমিপউটারকে নির্দেশ প্রদান করতে হয়। এ ছাড়া মাউসের সাহায্যে পর্দায় লিখিত বিষয়, গ্রাফ, ছবি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণসহ আরো নানা প্রকার কাজ করা যায়। প্রতিটি মাউসে দুইটি অথবা তিনটি বাটন থাকে- বাম বাটন, ডান বাটন এবং মধ্যবাটন। বিভিন্ন বাটন দ্বারা বিভিন্ন কাজ করা হয় - যেমন, স্ক্রীনে কোথাও মাউস রেখে ডান বাটন চাপলে একটি মেনু দেখা দেয়, যাকে কনটেকস্ট মেনু বলে। মাউস এর কয়েকটি ইভেন্ট আছে - সিংগল ক্লিক, ডাবল ক্লিক, ট্রিপল ক্লিক এবং ক্লিক ও ড্রাগ। যেমন, এমএস ওয়ার্ডে কোন টেকস্ট এর উপর ১ বার ক্লিক করে কারসর বসানো হয় ; ২ বার ক্লিক করলে একটি ওয়ার্ড সিলেক্ট হয় ; তিনবার ক্লিক করলে পুরা প্যারাগ্রাফ সিলেক্ট হয় ইত্যাদি। আবার ক্লিক ও ড্রাগ করে ইচ্ছেছমত যেকোন অংশ সিলেক্ট করা যায়।
জয়স্টিক এবং ট্রাকবল (Joystick and Trackball)- ভিডিও গেমস খেলতে এই ডিভাইসটি ব্যবহার হয়। ইহা দ্বারা মনিটর স্ক্রীনের বিভিন্ন জাগায় কারসারকে সহজে সরানো যায়। অনেক কিবোর্ডে ট্রাকবল সংযুক্ত করা আছে।
মডেম (Modem)- মডেম হচেছ Modulator/Demodulator এর সংক্ষিপ্ত রূপ । ইহা একটি ছোট আকারের যন্ত্র। যন্ত্রটি সিগারেটের প্যাকেটের মতো ক্ষুদ্রাকৃতি থেকে বইয়ের আকার পর্যন্ত হতে পারে। কমিপউটার মোডেম যন্ত্রের সাহায্যে টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করে থাকে। মোডেম যন্ত্রটি কমিপউটারের ভাষাকে টেলিফোনের ভাষায়(অর্থাৎ এনালগ সিগনালকে ডিজিটাল সিগনালে) এবং টেলিফোনের ভাষাকে কমপউটারের ভাষায় রূপান্তরিত করে তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করে থাকে। এ জন্য তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণকারী উভয় প্রান্তের কমিপউটারের সঙ্গেই মোডেম যন্ত্র থাকতে হয়। টেলিফোন লাইনের তারটি সংযুক্ত করতে হয় মোডেম যন্ত্রের সঙ্গে এবং মোডেম যন্ত্রের তারটি সংযুক্ত করতে হয় কমিপউটারের সঙ্গে। অর্থাৎ মোডেম যন্ত্রটি টেলিফোন লাইন এবং কমিপউটারের মাঝখানে অবস্থান করে।
স্ক্যানার Scanner =স্ক্যানার মুলত প্রচলিত ফটোকপিয়ার মেশিনের মত। কিন্তু এর ব্যবহারিক পরিমন্ডল আরো বিশাল। অফিস আদালতে স্ক্যানার ব্যবহৃত হয় দলিল পত্র সংরক্ষণে; শৌখিন বা পেশাদার ডিজাইনারের কাছে প্রয়োজন পরে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দৃশ্যাবলী বা মুল্যবান চিত্রকর্ম সংরক্ষণে; কিম্বা প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ছবির মানকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনে। পুরনো বা নতুন কোন বিশাল গ্রন্থের তথ্যাবলী পুনবায় টাইপ না করে স্ক্যানার (ওসিআর প্রোগ্রামের) মাধ্যমে সব তথ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে ও স্ক্যানার অত্যনত গুরূত্বপুর্ণ র্ভুমিকা রাখতে সক্ষম।
স্টোরেজ ডিভাইস :
শব্দটির অভিধানিক অর্থ হলো - যার মাধ্যমে তথ্যাদি সংরক্ষণ রাখা যায়। কমপিউটারের জন্মলগ্ন থেকেই এটি কমপিউটারের একান্ত সঙ্গী। এটা ছাড়া কমপিউটার কল্পনাই করা যায় না। সফটওয়্যার হলো কমিপউটারের প্রাণ, আর এই প্রাণ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরণের স্টোরেজ ডিভাইস। স্টোরেজ ডিভাইসের কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে হার্ডডিস্ক ও ফ্লপি ডিস্কের কথা। ৮৭ সালের আগ পর্যন্ত ৫.২৫ ফ্লপি ডিস্ক ও ১০-২০ মে.বা. হার্ডডিস্কের অধিপত্য ছিলো সমস্ত বিশ্বজুড়ে। তখন একটি ১.২ মে.বা.ফ্লপি ডিস্কেই অপারেটিং সিস্টেম, ওয়ার্ড প্রসেসর, স্প্রেডশীট প্রোগ্রাম ছাড়াও আরও কিছু বাড়তী ফাইল সংরক্ষণ করা যেতো। সে সময় কমপিউটার ব্যবহারকারী গণ তাদের ১২ মেগাহার্টজ স্পীডের কমপিউটারের একটি ১.২ মে.বা. ফ্লপি ডিস্ক ঢুকিয়ে কাজ করতে বড়ই গর্ব বোধ করতেন। পরবর্তীতে ৩.৫ " ফ্লপি ডিস্ক ও ১০০-১২০ মেগাবাইটের হার্ডডিস্কের আগমনে পুর্বের ডিভাইস গুলোর ব্যবহার কমে যায় এবং সেই সাথে শুরু হলো ব্যবহারকারীদের চাহিদা মেটাতে প্রোগ্রাম সমুহ উন্নত করার প্রক্রিয়া। অপারেটিং সিস্টেম, সেপ্রডশিট, ওয়ার্ড প্রসেসর, গ্রাফিক্স প্রোগ্রাম দখল করতে লাগালো মেগাবাইট জায়গা। ফলশ্র্রুতিতে কমপিউটার বিজ্ঞানীগণ ভাবতে শুরু করলেন কিভাবে স্টোরেজ ডিভাইস সমুহের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা যায়। তাদেরই গবেষণার ফলস্বরুপ আবিষ্কৃতি হলো নতুন নতুন সব ডিভাইস।
Hard Disk : হার্ডডিস্ক- কমপিউটারের স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে যেটির কথা সর্ব প্রথমে আসে সেটি হলো এই হার্ডডিস্ক। এটি মুলতঃ একটি ম্যাগনেটিক স্টোরেজ ডিভাইস যেখানে প্রোগ্রাম সমুহ সংরক্ষণ করে চালানো হয়। সময়ের সাথে সেগুলোর ধারণ ক্ষমতা কেবল বৃদ্ধিই পায়নি কারিগরী উন্নয়নও ঘটছে। এই ডিভাইসটির যাত্রা শুরূ হয়েছিল ২০ মে.বা.ধারণা ক্ষমতা নিয়ে। অথচ বর্তমানে তার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১০০০ গিগাবাইট পর্যন্ত।
Floppy Disk : ফ্লপি ডিস্ক : প্রথম থেকে এই ডিভাইসটি এখনও পর্যন্ত বিশ্বে স্ট্যান্ডার্ড স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে টিকে আছে। ডিভাইসটি প্রথম তৈরি করে সনি কর্পোরেশন। ডিস্কটিতে চুম্কীয় পদ্ধতিতে ডাটা স্টোর করা হয়। প্রথম অবস্থায় একটি ডিস্কের ধারণ ক্ষমতা ছিলো ৭২০ কি.বা. (ডবল ডেনসিটি)। বর্তমানে ডিস্ক সমুহের ধারণ ক্ষমতা ১.৪৪ মে.বা. (হাই ডেনসিটি)। আমাদের দেশে স্টোরেজ ডিভাইসমুহের মাঝে হার্ডডিস্কের পরেই এটির স্থান। শুরতে ৫ ইঞ্চি ব্যাসের ফ্লপি ব্যবহার হতো । বর্তমানে ৩.৫ ইঞ্চি ডিস্ক ব্যবহৃত হচ্ছে।
CD ROM : সিডিরম - ৩.৫ ডিস্কের পরেই বাজারে যে স্ট্যান্ডার্র্ড ডিস্কের আগমন ঘটে সেটি হলো এই সিডিরম। এটি একধরণের অপটিকাল স্টোরেজ ডিভাইস যার মধ্যে ৭২০ মে.বা. পর্যন্ত তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। তবে এর দুইটি বিরাট অসুবিধা রয়েছে। প্রথমতঃ সিডিরমে সংরক্ষিত তথ্য শুধুমাত্র পড়া যায় -তাতে কোন পরিবর্তন করা যায় না। দ্বিতীয়তঃ এর এক্সেস টাইম হার্ডডিস্কের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। এই স্টোরেজ ডিভাইসটি মুলতঃ সফটওয়্যার সরবরাহ ও মাল্টিমিডিয়া প্রোগ্রামসমুহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে স্ট্যান্ডার্ড ডিভাইস হিসেবে সিডিরম ড্রাইভ সকল কমপিউটারের সাথে যুক্ত হয়েছে।
Pen Drive : পেন ড্রাইভ - এর অন্য নাম ইউ,এস,বি ফ্রাশ ড্রাইভ। ইহা এক ধরনের ফ্লাশ মেমোরী ষ্টোরেজ ডিভাইস যা ইউ,এস,বি ইন্টারফেস-এর সাথে সমন্বিত থাকে। এই ড্রাইভ বার বার খোলা ও লাগানো যায় এবং এর তথ্য মুছে লেখা যায়। ইহা ফ্লপি ডিস্ক থেকে ছোট এবং ওজন খুব কম (৩০ গ্রামের নীচে)। বর্তমানে এর ধারন ক্ষমতা ৮ গিগাবাইট - দিন দিন এর ক্যাপাসিটি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে , তেমনি দাম কমছে। কোন কোন প্রস্তুতকারক ১০ বছরের ডাটা সংরক্ষনের ওয়ারেন্টি দিচ্ছে - এতে ১০ লক্ষ বার ডাটা লেখা ও মোছার সুযোগ পাওয়া যাবে। ইহা সহজে বহনযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য বিধায় ডাটা ট্রান্সফারের জন্য আগের আমলের ফ্লপি ডিস্কের পরিবর্তে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অপারেটিং সিস্টেম
অপারেটিং সিস্টেম কি ? অপারেটিং সিস্টেম (সংক্ষেপে ওএস) মূলতঃ একটি সফটওয়্যার প্রোগ্রাম। তবে ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশীট ও অন্যান্য প্রোগ্রাম থেকে এটি আলাদা। একে বলা হয় মাষ্টার কন্ট্রোল প্রোগ্রাম। কমপিউটার যখন অন করা হয় তখন বুট করার জন্য প্রয়োজন হয় অপারেটিং সিস্টেম। বুট করার পর কমপিডউটার বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটি পুরো মেশিনের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখে। ওএস পিসির হার্ডওয়্যার ও এপ্লিকেশন প্রোগ্রামের মধ্যে যোগাযোগের সেতু হিসেবে কাজ করে। আপনি যখন ওয়ার্ডের কোন ফাইল খুলছেন, ওএস সে মূহুর্তে হার্ড ডিস্ক থেকে ফাইলটি খুঁজে আপনার তুলে ধরছে। আবার যখন গান শুনছেন,অপারেটিং সিস্টেম মিউজিক ফাইলটি সাউন্ড কার্ডে প্রেরণ করছে-ফলশ্রুতিতে স্পিকার থেকে গান ভেসে আসছে। অনুরূপভাবে আপনি যখন গেম খেলছেন তখনও সেই অপারেটিং সিস্টেমই বর্ণময় জটিল থ্রিডি গ্রাফিক্সকে ডিসপ্লে কার্ডে প্রেরণ করছে। এক কথায় কমপিউটারে আপনি যাই করছেন তাই নিয়ন্ত্রীত হচেছ অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা ।
অপারেটিং সিস্টেম কতটা জরুরী - ধরূন আপনার পিসিতে কোন অপারেটিং সিস্টেম নেই। এমতাবস্থায় ওয়ার্ডপ্রসেসর বা ফটোশপের মত প্রোগ্রাম গুলো কি কাজ করতে পারবে ? নিশ্চয় নয়। অথচ এই এপি¬কেশন প্রোগ্রামগুলোর ভেতরে যদি অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজনীয় কোড থাকত,তাহলে কিন্তু এরা নিজেরাই কাজ করতে পারতো। যেমন কীবোর্ড থেকে অক্ষর বোঝা,মনিটরে তা প্রদর্শন,হার্ডডিস্ক এক্সেস করে ফাইল পড়া বা লিখা প্রভৃতি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ইন্সট্রাকশন কোড যদি ওয়ার্ডপ্রসেসরে অন্তর্ভূক্ত করা হতো তাহলে এটি উইন্ডোজের সাহায্য ছাড়াই তার কাজগুলো করতে পারতো। বলাই বাহুল্য এভাবে বিভিন্ন এপ্লিকেশন প্রোগ্রামে যদি অপারেটিং সিস্টেম থাকত তাহলে প্রোগ্রামের সাইজ যেমন বেড়ে যাবে তেমনি একজন প্রোগ্রামারকেও অপারেটিং সিস্টেম তথা পিসির যাবতীয় হার্ডওয়্যার সমপর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হতো-যা মোটেই বাস্তব সম্মত নয়। বাস্তব অবস্থা হলো বিভিন্ন এপ্লিকেশন প্রোগ্রাম যেমন ফটোশপ বা ওয়ার্ড প্রসেসরের ভেতরে কেবল ঐ নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের জন্য প্রয়োজনীয় কোডগুলোই লিখে দেওয়া হয়, এর বেশি কিছু নয়।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম Windows Operating System
মাইক্রোসফটের কর্ণধার বিল গেটস সাহেব (যিনি আজকের বিশ্বের সবচেয়ে ধণী ব্যাক্তি) গত শতাব্দির আশির দশকের প্রথম দিকে আইবিএম পারসোনাল কমপিউটারের জন্য সহজবোধ্য ও সরল একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরী করে যথেষ্ট যশ, সম্মান ও পয়সা কামাই করেন। এর নাম ডস বা ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু ইহা অক্ষর ভিত্তিক হওয়ার কারনে সাধারন মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা লাভে ব্যর্থ হয়। ইতিমধ্যে এপেল কাম্পানী তাদের ম্যাকেনটশ কমপিউটারের জন্য ইউজার ফ্রেন্ডলি ও সহজ অপারেটিং সিস্টেম অপারেটিং চালু করলে বাজারে হৈছে পড়ে যায় এবং তাদের ব্যবসা মার খেতে থাকে। তাই ১৯৮৪ সালে তারাও চিত্র ভিত্তিক ইউজার ফ্রেন্ডলি চালু করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।
১৯৮৫ সালের দিকে উইন্ডোজ ১.০ বাজারে এটি ছিল ম্যাক প্রযুক্তির গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি। কিন্তু মাইক্রোসফটের এক্সিকিউটিভরা যে ধরনের সাড়া আশা করেছিলেন তা পেতে ব্যর্থ হন। উইন্ডোজ সাফল্য লাভ করে আপগ্রেড ভার্সন উইন্ডোজ ৩.১-এর মাধ্যমে, যার প্রবর্তন করা হয় ১৯৯২ সালে এবং উইন্ডোজ ৯৫ যার আগমন হয় ১৯৯৫ সনে। উইন্ডোজ ৩.১-এর ওপর উইন্ডোজ ৯৫ ছিল এক যুগান্তকারী আপগ্রেড। সেই যে শুরু তার পর থেকে তদেরকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পরে এক নিত্য নতুন ও যুগোপোযোগী অপারেটিং সিস্টেম উপহার দিয়ে চলেছে। আর এর বিক্রীর অর্থে আজ বিল গেটস বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধণী। এর পর উইন্ডোজ ৯৮, এনটি, ২০০০, এমই, এক্সপি এবং সর্বশেষ উইন্ডোজ ভিসতার মাধ্যমে অপারেটিং সিস্টেমের বাজারের প্রায় সবটাই দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে।
উইন্ডোজ বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে ব্যবসা সফল অপারেটিং সিস্টেম। যদিও এর অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, কিন্তু বিল গেটস এবং মাইক্রোসফটের অসাধারণ সফল ব্যবসায়িক নীতি একে ভীষণ জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমে রূপ দিয়েছে এবং এর ফলে প্রোগ্রামাররা কেবল উইন্ডোজের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করতে শুরু করায় অন্য অপারেটিং সিস্টেমগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। ১৯৯৭ সালের হিসাব বাজারের প্রায় ৮৬.৩ ভাগ দখলই মাইক্রোসফটের। সবচেয়ে ব্যবসা সফল অপারেটিং সেস্টেম হিসেবে উইন্ডোজ সিরিজের ওএস গুলোর নাম করলেও মাইক্রোসফটের প্রায় সব সফটওয়ারই বাগযুক্ত রিলিজের অভিযোগে অভিযুক্ত।
উইন্ডোজের বিভিন্ন ভার্শন :-
1. উইন্ডোজ ৩.১ - এপ্রিল ১৯৯২
2. উইন্ডোজ এনটি - আগস্ট ১৯৯৩
3. উইন্ডোজ ৯৫ - আগস্ট ১৯৯৫
4. উইন্ডোজ ৯৮ - জুন ১৯৯৮
5. উইন্ডোজ ২০০০ - ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০০
6. উইন্ডোজ এমই (মিলেনিয়াম এডিশন) - ১৯ জুন ২০০০
7. উইন্ডোজ এক্সপি (এক্সপেরিয়েন্স) - ২৫ অক্টোবর ২০০১
8. উইন্ডোজ ভিসতা – ৩০ জানুয়ারী ২০০৭
9. উইন্ডোজ ৭ সেভেন - ২২ অক্টোবর ২০০৯
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ক্রমবিকাশ - Chronology of Windows OS
নভেন্বর ১৯৮৩ : নিউইয়র্ক শহরের প্লাজা হোটেলে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন আইবিএম কম্পিউটারের জন্য নতুন প্রজন্মের অপারেটিং সিস্টেম মাইক্রোসফট উইন্ডোজের ঘোষণা দেয় যা গ্রাফিক্স ইন্টারফেস এবং একাধিক পরিবেশে কাজ করতে সক্ষম।
• নভেম্বর ১৯৮৩ : উইন্ডোজ ১.০ বাজারে ছাড়া হয।
• অক্টোবর ১৯৮৮ : ডেভিড কাল্টার মাইক্রোসফটে যোগদান করে তার আগের ডিজিটালের সহকর্মীদের সাথে এনটির জন্য কাজ শুরু করেন।
• জুন ১৯৮৯ : চাক হুইটমারের নেতৃত্বে একটি দল এনটির গ্রাফিক্সের কাজ শুরু করেন। প্রথমত দলটি সি++ দ্বারা কোড লেখা শুরু করলেও পরবর্তীতে কার্যদক্ষতার করণে সি দ্বারা কোড লেখা হয়।
• জুলাই ১৯৮৯ : এনটি টিমের তৈরি ইন্টেল i860 প্রসেসর সমৃদ্ধ একটি সিস্টেমে প্রথমবারের মত এনটির কিছু অংশ রান করানো হয়।
• জানুয়ারি ১৯৯০ : বিল গেটস উচু শ্রেণীর ডিজাইনারদের সাথে আলোচনায় ইন্টেলের ৩৮৬+ প্রসেসরে এনটি রান করানোর গুরুত্ব ব্যক্ত করেন এবং ইন্টেল i860 প্রসেসরের বদলে নতুন রিস্ক প্রসেসরের কথা বলেন।
• মে ১৯৯০ : উইন্ডোজ ৩.০ অবমুক্ত করা হয়। এতে উন্নত প্রোগ্রাম ম্যানেজার ও আইকন সিস্টেম , নতুন ফাইল ম্যানেজার, ১৬ কালার সাপোর্ট এবং উন্নত ও দ্রুতগতির অপারেশন অন্তভুক্ত হয়। এক বছরেই এর ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়।
• মার্চ ১৯৯১ : মাইক্রোসফট তার অনেক সহযোগীদের কাছে এনটির কিছু বিষয়াদি প্রকাশ করেন।
• ৮ মে ১৯৯১ : এন রিভার্সিতে প্রথমবারের মত একটি ডস প্রোগ্রাম (গেম) চালানো হয়।
• জুন ১৯৯১ : এনটিতে প্রথম উইন্ডোজ প্রোগ্রাম ওয়ার্ড রান করানো হয়।
এপ্রিল ১৯৯২ : উইন্ডোজ ৩.১ মুক্তি পায়। দুমাসে ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয় এবং ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এক নম্বর অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে প্রধান্য বজায় রাখে।
• অক্টোবর ১৯৯২ : এনটির প্রথম বেটা ভার্সন বাজারে ছাড়া হয়
• নভেম্বর ১৯৯২ : উইন্ডোজ এনটির জন্য প্রথম উইন্ডোজ ৩২ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট মুক্তি পায়।
আগস্ট ১৯৯৩ : অবশেষে উইন্ডোজ এনটি ৩.১ মুক্তি পায়।
• অক্টোবর ১৯৯৩ : মাইক্রোসফট এনটি ৩.১ এর জন্য প্রথম প্যাচ (Patch) প্রকাশ করে যেখানে ৯০ টিরও বেশী বাগের সমাধান দেয়া হয়েছে।
• ডিসেম্বর ১৯৯৩ : মাইক্রোসফট ও মটোরোলা যৌথভাবে পাওয়ার পিসি প্লাটফর্মের জন্য উইন্ডোজ এনটিকে ছাড়ার ঘোষণা দেয়। প্রায় ৩ লাখ কপি এনটি বিক্রি হয়।
• আগস্ট ১৯৯৪ : এনটির প্রথম আপগ্রেড (৩.৫) প্রকাশ করা হয়। উইন্ডোজ এনটির জন্য ৩২ বিটের ওয়ার্ড ও এক্সেল যুক্ত অফিসের প্রথম ভার্সন মুক্তি পায়। ব্যাক অফিসের কথাও ঘোষণা দেয়া হয়।
• ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ : প্রথমবারের মত পাওয়ার পিসি সমৃদ্ধ সিস্টেমে এনটি চালানো হয়।
• মে ১৯৯৫ : উইন ৯৫ এর জন্য তৈরি করা এপ্লিকেশন যাতে এনটিতে রান করতে পারে সেজন্য এনটির গুরুত্বপূর্ণ আপডেট (৩.৫১)- এর ঘোষণা দেয়া হয়।
• আগস্ট ১৯৯৫ : উইন্ডোজ ৯৫ প্রকাশ করা হয। এটিই উইন্ডোজের প্রথম ভার্সন যেখানে এমএস-ডসের প্রয়োজন নেই এবং ব্যবহারবিধি খুবই সহজ সরল। এতে টিসিপি/আইপি, ডায়াল আপ নেটওয়ার্কিং ও বড় ফাইল নেমের সুবিধা প্রদান করা হয়।
• সেপ্টেস্বর ১৯৯৬ : মাইক্রোসফট ঘোষণা করে যে নতুন ভার্সন এনটি ৫.-এ ৬৪ বিটের সাপোর্ট যুক্ত হবে।
• ডিসেম্বর ১৯৯৬ : পাওয়ার পিসিতে এনটির সাপোর্ট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়।
• সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ : মাইক্রোসফট পিডিসিতে এনটি ৫.০ এর প্রথম বেটা প্রকাশ করে।
জুন ১৯৯৮ : উইন্ডোজ ৯৮ প্রকাশ করা হয়। এতে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৪ কে বিল্টইন হিসেবে রাখা হয়।
• এপ্রিল ১৯৯৯ : উইন্ডোজ ২০০০ এর বেটা ৩ মুক্তি পায়।
• নভেম্বর ১৯৯৯: উইন্ডোজ ২০০০ রিলিজ ক্যান্ডিডেট ৩ (RC3) আমেরিকায় প্রকাশ করা হয়।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০০ : উইন্ডোজ ২০০০-এর মুল ভার্সন প্রকাশ ।
• ১৫ জুন ২০০০ : উইন্ডোজ সিই ৩.১। ইহা বেশী সংখ্যক ভাষা সাপোর্ট করে এবং ইহার মাল্টিমিডিয়া সক্ষমতা অধীক।
১৯ জুন ২০০০ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এমই-এর ফাইনাল ভার্শন বাজার জাত করে।
• জুলাই ২০০০ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ এর সার্ভিস প্যাক-১ বাজারে ছাড়ে।
• ১৬ মে ২০০১ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ এর সার্ভিস প্যাক-২ বাজারে ছাড়ে।
২৫ অক্টোবর ২০০১ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি বাজারে ছাড়ে। অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এনটি ও ২০০০ -এর কাঠামোতে তৈরী হলেও অন্য যে কোন ভার্শনের সাথে সামঞ্জস্য পুর্ন।
• আগষ্ট ২০০২ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ -এর সার্ভিস প্যাক-৩ বাজারে ছাড়ে।
• সেপ্টেম্বর ২০০২ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি- এর সার্ভিস প্যাক-১ বাজারে ছাড়ে
• ৭ নভেম্বর ২০০২ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর ট্যাবলেট পিসির সংস্করন বাজার জাত করে।
• ২৩ জুন ২০০৩ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ মোবাইল ২০০৩ ভার্শন বাজার জাত করে।
• ৩০ সেপ্টেম্বর : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর মিডিয়া সেন্টার সংস্করন বাজার জাত করে।
• ৯ জুলাই ২০০৪ : মাইক্রোসফট পামটপ কমপিউটারের জন্য উইন্ডোজ সিই ৫.০ সংস্করন বাজার জাত করে।
• ১৮ আগষ্ট ২০০৪ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর সার্ভিস প্যাক-২ বাজারে ছাড়ে।
• ফেব্রুয়ারী ২০০৫ - মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর ষ্টার্টার এডিশন কম দামে ইন্দোনেশীয়া ও মালয়েশিয়ার বাজারে ছাড়ে।
• ২৫ এপ্রিল ২০০৫ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর প্রফেশনাল এডিশন বাজারে ছাড়ে।
• ২২ জুলাই ২০০৫ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিষ্টেমের পরবর্তী ভার্শন ভিসতার নাম ঘোষনা করে।
• ১১ জুলাই ২০০৬ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৯৮ , ৯৮ এসই ও এমই-এর জন্য সিকিউরিটি প্যাচ অবমুক্ত করে।
জনুয়ারী ২০০৭ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ভিসতা অফিসিয়ালী বাজারে ছাড়ে। এ পর্য্যন্ত এই এডিশনের ৬ কোটি কপি বাজারে বিক্রী হয়েছে।
অক্টোবর ২০০৮ - প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সে মাইক্রোসফট তাদের সর্বশেষ অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৭ -এর ঘোষনা দেয়।
৯ জানুয়ারী ২০০৯ : অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৭ -এর বেটা ভার্শন রিলিজ করা হয়।
• ২২ অক্টোবর ২০০৯ : উইন্ডোজ ৭ আনুষ্ঠানিক ভাবে ফাইনাল ভার্শন বাজারে ছাড়া হয়। একই সাথে উইন্ডোজ সার্ভার ২০০৮ আর২ এডিশন বাজারজাত করা হয়।
আমরা অপেক্ষা করি বিল গেট আমাদের জন্য আর কি চমক নিয়ে হাজির হয়।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিষ্টেম ইনষ্টল করা
কম্পিউটারের দুইটি অংশ-একটি হার্ডওয়্যার অন্যটি সফটওয়্যার। সফটওয়্যার কম্পিউটারের প্রান। সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার একটি জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছু নয়। এতে প্রান আনতে হলে অপারেটিং সিষ্টেম লোড করতে হবে। এছাড়া অন্য কোন ব্যবহারিক প্রোগ্রাম চালানো সম্ভব নয়। তাই এই অধ্যায়ে অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে লোড করা হয় তা আলোচনা করবো । অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম বাজারে পাওয়া যায়- যেমন ডস, উইন্ডোজ, লিনাক্স, এস/২, ওয়ার্প, ইউনিক্স ইত্যাদি। তবে বর্তমানে পিসিতে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম সবচেয়ে জনপ্রিয়। সারা বিশ্বে প্রায় ৮০% পিসিতে এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। তাই আমরা এখানে উইন্ডোজ ৯৮ ইনষ্টল করার পদ্ধতি বর্ণনা করবো । আপনি যদি এই ইনষ্টল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বুঝতে পারেন তবে উইন্ডোজের যে কোন ভার্শন ইনষ্টল করা আপনার জন্য কঠিন হবে না।
পূর্ব প্রস্তুতিঃ-
১। যথাযথ ভাবে কম্পিউটার এসেম্বল করুন।
২। একটি ফ্লপি ড্রাইভ , হার্ডডিস্ক ড্রাইভ ও সিডি রম ড্রাইভ ইনষ্টল করুন।
৩। হার্ডডিস্ক ড্রাইভকে প্রয়োজনে যত পার্টিশন ও ফরম্যাট করুন। C:\> drive কে Active partition হিসাবে নির্ধারন করুন।
৪। একটি সিষ্টেম ডিস্ক/ ষ্টার্ট আপ ডিস্ক তৈরী করুন। এটা আপনি আপনার বন্ধুর কাছ থেকে পেতে পারেন অথবা অন্য কম্পিউটার থেকে তৈরী করে নিতে পারেন। যে কম্পিউটারে উইন্ডোজ ৯৮ লোড করা আছে তাতে একটি নতুন ফ্লপি ডিস্ক ঢুকিয়ে দিন। (অথবা অরিজিনাল উইন্ডোজ ৯৮ CD এর সাথে Startup Disk '98 নামে একটি ফ্লপি ডিস্ক থাকে সেটা দিয়ে কম্পিউটার Boot (On) করুন)।
o Start > Setting > Control মেনু থেকে Control Properties উইন্ডোতে প্রবেশ করুন।
o Add/Remove Programs আই কোনে ডাবল ক্লিক করুন। Add/Remove Programs Properties ডায়লগ বক্স পর্দায় আসবে।
o Startup disk ট্যাব ক্লিক করুন। Create disk কমান্ড বাটনে ক্লিক করুন।
o নিদের্শ মত কাজ করুন কিছুক্ষনের মধ্যই প্রয়োজনীয় ফাইল গুলো ফ্লপি ডিস্কে কপি হয়ে যাবে। তাহলে System disk তৈরী হল। Startup disk এ নিম্ন লিখিত ফাইল সমুহ থাকেঃ- Extract.exe, Fdisk.exe, Findramd.exe, drvspace.bin, Ebd, command.com, Autoexec.bat, Setramd, Aspi2dos.sys, Aspi4dos.sys, Aspi8dos.sys, Aspi8u2.sys,Aspicd.sys, Btcdrom.sys, Config.sys,Ebd.sys, Flashpt.sys, Himem.sys, IO.sys, Msdos.sys, Oakcdrom.sys, Ramdrive.sys, Readme.exe। এর মধ্যে IO.sys , Msdos.sys, command.com হচ্ছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ফাইল ।
o ডস থেকে System File তৈরী করা - কোন চালু কম্পিউটার থেকে System disk তৈরী করার জন্য ফ্লপি ড্রাইভে একটি ডিস্ক ঢুকিয়ে দিন এবং কম্পিউটার রিষ্টার্ট করুন। স্ক্রীনে কার্সর দেখা মাত্র F8 বোতাম চাপুন । কিছু পরে ৬ টি অপশন বিশিষ্ট একটি মেনু দেখা যাবে।
Microsoft Windows 98 Startup Menu
1. Normal
2. Logged (Bootlog.txt)
3. Safe Mode
4. Step by step configuration
5. Command Prompt Only
6. Safe mode command prompt only
Enter a Choice 1
ডাউন এরো কি চেপে Safe mode সিলেক্ট করুন এবং ইন্টার চাপুন অথবা <5> বোতাম চাপুন। একটু পরে ডস মোডে C:\> প্রস্পট দেখা যাবে। C:\> প্রস্পটে CD DOS লিখে ইন্টার চাপুন এবং পরে C:\>Dos/Format A:/S লিখে ইন্টার চাপুন। অথবা শুধু C:/> Sys A: লিখুন। একটি মেসেজ দেখা যাবে , এখন চাপুন তা হলেই ফ্লপি ড্রাইভে System file কপি হতে থাকবে এবং C:\> প্রস্পটে ফিরে আসবে।
৫। অপারেটিং সিস্টেম সমৃদ্ধ সিডি সংগ্রহ করুন। ইহা Autorun ও হতে পারে। বর্তমানে বাজারে উন্নত ফিচার সমৃদ্ধ Windows 98 SE ভার্সন বাজারে পাওয়া যাচেছ।
অপারেটিং সিস্টেম ইনষ্টল করার ধাপ সমূহ -
১। সিস্টেম ষ্টার্টআপ ডিস্কটি ফ্লপি ড্রাইভে প্রবেশ করিয়ে দিন।
২। কম্পিউটার রি-ষ্টার্ট করুন। কিছুক্ষনের মধ্যে স্ক্রীনে তিনটি অপশন বিশিষ্ট একটি মেনু দেখা যাবে। যাতে সিডি রম ড্রাইভ অপশন থাকবে কিনা, নির্ধারন করতে হবে।
Microsoft Windows 98 Startup Menu
1. Start computer with CD ROM support
2. Start computer without CD ROM support
3. View help file
Enter a Choice 1
আমরা সিডি রমের একটি ভার্চুয়াল ড্রাইভ রাখর বলে ১ নং অপশনটি সিলেক্ট করার জন্য <1> বোতাম চাপব। একটু পরেই স্ক্রীনে A:\> প্রম্পট দেখা যাবে।
৩। এখন ফ্লপি ডিস্ক থেকে সিস্টেম ফাইল ড্রাইভে ট্রানন্সফার করতে হবে। যদি হার্ড ড্রাইভ গুলি ফরম্যাট না করা থাকে তবে ফরম্যাট করার সাথেই System ট্রানন্সফার করা যাবে। সেজন্য A:\> প্রম্পটে "FORMAT C:/S" টাইপ করে Enter করতে হবে। আর যদি ফরম্যাট করা থাকে তবে A:\> Sys C: লিখে Enter দিতে হবে।
৪। স্ক্রীনে সতর্ক বানী দেখা যাবে যে, All data well be lost (Y/N)| বোতাম চাপুন।
৫। মনিটরে ফরম্যাট হওয়ার প্রোগ্রেস দেখা যাবে এবং কিছুক্ষনের মধ্যেই ফাইল ট্রানন্সফার শেষে স্ক্রীনে A:\> প্রমপ্ট দেখা যাবে। আমরা যদি A:\>C: লিখে এন্টার দেই তবে C:\> প্রমপ্ট পর্দায় দেখা যাবে। C:/> ড্রাইভে সত্যিই System File ট্রান্সফার য়েছে কিনা যাচাই করার জন্য C:\>Dir/O/P লিখে এন্টার দিলে স্ক্রীনে ফাইল লিষ্ট দেখা যাবে।
৬। এবার Windows 98 ইনষ্টল করার পালা - আমরা CD ROM ড্রাইভ থেকে Windows 98 ইনষ্টল করব বলে সিদ্ধন্ত নিয়েছে এবং তাই একটি ভাচুয়াল CD ROM ড্রাইভ তৈরী করেছি। এটা কোন ড্রাইভ তা নিধারন করার জন্য একটি উইন্ডোজ ৯৮ সিডি ড্রাইভে প্রবেশ করান এবং A:/> প্রস্পটে পযায়ক্রমে D:, E:, F:, G: ড্রাইভের নাম লিখে ইন্টার প্রেস করুন এবং প্রত্যেক প্রস্পট DIR লিখে ইন্টার বোতামে চাপ দিব। তাতে যে প্রস্পটির ডিরেক্টরীতে Windows 98 ফোল্ডার পাওয়া যাবে তাকে আমরা সিডি রম ড্রাইভ বলে গন্য করব। মনে করি F: হচেছ সিডি ড্রাইভ।
৭। সিডি ড্রাইভে প্রবেশের জন্য A:\> প্রস্পটে F: টাইপ করে ইন্টার বোতামে চাপ দিই। F:\> প্রস্পট পর্দায় দেখা দিলে Setup টাইপ করে আবার ও ইন্টার চাপি। সাথে সাথেই উইন্ডোজ ৯৮ সেটআপ প্রোগ্রাম চালু হয়ে যাবে। পুরা প্রোগ্রাম ইনষ্টল হতে কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতা অনুপাতে ৩০ মিনিট থেতে ১ঘন্টা সময় লাগতে পারে। এসময়ে স্ক্রীনে প্রদর্শিত নির্দেশ মোতাবেক নিম্নলিখিত কাজ গুলি করতে হবে -
o ব্যক্তিগত ও কোম্পানির নাম লিখতে হবে।
o কোন এলাকায় এবং কোন ভাষায় সেটআপ হবে তা উলে¬খ করতে হবে।
o উইন্ডোজ ফোল্ডারটি কোন ডিরেক্টরীতে থাকবে তা উলে¬খ করতে হবে।
o লাইসেন্স নং/ কোড নম্বর দিতে হবে।
o System disk তৈরী করবে কিনা তা নির্ধারন করতে হবে।
o রিজওনাল টাইম সেটিং করতে হবে।
o কোন ধরনের ইনষ্টল হবে (Typical, custom or Compact) তা নির্দ্ধারন করতে হবে।
o এর মধ্যে কম্পিউটার দুই তিন বার আপনা আপনি রি-ষ্টার্ট করবে ,সুতরাং ভয় পাবার কিছু নাই। প্রত্যেকটি নির্দেশকে ভালভাবে বুঝবার চেষ্টা করুন এবং সেই মতে কাজ করুন। তাড়া হুড়ো করে কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না।
৮। অবশেষে আপনার কাংক্ষিত এবং বহুল পরিচিতি ষ্টার্ট আপ উইন্ডাটি স্ক্রীনে দেখা যাবে।
৯। আপনি ইচ্ছে করলে দ্বিতীয় কোন হার্ডডিস্ক থেকেও উইন্ডোজ ৯৮ লোড করতে পারেন (যদি আপনার সিডি ড্রাইভ না থাকে)। এক্ষেত্রে সেই হার্ডডিস্ক টিকে আপনার কম্পিউটারে পাইমারী স্লেভ অথবা সেকেন্ডারী মাষ্টার/ স্লেভ হিসেবে ইনষ্টল করতে হবে এবং COMS সেটআপের মাধ্যমে configure করতে হবে। আপনার নতুন হার্ডডিস্কে (C:\> প্রস্পটে) সিস্টেম ফাইল ট্রান্সফার করার পর উক্ত হার্ডডিস্কের (যাতে Win98 ফোল্ডার কপি করা আছে) ড্রাইভের নাম খোজ করুন- মনে করি তা F:/> ড্রাইভ। এবার F:\> ড্রাইভের উইন্ডোজ ৯৮ ফোল্ডারে ঢুকার জন্য A:\> Win98 (যদি ফোল্ডারের নাম তাই হয়) টাইপ করুন এবং এন্টার চাপুন। আবার টাইপ করুন A:\> Windows 98/Setup, Windows setup program চালু হয়ে যাবে।
উইন্ডোজ এম.ই Windows ME
উইনডোজের ক্রম বিকাশের ক্ষেত্রে মিলেনিয়াম এডিশন একটি ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ। আসলে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ 95/98 ধারার অর্থাৎ উইন্ডোজ 9-এক্স সিরিজের নতুন অপারেটিং সিস্টেম (ওএস)। এটা তৈরী করা হয়েছে মূলত: হোম ইউজারদের জন্য। এর বিল্ড নাম্বার ৪.৯০.৩০০০। উইন্ডোজ ৯৫ বা ৯৮ যারা ব্যবহার করেছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন মাইক্রোসফটের এই ওএসগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর সহজ ব্যবহারযোগ্যতা । অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা যাতে কোনো রকম প্রশিক্ষণ গ্রহণ ছাড়াই তার কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে তার ব্যবস্থা করে দেওয়াই মাইক্রোসফটের কাজ। উইন্ডোজ-এর নতুন এ ভার্সনটিও এই ধারারই বাহক। অর্থাৎ উইন্ডোজ এম.ই আগের চেয়ে আরও সহজ আর ইউজার ফ্রেন্ডলি। এতে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার, নতুন ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। আর সেগুলো ব্যবহারের সহজতম ফিচারসমূহ। আর এর ব্যবহার পদ্ধতি বদল হয়নি মোটেও (কেবলমাত্র ব্যবহার সুবিধাজনক করার জন্য নতুন কিছু ফিচারের ব্যবহার পদ্ধতিতে সামান্য অদল বদল ঘটেছে), ফলে উইন্ডোজ ৯৫ বা ৯৮ এর ব্যবহারকারীগণও একই রকম স্বাচ্ছন্দের সাথে ব্যবহার করতে পারেন এই উইন্ডোজ এম.ই। এই ভার্সনে পূর্বের বাগগুলো ফিক্স করার চেষ্টা করা হয়েছে । মাইক্রোসফটের ভাষ্যমতে সে চেষ্টায় তারা সফল। তবে তাদের সাফল্যে আসল বিচার করবেন ইউজারগণ।
উইন্ডোজ এম.ই ফিচারসমূহ -
উইন্ডোজ এম.ই-তে অনেক নতুন নতুন সফটওয়্যার আর ফিচারসমূহ যুক্ত করা হয়েছে একথা আগেই বলা হয়েছে। তবে সেই ফিচার আর সেগুলো ব্যবহার করে ইউজারদের কী ধরনের লাভ হতে পারে তা এখনও বলা হয় নি। উইন্ডোজের এ ভার্সনের মূল উন্নতিটা হয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া সংক্রান্ত কাজে অনলাইন কর্মকাণ্ডে আর কিছু নেটওয়্যার্কিং ফিসংক্রান্ত কাজে অনলাইন কর্মকাণ্ডে আর কিছু নেটওয়্যার্কিং ফিচারে।
এতে উইন্ডোজ মুভি মেকার নামে যে সফটওয়্যারটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেটির সাহায্যে অতি সহজে অন্য স্টোরেজ থেকে মুভি কম্পিউটারে প্রবেশ করানো যায়। এর সাহায্যে অডিও ও ভিডিও এডিটিং করা যায় এনালগ বা ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে, ভিসিআর থেকে অথবা ওয়েব থেকে মুভি ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে। আর তারপর তা ইমেইল করে পাঠাতে পারবেন বন্ধু বা স্বজনকে|
অন্য কোনো থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ছাড়াই আপনি আপনার কম্পিউটারে স্ক্যানার বা ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ছবি ইম্পোর্ট করতে পারবেন। আর এই ছবি হার্ডড্রাইভে সেভ করার আগে তার প্রিভিউ দেখে নিতেও পারবেন।
এতে আরেকটি বড়সড় সংযোজন হলো মিডিয়া প্লেয়ার ৭। এর সাহায্যে অধিকাংশ জনপ্রিয় স্ট্রিমিং আর লোকাল অডিও /ভিডিও ফরম্যাট উপভোগ করা যায়। এর সাহায্যে আপনি আপনার মিউজিক ক্যাটালজিং আর অর্গানাইজ তো করতে পারবেনই; অধিকন্তু নিজের মিউজিক কালেকশন শুনতে শুনতে (বা দেখতে দেখতে) বিরক্ত হয়ে গেলে ৩০০০-এর মতো ইন্টারনেট রেডিও স্টেশন বেছে নিয়ে শুনতে পারেন নতুন নতুন সঙ্গীত।
ডাইরেক্ট এক্স ৭-এর নতুন ভার্সনও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আপনার এই অপারেটিং সিস্টেমে। ফলে আপনার গেমের শব্দ আর দৃশ্যসমূহকে আরও বাস্তবসম্মত করে তোলে। ফলে উইন্ডোজ এম.ই পরিণত হয়েছে হাইকালার গ্রাফিক্স, 3D অ্যানিমেশন, সারাউন্ড সাউন্ড আর 3D গেমিং-এর জন্য একটি আদর্শ প্লাটফর্ম।
এতদিন Help নাম নিয়ে যে উইজার্ডটি ব্যবহারকারীদের নানা কাজে আর সমস্যায় সাহায্য করত তার নাম এখন Help and Support- শুধু নামে নয়, পরিবর্তন এসেছে আঙ্গিকেও। এতে রয়েছে ওয়েব ভিত্তিক রিসোর্স, ফলে লোকাল হেল্পে ডাটাবেজ থেকে সাপোর্ট পেতে ব্যর্থ হলেও ওয়েবে সরাসরি যোগাযোগ করেও জেনে নেওয়া যাবে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান আর প্রশ্নের উত্তর।
উইন্ডোজ ৯৮ বা ৯৫ -এ প্রায়ই দেখা যেতো ইউজার অজ্ঞতাবশত মুছে ফেলেছেন সিস্টেমের জন্য অতি প্রয়োজনীয় কোনো ফাইল। ফলে সিস্টেম আনস্ট্যাবল হয়ে পড়ত বা ক্ষেত্রবিশেষে বুট করতেও সক্ষম হতো না। উইন্ডোজ এম.ই এ ঝামেলা থেকে পুরোপুরি মুক্ত। এর সিস্টেম ফাইল প্রোটেকশন ফিচার ভুল করে সিস্টেম ফাইলকে মুছে ফেলা থেকে বাঁচাবে।
আপনি হয়ত সিস্টেম সেটিংসে এমন কোনো পরিবর্তন করে ফেলেছেন ভুলবশত, যা আপনার পিসির পারফরমেন্সকে মারাক্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আপনি যদি উইন্ডোজ এম.ই -এর ব্যবহারকারী হোন, তাহলে আপনার চিন্তার কিছু নেই। আপনাকে যা করতে হবে তা হলেঅ সিস্টেম রিস্টোর-কে অ্যঅক্টিভেট করা। পরবর্তীতে উইন্ডোজ রিস্টার্ট করলেই আপনি ফিরে যাবেন আগের অবস্থায়।
উইন্ডোজ এম.ই-এর হার্ডওয়্যার ইনস্টলেশনের উইজার্ড আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ আর কার্যকর উপায়ে হার্ডওয়্যঅর ইনস্টল করতে পারে। এক্ষেত্রে ইউজারের তেমন কোনো ভূমিকাই পালন করতে হয় না। আর উইন্ডোজ এম.ই তখনই কনফিগার করে নেয় ডিভাইসগুলো। ফলে বারবার উইন্ডোজ রিস্টার্ট করার ঝামেলা নেই।
উইন্ডোজের মেনুগুলো এখন আগরে চেয়ে স্মার্ট আর বুদ্ধিমান তারা সবসময়ই আপনার কর্মকাণ্ড খেয়াল করে। আতঃপর যে মেনুগুলো আপনি বেশি ব্যবহার করেন সেগুলো থাকে চোখের সামনে। আর অপেক্ষাকৃত কম ব্যবহৃত হয় যেগুলো সেগুলোও থাকে তবে কিছুটা আড়ালে।
মাইক্রোসফট তার পার্টনার ও সাপোর্টিং হার্ডওয়্যার কোম্পানিগুলোর হার্ডওয়্যারের সাথে আরও বেশি কম্প্যাটিবল করার চেষ্টা করেছে মিলেনিয়ামের এই ওএস টিকে।ফলে কোনো নতুন হার্ডওয়্যার সিস্টেমে আসা মাত্র এম.ই নিজেই দেখে নেয় সেটি সঠিকভাবে কাজ করবে কি না। ফলে ইউজারকে কম্প্যাটিবিলিটি নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না।
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৫.৫ উইন্ডোজ এম.ই-এর সঙ্গে বিল্ট ইন এটি ব্রাউজিং পারফরমেন্স, সার্চিং স্পিড ইত্যাদি বিবেচনায় পূর্বের ভার্সন অপেক্ষা উন্নততর। এর মাধ্যমে ওয়েব পেজ প্রিন্টিং ও সহজসাধ্য হয়েছে।
আউটলুক এক্সপ্রেসের সাহায্যে আগের চেয়ে দ্রুততার সাথে মেইল আনা নেওয়া করা যায়, হট-মেইলের অ্যাকাউন্টে অ্যাকসেস করা যায়, নিউজ গ্রুপে জয়েন করা যায়। আর এবই করা যায় ডেস্কটপ থেকে সরাসরি। এমএসএন ম্যাসেঞ্জার আপনাকে জানিয়ে দেবে কখন আপনার বন্ধু এলো অনলাইনে। ফলে আপনি ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজ পাঠাতে পারবেন, রিয়েল টাইম চ্যাট করতে পারবেন অথবা ভিডিও কনফারেন্সিং করা যেতে পারে নেটমিটিং কনফএরন্সিং সফটওয়্যারের সাহায্যে। এ সফটওয়্যারগুলো উইন্ডোজের সাথেই পাওয়া যায় বিনামূল্যে। এর সাহায়্যে আপনি অনলাইনে গেমও খেলতে পারবেন বিশ্বের অন্য প্রান্তের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বির সাথে। এম.ই -এর সাথে Back gammon, Hearts, spades, checker ইত্যাদি গেমের ইন্টারনেট ভার্সন দেওয়া আছে।
এতে রয়েছে একটি হোম নেটওয়ার্কিং উইজার্ড যার সাহায্যে খুব সহজেই আপনি তৈরি করতে পারবেন একটি সফল ছোট হোম নেটওয়ার্ক।
ইন্টারনেট কানেকশন শেয়ারিং (ICS)-Gi মাধ্যমে আপনি সহজেই একটি মাত্র ইন্টারনেট কানেকশন থেকে একাধিক পিসিতে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া যাবে। এমনকি অন্য পিসিগুলোতে উইন্ডোজ ৯৫ বা ৯৮ ইনস্টল করা থাকলেও
উইন্ডোজ এম.ই আপনাকে ইথারনেট, ওয়্যারলেস, হোম PNA সহ প্রায় সব ধরনের হোম নেটওয়ার্ক টেকনোলজির মাধ্যমেই নেটওয়ার্ক তৈরির সুবিধা প্রদান করে।
উইন্ডোজ এম.ই হলো সর্বপ্রথম অপারেটিং সিস্টেম যাতে ব্যবহার করা হয়েছে ইউনিভার্সাল প্লাগ এন্ড পে¬ ডিভাইস। ফলে এটি কেবলমাত্র কম্পিউটার অ্যাকসেসরিজ কেই ডিটেক্ট করে না, সাথে সাথে সব ধরনের গ্যাজেট, অ্যাপ¬ায়ান্স, ওয়্যারলেস ডিভাইসকেও ডিটেক্ট ও ইনস্টল করতে পারে। নতুন TCP/IP স্ট্যাকের অন্তর্ভুক্তিকে উইন্ডোজ এম.ই দিতে পারছে আগের চেয়ে আরও স্ট্যাবল আর সিকিউরড ইন্টারনেট অ্যাকসেস।
ডসের পরিসমাপ্তি -
উইন্ডোজের এই মিলেনিয়অম এডিশনে যে কয়টি বড় পরিবর্তন ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম হচেছ ডস-এর আংশিক বিদায়। পার্সোনাল কম্পিউটিং-এর সূচনাকারী এই অপারেটিং সিস্টেমটি দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবহারকারীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম দাঁড়িয়ে আছে ডস প্লাটফর্মের ওপর-এ ধরনের একটা বদনামও প্রচলিত ছিল। তা সত্ত্বেও মাইক্রোসফট উইন্ডোজের সাথে এতদিন ডসকে রাখার কারণ মূলত পুরনো ইউজারদের পছন্দকে গুর"ত্ব দেওয়া আর তাদের নতুন এনভায়রনমেন্টের সাথে খাপ খাইয়ে নেবার সুযোগ করে দেওয়া। সমপ্রতি মাইক্রোসফট উদ্যোগ নিয়েছে ডসকে বিদায় জানানোর। আর সেই সিদ্ধান্তের প্রাথমিক ফলাফল হলো উইন্ডোজ এম.ই।
এখন থেকে ইউজাররা আর উইন্ডোজকে এমএসডস মোডে রিস্টার্ট করার কোনো অপশন শাট ডাউন মেনুতে খুঁজে পাবে না। বাকি তিনটা অর্থাৎ শাট ডাউন, রিস্টার্ট আর স্ট্যান্ডবাই মোডগুলো অবশ্য থাকছে আগের মতই। অথবা উইন্ডোজ স্টার্ট আপের সময় F8 কী চেপে ধরেও ডস মোডে কম্পিউটার চালু করার কোনো অপশনও থাকছে না। এতে করে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ডস ফিচারের সমস্যা থেকে যেসম মুক্তি পাবে তেমনিভাবে স্টার্টআপ বা শাটডাউনও হয়ে উঠবে আগের চেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন। মাইক্রোসফট অবশ্য অনেকদিন যাবৎই সত্যিকার অর্থে ৩২ বিটের অপারেটিং সিস্টেম তৈরির জন্য চেষ্টা করছিল ডসকে বাদ দেয়ার। কিন্তু ডসের বেশ কিছু অ্যাপি¬কেশন এখন পর্যন্ত অত্যন্ত জনপ্রিয় বলেই তারা উইন্ডোজ 95/98 বা ৯৮ সেকেন্ড এডিশন থেকে ডসকে বাদ দেয়নি। এম.ই-তে ডস বাদ পড়ায় এতে পার্টিশন ম্যাজিক ৫.০১-এর মতো ডসভিত্তিক জনপ্রিয় সফটওয়্যারগুলো চলবে না। কারণ এগুলো চালানোর জন্য প্রয়োজন হয় রিয়েল মোড ডস, যা এম.ই-তে অনুপস্থিত। ডসপ্রেমী যারা, তরা হয়তো এরই মাঝে উইন্ডোজ এম.ই সম্বন্ধে বেশ খানিকটা আগ্রহ হারিয়েছেন। তাদের জন্য খবর হলো যে, মাইক্রোসফট উইন্ডোজ থেকে ডস ঠিকই বাদ দিচেছ, তবে তা কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে। অর্থাৎ উইন্ডোজ ডস থাকছে না ঠিকই, কিন্তু ডসকে যারা পছন্দ করেন অথবা ডসের অ্যাপি¬কেশনগুলো যাদের কাঝে অত্যন্ত প্রিয় তারা ঠিকই ডস ব্যবহার করতে পারবেন। পরস্পরবিরোধী এই কথাটি একটু ব্যাখ্যা করে বললেই ব্যাপারটি পরিষ্কার বোঝা যাবে। অর্থাৎ এম.ই-এর সাথেও ডস আছে। তবে তা ৯৮ বা ৯৫-এর মতো প্রকাশ্য অবস্থায় নেই। আছে লুকিয়ে। আপনাকে শুধু একটি বুটডিস্ক বানিয়ে নিতে হবে কষ্ট করে। বুটডিস্ক বানানোর জন্য একটি ভালো ফ্লপিডিস্ক নিন এবং তা ফরম্যাট করুন। এরপর সি ড্রাইভের Windows/command/ebd ফোল্ডারে গিয়ে io.sys এবং Command.com ফাইলগুলো ঐ ফ্লপিতে কপি করে নিন। এরপর আপনার বায়োস ফাইলগুলোকেও একই ফ্লপিতে কপি করে নেন। এরপর ফ্লপির সাহায্যে আপনার পিসিটি রিবুট কর"ন। তাহলেই আপনি ফিরে পাবেন আপনার চির পরিচিত কমান্ড প্রম্পট এনভায়রনমেন্ট। এতে আপনি ডসের সকল অ্যাপি¬কেশনগুলোও চালাতে পারবেন। আর যারা এত ঝামেলায় যেতে চান না তাদের জন্য তো রইলই Ms-dos প্রম্পট। স্টার্ট মেনুতে Program/Accessories পাথ ফলো করলেই পেয়ে যাবেন তা। তবে ডস প্রম্পটে ডসের অ্যাপি¬কেশনগুলো চালানো যাবে না।
গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস -
উইন্ডোজ ২০০০ আর উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশনের রিলিজের মাঝে সময়ের ব্যবধানমাত্র 4/5 মাস। আর হয়তোবা সে কারণেই উইন্ডোজ ২০০০ আর উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশনের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। এর ধূসর উইন্ডো আউট অত্যন্ত চমৎকার। আর মাইকম্পিউটার, রিসাইকল বিন, মাই ডকুমেন্টস, মাই নেটওয়ার্কপে¬স প্রভৃতি আইকনগুলো নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে ডেস্কটপ আরও সুন্দর আর আকর্ষনীয় হয়েছে। স্টার্ট মেনুর লম্বালম্বি নীল বারটিতে উইন্ডোজ এম.ই-এর লেঅগোটি স্টার্ট মেনুর আবেদন বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকগুণ। আর স্টার্ট মেনুও আগের চেয়ে স্মার্ট হয়ে উঠেছে। এটি স্বয়ংক্রীয়ভাবেই অল্প ব্যবহৃত আইকনগুলো লুকিয়ে রাখে আর বেশি ব্যবহৃত আইকন আর শর্টকাটগুলো প্রদর্শন করে।
এই স্মার্ট ফিচারটি অবশ্য অনেকেই পছন্দ করেন না। তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। অর্থাৎ এ ফিচারটি ডিসেবল করে রাখার ব্যবস্থা আছে। স্টার্ট মেনুতে কিছু কিছু আইকনের জন্য টুলটিপস রয়েছে। অর্থাৎ আপনি যদি মাইস পয়েন্টারটি আইকনের ওপর স্থাপন করেন তাহলে উক্ত আইকনের কার্যকারিতা বিশে¬ষণ করে এক বা দুই লাইন দেখতে পাবেন। উইন্ডোজের আগের ভার্সনগুলোর আরেকটি দুর্বলতা হলো যে এর সিস্টেম ট্রে বা টাস্কবারের আইকনগুলোতে ট্যাব কী-এর সাহায্যে নেভিগেট করা যেতো না। ফলে সেগুলো ব্যবহার করার জন্য মাউস ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না। এম.ই তে সে অসুবিধাও দূর করা হয়েছে। ফলে ট্যাব কী ব্যবহার করেই টাস্কবার থেকে চালু করতে পারবেন মিডিয়া পে¬য়ার বা দেখে নিতে পারবেন দিনের তারিখ বা কন্ট্রোল করতে পারবেন মিউজিক ভলিউম। কন্ট্রোল প্যানেল, প্রিন্টার প্রভৃতি ফোল্ডারে স্টার্ট মেনু থেকে সরাসরি প্রবেশ করা যায়। স্টার্ট মেনুতে আইকনখুব বেশি হয়ে গেলে অর্থাৎ এক কলামে জায়গা না হলে স্টার্ট মেনুকে স্ক্রল টাইপ ভিউ অথবা মাল্টিকলাম ভিউয়ের মাধ্যমে দেখা যায়।
উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারে দুটি নতুন বাটন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো Copy to আর Move to আর বাদ পড়েছে তিনটি বাটন। এগুলো হলো কার্ট, পেস্ট আর কপি বাটন। অবশ্যনতুন বাটন দুটি দ্বারাই আরও সহজে কম সময়ে বাদ পড়া তিনটি বাটনের কাজ করা যায়। কোনো ফাইল বা ফোল্ডারকে কপি করতে চাইলে তাকে সিলেক্ট করে Copy to বাটনে ক্লিক করে ok করলেই ইচেছমত ফোল্ডারে কপি হয়ে যায়। একইভাবে Move to আইকনের মাধ্যমে কার্ট পেস্টের কাজটা করা যায়। তবে কপি, কাট, পেস্ট ফিচারগুলো টুলবারে না থাকলেও তা একেবারে বাদ দেওয়া হয়নি। এগুলো আপনি পাবেন রাইট ক্লিক মেনু কিংবা ফোল্ডারের Edit মেনুতে। বিভিন্ন ফোল্ডারের বাম পাশে মাই কম্পিউটার, মাই ডকুমেন্টস, মাই নেটওয়ার্ক পে¬সের লিংক রয়েছে। ফলে যে কেউ খুব সহজেই সরাসরি এসব লিংক ক্লিক করার মাধ্যমে এগুলোতে এক্সেস করতে পারে।
উইন্ডোজ এক্সপি হলো "eXPerience" –এর সংক্ষেপ।
উইন্ডোজ ২০০০ প্রফেশনাল ও উইন্ডোজ এমই-র উত্তরসুরী হিসাবে ইহা বাজারে আত্মপ্রকাশ করে। সাধারন ভোক্তাদের জন্য ইহাই প্রথম মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম যা উইন্ডোজ এনটি কার্নেল ও আর্কিটেক্সারের উপরে প্রতিষ্ঠিত। ২০০১ সালের ২৫ অক্টোবর ইহা রিলিজ করা হয় এবং ২০০৬ সালের মধ্যে ইহার প্রায় ৪০ কোটি কপি বিক্রী হয়। এই সময় উইন্ডোজের পরবর্তী এডিশন ভিসতা বাজোরে আসে। ২০০৮ সালের জুন মাসের ৩০ তারিখে খুচরা বাজারে ইহার বিক্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে বন্ধ ঘোসনা করা হয়। অবশ্য কাষ্টম বিল্ট পিসিতে ইহা ২০০৯ সালের জানুয়ারী পর্য্যন্ত চালু ছিল।
উইন্ডোজ এক্সপির অনেকগুলি ভার্শনের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো “হোম এডিশন’, যা বাসার ব্যবহারীদের জন্য প্রস্তুত। এর পরে উইন্ডোজ এক্সপি প্রফেশনাল এডিশন ,যা বিজনেস ও ইন্টারপ্রাইজ ক্লায়েন্টদের জন্য তৈরী। ইহা উইন্ডোজ সার্ভার ডোমেইন ও দুইটি প্রসেসর সাপোর্ট করতো। উইন্ডোজ এক্সপি মিডিয়া সেন্টার এডিশন-এ বিশেষ মাল্টিমিডিয়া ফিচার যুক্ত থাকার কারনে টিভি রেকর্ড করা ও দেখা যায় ; ডিভিডি মুভি উপভোগ করা যায় এবং মিউজিক শোনা যায়। উইন্ডোজ এক্সপি ট্যাবলেট পিসি এডিশন ট্যাবলেট পিসি প্লাটফর্মের এপ্লিকেশনগুলি চালানোর উপযোগী করে তৈরী। এছাড়াও উইন্ডোজ এক্সপি ৬৪ বিট এডিশন (আইটেনিয়াম প্রসেসরের জন্য) এবং উইন্ডোজ এক্সপি প্রফেশনাল ৬৪ বিট এডিশন (x86-64 প্রসেসরের জন্য) নামে আরোও দুইটি ভার্শন তৈরী করা হয়।
এনটি ভিত্তিক উইন্ডোজ –এর ভার্শন গুলির নিরাপত্তা ও দক্ষতা উইন্ডোজ ৯-এক্স ভিত্তিক ভার্শনের চেয়ে ভালো। উইন্ডোজ এক্সপির সব এডিশনে আগের এডিশনের চেয়ে গ্রাফিক্স ইউজার ইন্টারফেস অরো উন্নত করে ডিজাইন করেছে। এছাড়া এতে অবৈধ কপি করার চেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ও উইন্ডোজ মিডিয়া প্লোয়ার এর সাথে সমন্বিত করার ফলে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। পরে সার্ভিস প্যাক -১ ও ২ এবং ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৮ –এর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হয়।
উইন্ডোজ এক্সপি ডেভেলপমেন্ট কালীন সময়ে এর কোডনাম ছিল ‘হুইসলার” । ২০০৯ সালের আগষ্ট মাসের তথ্য অনুযায়ী উইন্ডোজ এক্সপি ছিল সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম (মার্কেটের প্রায় ৬৬%)। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী উইন্ডোজ এক্সপি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে বাজারের প্রায় ৮৫% দখল করেছিল ।
উইন্ডোজ ভিসতা
২০০২ সালের জুলাই মাসে যখন এই অপারেটিং সিস্টেমের কথা ঘোষনা করা হয় , তখন এর নাম কোডনাম ছিল “লংহর্ণ” । নভেম্বর ২০০৬ সালে এর নির্মান কাজ শেষ হলে পরবর্তী তিন মাসে ইহা কমপিউটার হার্ডওয়ার প্রস্তুতকারক, ব্যবসায়ী মহল ও খুচরা বিক্রেতাদের হাতে পেছে যায়। ত্রিশে জানুয়ারী ২০০৭ সালে ইহা সারা বিশ্বের বাজারে পাওয়া যায়। উইন্ডোজ এক্সপির পরে দির্ঘ্য প্রায় ৫ বছর পর এই অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আসে, যা উইন্ডোজের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী সময়। উইন্ডোজ ভিসতায় ব্যাপক পরিবর্তন ও নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। বিশেষ করে “উইন্ডোজ এরো” নামে গ্রাফিক্স ইউজার ইন্টারফেস ও ভিজুয়াল ষ্টাইল আলাদা মর্য্যাদার দাবীদার। সার্চ ফাংশনকে রিডিজাইন করা হয়েছে, উইন্ডোজ “ডিভিডি মেকার” সহ মাল্টিমিডিয়া টুলসকে অলাদা করে সাজানো হয়েছে এবং নেটওয়ার্কিং, অডিও, প্রিন্ট ও ডিসপ্লে সাবসিস্টেমকে নতুন রুপ দেওয়া হয়েছে। উইন্ডোজ ভিসতায় ডটনেট ফ্রেমওয়ার্কের ৩.০ ভার্শন যোগ করা হয়েছে যার মাধ্যমে সফটওয়ার ডেভেলপররা উইন্ডোজ এপিআই-এর সাহায্য ছাড়াই তাদের এপ্লিকেশন লিখতে পারবে।
উইন্ডোজ ভিসতার আর একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর সিকিউরিটিকে আরো সুসংহত করা। উইন্ডোজ এক্সপি এবং অণ্যান্য এডিশনের দুর্বল দিকগুলি, যেমন দুর্বল নিরাপত্তা, ম্যালওয়ার, ভাইরাস –এর আক্রমন ও বাফার ওভারফ্লো প্রভৃতি সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এর কিছু নেগেটিভ দিকও আছে যা তদেরকে সমালোচনার মুখামুখী করেছে। অবৈধ কপি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় বেশী কড়াকড়ি, প্রাক-ভিসতা হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার-এর সাথে সামঞ্জস্যের অভাব, উচু সিস্টেম রিকয়ারমেন্ট ইত্যাদির কারনে সব ধরনের ব্যবহারকারীর পক্ষে ইহার গ্রহনযোগ্যতা কম। এই সমস্ত কারনে উইন্ডোজ ভিসতার জনপ্রিয়তা উইন্ডোজ এক্সপির চেয়ে কম – এপর্য্যন্ত ব্যবহারকারী প্রায় ২০ কোটি । আগষ্ট ২০০৯ –এর সমীক্ষা অনুযায়ী উইন্ডোজ ভিসতা বাজারের ২৩% দখল করে আছে আর উইন্ডোজ এক্সপির দখলে ৬৯%।
উইন্ডোজ ৭ (সেভেন)
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ-এর সর্বশেষ ভার্শন হলো উইন্ডোজ ৭ (সেভেন) । প্রস্তুতিপর্বে এর কোডনাম ছিল ব্লাকবোম্ব ও ভিয়েনা। মেনুফ্যাকচারারদের কাছে ২২ জুলাই ২০০৯ তারিখে ইহা অবমুক্ত করা হয়্এবং ২২ অক্টোবর ২০০৯ সালে ইহার ফ্ইনাল ভার্শন রিলিজ করা হয়। এর সাথে উইন্ডোজ সার্ভার ২০০৮ (রিলিজ-২) ও বাজারে এসেছে। উইন্ডোজ ভিসতা রিলিজের প্রায় তিন বছর পরে এই এডিশন বাজারে ছাড়া হলো। সেই চিরন্তন প্রথার মতোই এই ভার্শনেও নতুন নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – মাল্টি-টাচ সাপোর্ট, উইন্ডোজ শেলকে রিডিজাইন করে নতুন টাস্কবার, হোমগ্রুপ নামে নতুন নেটওয়ার্কিং সিস্টেম। আগের ভার্শনে Windows Calendar, Windows Mail, Windows Movie Maker, and Windows Photo Gallery নামে যেসব এপ্লিকেশন অপারেটিং সিস্টেমের সাথে ইমবিডেড থাকতো তা আর এই ভার্শনে থাকবে না বরং এগুলি আলাদাভাবে “ free Windows Live Essentials suite নামক এপ্লিকেশন-এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
উইন্ডোজের বিভিন্ন ভার্শনের সর্বনিম্ন সিস্টেম রিকয়ারমেন্ট –
উইন্ডোজ ভার্শন প্রসেসর মেমোরী বা রাম গ্রাফিক্স কার্ড হার্ডডিস্ক স্পেস
এমই পেন্টিয়াম ২ ৩০০ মে.হার্জ ৬৪ মেগাবাইট SVGA (৮০০X৬০০) ২ গিগাবাইট
এক্সপি ৩০০ মেগাহার্জ ১২৮ মেগাবাইট SVGA (৮০০X৬০০) ১.৫ গিগাবাইট
ভিসতা ১০০০ মেগাহার্জ ১ গিগাবাইট ডিইরেক্ট-এক্স ৯.০ ক্যাপিবল
ভিডিও রাম ৩২ মেগাবাইট ২০ গিগাবাইট
সেভেন ১ গিগাহার্জ; ৩২ বিট প্রসেসর ১ গিগাবাইট ডিইরেক্ট-এক্স ৯.০ ক্যাপিবল প্রসেসর
১৬ -২০ গিগাবাইট
উইন্ডোজ ফাইল সিস্টেম
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে বর্তমানে ৩ ধরনের FAT (File Allocation Table) ব্যবহার করা হয়। যেমন, FAT 16, FAT 32 এবং NTFS| এদের মধ্যে ফ্যাট ১৬ হলো সবচেয়ে পুরানো এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত। ফ্যাট ৩২ উইন্ডোজ ৯৫-এর পরের ভার্সনগুলোর সাথে বের হয়েছে এবং এটি ফ্যাট ১৬ অপেক্ষা বেশি কার্যকরী। উইন্ডোজ এনটির ফাইল সিস্টেমে ব্যবহার করা হয় এনটিএফএস পদ্ধতি তবে এটি বর্তমানে উইন্ডোজএর ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম।
একজন সাধারণ ব্যবহারকারী হার্ড ড্রাইভের স্পেস ছাড়া ফাইল সিস্টেম সংক্রান্ত আর কোনো ব্যাপারে চিন্তিত না হলেও পারেন। যারা পিসিতে ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করেন তারা সহজেই সেটি ফ্যাট ৩২-তে রূপান্তর করে হার্ড ড্রাইভের স্পেস বাড়াতে পারেন। মাইক্রোসফটের মতে ফ্যাট ১৬ থেকে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করা উইন্ডোজ ৯৮ ভিত্তিক পিসিগুলোর জন্য একটি প্রধান সিস্টেম এনহ্যান্সমেন্ট পদ্ধতি। এর ফলে আপনি ১০-২৫% পর্য্যন্ত হার্ড ড্রাইভের জায়গা অতিরিক্ত ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ ২০০০-এর ব্যবহারকারীরা সাধারণত তাদের ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম এনটিএফএস থেকে ফ্যাট ১৬ বা ফ্যাট ৩২-তে সুইচ করে না। কিন্তু যেসব ব্যবহারকারী উইন্ডোজ এনটি/উইন্ডোজ ২০০০ ছাড়া উইন্ডোজের আগের কোন ভার্সন একই সাথে ব্যবহার করতে চান তাদরে ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করতে হবে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে ফাইল সিস্টেম পিসির ঠিক কি কাজে লাগতে পারে।
ফাইল এলোকেশন টেবিল - FAT ফ্যাট হচেছ সেই গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি ক্ষেত্রের একটি (অন্যগুলো হচেছ- বুট রেকর্ড, পার্টিশন টেবল, মাস্টার বুট রেকর্ড, রুট ডিরেক্টরি) যা পিসির হার্ড ড্রাইভ অর্গানাইজেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়। যদি পিসিকে একটি লাইব্রেরি হিসেবে কল্পনা করা হয় তাহলে ফাইল সিস্টেম হচেছ সেটির কার্ড ক্যাটালগ। ফাইল এলোকেশন টেবল আপনার হার্ড ডিস্কে সেভ করা সব রকম ফাইল , ফোল্ডারগুলোর এড্রেস, বিষয়বস্তু এবং স্ট্যাটাস সম্পর্কে তথ্য জমা রাখে।
এই ফাইল এলাকেশন টেবল বিভিন্ন ক্লাস্টারের (হার্ড ড্রাইভে ফাইলের জন্য রিজার্ভকৃত জায়গা) ফাইল এবং ফোল্ডারগুলো লোকেট করে রাখে। ক্লাস্টার হলো ডাটা সেভ করার জন্য অপারেটিং সিস্টেম কর্তৃক নিধারিত সবচেয়ে ক্ষুদ্র একক। ক্লাস্টারগুলো সবচেয়ে ছোট ইউনিট।
ফ্যাট ১৬ (FAT 16) - যেহেতু এই পদ্ধতি সবচেয়ে আগে বের হয়েছে তাই এটিকে অনেকে শুধু ফ্যাটও বলে থাকে। ১৯৭৭ সালে ডিস্কেটে ডাটা অর্গানাইজ করার জন্য উদ্ভাবিত এই ১৬ বিট ফাইল সিস্টেম ডস, উইন্ডোজ, লিনআক্স, ওএস/২, উইন্ডোজ এনটি ইত্যাদি বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করতে সক্ষম। তবে এটির খারাপ দিক হলো- এর মাধ্যমে বড় বড় হার্ড ডিস্কগুলোকে ম্যানেজ করা যায় না। ৭০-এর দশকে পিসির হার্ড ডিস্কগুলো ছিলো বেশ ছোট কিন্তু ৮০র দশক থেকে আজ পর্য্যন্ত হার্ড ড্রাইভের আয়তন যেভাবে বাড়ছে সেক্ষেত্রে ফ্যাট ১৬-এর ৬ জি.বা.নিয়ে কাজ করার ক্ষমতা একেবারেই অপ্রতুল বলে বিবেচিত হয়।
ফ্যাট ৩২ (FAT32) - উইন্ডোজ ৯৫-এর একটি ভার্সনের সাথে মাইক্রোসফট বাজারে ছাড়ে ফ্যাট ৩২ যাতে ফ্যাট ১৬-এর কম হার্ড ডিস্ক স্পেস ম্যানেজ করার অসুবিধাটি সমাধান করা হয়। ফ্যাট ৩২-তে ক্লাস্টার আয়তন ফ্যাট ১৬-এর চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে ছোট- ফলে ডিস্ক স্পেস আরো ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ডিস্ক ফেইলিওর সম্ভাবনাও এই ফ্যাট ৩২-এ কম, কারণ এটি ফ্যাট ৩২-এর ব্যাকআপ কপি ব্যবহারে সক্ষম।
ফ্যাট ৩২ পদ্ধতি ২ টেরাবাইট (১ টেরাবাইট = ১ ট্রিলিয়ন বাইট) আয়তন পর্য্যন্ত হার্ড ডিস্ককে ম্যানেজ করতে পারে। এছাড়া ফ্যাট ১৬ শুধু মাত্র ৫১২ টি ফাইল এবং ফোল্ডারের রুট ডিরেক্টরি ম্যানেজ করতে পারতো। অন্যদিকে ফ্যাট ৩২ আনলিমিটেড রুট ডিরেক্টরি সাপোর্ট করে। ফ্যাট ১৬-এ সবসময় রুট ডিরেক্টরিকে হার্ডড্রাইভের প্রথমে স্থান দিতে হয়- ফলে যদি সেই জায়গাটি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সিস্টেম ফেইলিওর সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্যাট ৩২-এর ক্ষেত্রে এই অসুবিধা নেই। কারণ এতে ডিরেক্টরি সরানোর অপশন দেয়া আছে।
এনটিএফএস (NTFS) - ঠিক মতো পুরো সিস্টেমের ডাটা ম্যানেজ করা ছাড়াও এনটিএফএস পদ্ধতি সিকিউরিটির দিক থেকেও বেশ উন্নত। এজন্য এটি হাই-এন্ড সার্ভারগুলোতে ব্যবহৃত হয়। যদিও প্রথমে এটি উইন্ডোজ এনটির জন্য ডিজাইন করা হয়েছিলো- তবে এখন এটি উইন্ডোজ ২০০০-এ ব্যবহার করা স্বাভাবিকভাবেই হার্ড ডিস্কের স্পেস ভালোভাবে ব্যবহারের জন্য ক্লাস্টার আয়তন আরো ছোট করা হয়েছে। তবে এনটিএফএস এবং ফ্যাট ১৬ আর ফ্যাট ৩২-এর মধ্যে আরো কিছু ক্ষেত্রে বেশ পার্থক্য রয়েছে। যেমন - নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফাইল শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে এনটিএফএস কিছু স্পেসিফিক লেভেল ব্যবহার করে। যেমন - read only, read/write অথবা deleting| এছাড়া এনটিএফএস লোকাল কমিপউটারগুলোতে প্রতিটি ফাইল এবং ডিরেক্টরি রক্ষা করার অপশন ব্যবহারকারীকে দিয়ে থাকে- অথচ ফ্যাট ৩২-এ শুধুমাত্র নেটওয়ার্কে একটি ফাইল রক্ষা করতে পারে। কিন্তু আপনার টার্মিনালে অন্য কোনো অবৈধ ব্যবহারকারী বসে সেই ফাইল এক্সেস করলে তা প্রতিহত করতে পারে না। এছাড়া এনটিএফএস -এর ফল্ট টলারেন্স পদ্ধতি বেশ উন্নত। এটি হার্ডড্রাইভে সংরক্ষিত ফাইলের কপিগুলোর সাথে তুলনা করে প্রায় সাথে সাথেই যেকোনো ধরনের হার্ড ডিস্ক এরর শুধরে নিতে পারে। যদি যেকোন একটি কপি না ম্যাচ করে তাহলে-এনটিএফএস সেই সেকশনটি বাদ দিয়ে সেই একই ফাইলের কপি হার্ড ডিস্কের অন্য ড্রাইভে আবার লিখে রাখে।
ফাইল সিস্টেম সমুহের পার্থক্য -
এই তিনটি ফাইল সিস্টেমের মধ্যে মুল পার্থক্য হলো এগুলোর হার্ড ডিস্কের জায়গা ঠিকমতো ব্যবহার করার পদ্ধতির মধ্যে। হার্ড ড্রাইভের আয়তনের সাথে সাথে ক্লাস্টার সাইজও বদলে যেতে পারে। তবে আপেক্ষিক ক্লাস্টার আয়তন সব সময় এই থাকবে। ফ্যাট ১৬-এর ক্লাস্টার সবচেয়ে বড় তারপর ফ্যাট ৩২-র এবং সবচেয়ে ছোট হলো এনটিএফএসএর। উদাহরনস্বরুপ বলা যায় যদি আমরা একটি ১ জি.বা.-এর হার্ড ডিস্ককে নেই তাহলে এর ক্লাস্টার সাইজ হবে ফ্যাট ১৬এর জন্য ৩২ কি.বা, ফ্যাট ৩২-এর জন্য ৪ কি.বা. এবং এনটিএফএস এর জন্য ১-২ কি.বা।
ফলে একটি ২ কি.বা. আয়তনের ফাইল ফ্যাট ১৬-এ ১টি ক্লাস্টার ৩২ কি.বা. এর মধ্যে ২ কি.বা. ব্যবহার করবে আর ৩০ কি.বা. নষ্ট করবে। ফ্যাট ৩২-এর ক্ষেত্রে ক্লাস্টার আয়তন হলো ২ কি.বা. এবং এনটিএফএস-এর ক্ষেত্রে কোনো ড্রাইভ স্পেসই নষ্ট হয় না। ক্লাস্টারের এই অব্যবহৃত অংশটিকে --বলে।
আপনার কমপিউটারে ফ্যাট কোনটি ? এটি দেখার জন্য My Computer-এ ক্লিক করে তারপর সাধারণত C: ড্রাইভের উপর রাইট বাটন ক্লিক করুন ও properties এ চলে যান। সেই ডায়ালগ বক্সে আপনি দেখবেন পিসিতে কোন ফাইল সিস্টেমটি কাজ করছে? ফ্যাট-১৬ নাকি ফ্যাট-৩২ ।
কোন ফ্যাট পদ্ধতি বেছে নিবেন ?
যদি আপনার পিসির ওএস উইন্ডোজ ৯৮ হয়ে থাকে তাহলে ফ্যাট ৩২ ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে যদি আপনার হার্ডড্রাইভটিতে মোট ৮ জি.বা. বা এর কম জায়গা কিংবা কিছু পার্টিশন থাকে। কারণ ফ্যাট ৩২ ব্যবহার করলে অপেক্ষাকৃত অনেক ডিস্ক স্পেস কাজে লাগানো যায়।
মাইক্রোসফটের মতে ফ্যাট ১৬-এর পরিবর্তে ফ্যাট ৩২ ব্যবহার করলে ১০-১৫% হার্ড ডিস্ক স্পেস নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যায় এবং কয়েক শত মে.বা. পর্য্যন্ত জায়গা বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া দ্রুত লোডিং এবং কম সিস্টেম রিসোর্স ব্যবহারের জন্যও ফ্যাট ৩২ জনপ্রিয়। যদি আপনার পিসিতে উইন্ডোজ ৯৫ থাকে তাহলে দেখে নিন সেটি OEM সার্ভিস রিলিজ ২ ভার্সন কিনা, যেটি প্রথম ফ্যাট ৩২ সাপোর্ট করা শুরু করে। এটি পরীক্ষা করার জন্য My Computer -এর রাইট বাটন ক্লিক করে Properties-G দিয়ে General.CL-এর মধ্যে দেখুন 4.00, 450B অথবা 4.00.430.C লেখা আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে বোঝা যাবে যে আপনার ফাইল সিস্টেম ফ্যাট ৩২-এ কনভার্ট করা যাবে- নয়ত নয়। আপনি যদি উইন্ডোজ ৯৫ থেকে (যেটি ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করে) আপগ্রেড করে উইন্ডোজ ৯৮ ব্যবহার শুরু করেন তাহলে আপনি ফ্যাট ৩২ অথবা ফ্যাট ১৬ যে কোনটিই ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ফ্যাট ১৬ ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম হিসেবে কাজ করবে- যদি না আপনি ফ্যাট ৩২ কে স্পেসিফাই করে দেন। মাইক্রোসফট অটোমেটিক্যালি ফাইল সিস্টেম কনভার্ট করার ব্যবস্থা রাখেনি।
সেটওয়ার্ক এনভায়রনমেন্টের কারণে সাধারণত উইন্ডোজ এনটি ব্যবহারকারীরা ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম এনটিএফএস-কে বদলায় না। তবে একই মেশিনে যদি উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ ৯৮ লোড করা থাকে এবং দুটি ওএস-ই যদি একই পার্টিশন এক্সেস করতে যায় তখন সেই পার্টিশানের জন্য ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু, যদি শুধু উইন্ডোজ এনটি লোড করা একটি মেশিনে নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অন্য ওএস দ্বারা এক্সেস করা হয় তাহলে ফ্যাট ব্যবহারের দরকার নেই। যদিও উইন্ডোজ ৯৮ বা উইন্ডোজ ৯৫ সরাসরি এনটিএফএস ড্রাইভগুলো পড়তে পারে। আর যদি আমরা হার্ড ডিস্কের সাইজকে ধর্তব্যের মধ্যে আনি তাহলে ২০০ মে.বা-এর কোন একটি ভার্সন এনটিএফএস-এর পরিবর্তে ব্যবহার করা উচিত। উইন্ডোজ ২০০০-এর জন্য এনটিএফএস ব্যবহার করা হয়- কারণ এর সিকিউরিটি ব্যবস্থা ফ্যাট ১৬ বা ফ্যাট ৩২-এর চেয়ে অনেক উন্নত।
ফ্যাট ১৬ কেন প্রয়োজন ?
প্রশ্ন উঠতে পারে, ফ্যাট ৩২ বা এনটিএফএস যদি এতই ভালো হয় তবে কেন ফ্যাট ১৬ এখনও ব্যবহৃত হচেছ ? এর কারণ হলো ফ্যাট ১৬ ছাড়া অন্য কোন ফাইল সিস্টেম উইন্ডোজ এর একাধিক ভার্সন যেমন-উইন্ডোজ এনটি, 3.x, ৪.০ বা উইন্ডোজ ৩.০ ডায়াল বুট করতে পারে না বা একসাথে চালাতে পারে না। এছাড়া এনটিএফএস ইউজার একটি মেশিন এমএস-ডস অথবা উইন্ডোজ 9.x বুট করতে পারে না অথচ ফ্যাট ১৬-এর সিস্টেম তা পারে। উইন্ডোজ ৯৮ এনটিএফএস-এ বুট করতে পারে না, কিন্তু উইন্ডোজ ৯৮ এবং এনটিএফএস উভয়ই ফ্যাট ১৬-এর ড্রাইভগুলো রিড করতে পারে। তাই ডুয়াল বুটিং করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ফ্যাট ১৬-এর যেকোন ভার্সন মেশিনে প্রয়োগ করতে হবে।
একবার যদি ফ্যাট ১৬ থেকে ফ্যাট ৩২ বা এনটিএফএস-এ ফাইল সিস্টেমকে কনভার্ট করেন তাহলে তা পুনরায় কনভার্ট করার কোন সহজ টুল নেই। আবার ফ্যাট ১৬ ফিরে যেতে হলে আপনার হার্ড ড্রাইভকে রিপার্টিশন এবং রিফরম্যাট করতে হবে এবং ওএস আর জরুরী ফাইলগুলোকে রিইনস্টল করতে হবে। কারণ রিপার্টিশনের ফলে হার্ড ড্রাইভ থেকে সমসত ডাটা মুছে যায়।
উইন্ডোজ ৯৫/৯৮ কনভার্সনের বিভিন্ন দিক -
আপনার হার্ড ডিস্ক যদি কোন পুরানো কমপ্রেশন প্রোগ্রাম (যেমন-মাইক্রোসফট ড্রাইভস্পেস অথবা ড্রাইভস্পেস ও) ব্যবহারের মাধ্যমে কমপ্রেসড অবস্থায় থাকে তাহলে সেটিকে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করা যাবে না। যদি আপনার হার্ড ডিস্ক স্থানান্তরযোগ্য হয় এবং এমন কোন ওএস-এর সাথে ব্যবহার করা হয় যা ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল নয় তাহলে ফ্যাট ৩২-এর ড্রাইভটি এক্সেস করতে পারবেন না। আপনার ল্যাপটপে হাইবারনেট” ফিচারটি ব্যবহৃত হয়ে থাকলে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করলে এই ফিচার অফ হয়ে যেতে পারে।
যদি কোনো কারণে আপনি উইন্ডোজ ৯৮ আন ইনস্টল করে উইন্ডোজ-এর এমন কোন ভার্সন ইনস্টল করতে যান, যেটি ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল নয়, আপনি কিন্তু সেটি করতে পারবেন না। এমন অনেক সফটওয়্যারই আপনার পিসিতে থাকতে পারে যেগুলো ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল নয়। সেগুলোর আপগ্রেড ভার্সন সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন।
উইন্ডোজ ৯৮-এ ফ্যাট ৩২-এর কনভার্সন
আপনি এই কনভার্সনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করলে আপনার এই কাজ আরো সহজে সমপন্ন করা সম্ভব।
প্রথমেই একটি বুট ডিস্ক বানিয়ে নিন। এজন্য ডিস্কেট ড্রাইভে একটি খালি ডিস্ক ঢুকান। তারপর ক্লিক করে ক্রমান্বয়ে Start, Settings, Control Panel এবং সবশেষে এবং সবশেষে Add/ Remove Software-এ চলে যান। তারপর যথাক্রমে Startup Disk এবং Create Disk-এ ক্লিক করুন। আপনি পুরো সিস্টেম ব্যাকআপের সুযোগও এই কনভার্সন প্রসেসের সময় পাবেন।
কনভার্সন প্রসেসের শুরুতে যথাক্রমে Start, Programs, Accessories এবং System Tools-এ ক্লিক করুন। ড্রাইভার কনভার্টার উইজার্ড আপনাকে জিজ্ঞেস করবে যে আপনি কোন ড্রাইভকে কনভার্ট করতে চান এবং C:/FAT 16- কে ডিফল্ট হিসেবে দেখাবে। যদি এটি ঠিক হয়ে থাকে, Next -এ ক্লিক করুন। তখন ওয়ার্নিং পাবেন যে কিছু এন্টিভাইরাস এবং ডিস্ক ইউটিলিটিজ ফ্যাট ৩২-তে কাজ করে না। এরপর উইজার্ড পুরো সিস্টেমটাকে চেক করে সেই ধরনরে ইনকমপ্যাটিবল প্রোগ্রামগুলোর একটি লিস্ট তৈরি করে। তারপর স্ক্রীণে ম্যাসেজ আসবে আপনি ফাইলগুলোকে ব্যাকআপ করতে চান কিনা। যদি চান, তাহলে Create Backup-এ ক্লিক করে ডিস্ক ইউটিলিটি চালিয়ে দিন।
এই ব্যাকআপের কাজ শেষ হবার পরে স্ক্রীণে মেসেজ আসবে যদি আপনি ড্রাইভটিকে কনভার্ট করতে চান তাহরে অবশ্যই এমএস-মোডে মেশিন রিস্টার্ট করতে হবে। তারপরের কাজগুলো করবে কমিপউটার নিজে। প্রথম ধাপে একটি নীল স্ক্রীণ দেখা যাবে যেটি বলবে আপনার সিস্টেম মোট কি কি কাজ করছে যার ফলে পুরো ফাইল সিস্টেমকে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করা যায়। এরপর পিসি রিস্টার্ট হবে এবং স্বয়ংক্যীয়ভাবে ডিস্ক-ডিফ্র্যাগমেন্টর চালানো শুরু করবে। এজন্য প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগবে। তারপর মেসেজ আসবে যে কনভার্সন প্রক্রিয়া সফলভাবে শেষ হয়েছে।
তবে মনে রাখবেন, যদি হার্ড ড্রাইভে কোন এরর থাকে তাহলে কনভার্টার প্রোগ্রাম আর চলবে না। এ সমস্যা দূর করার জন্য স্ক্যান ডিস্ক চালিয়ে দেখতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যাতে Automatically fix errors বক্সটি সিলেক্ট করা থাকে।
উইন্ডোজ ৯৫-এ ফ্যাট ৩২ কনভার্শন
এটা সবসময় মনে রাখতে হবে যে উইন্ডোজ ৯৫-এর বিভিন্ন ভার্সনের মধ্যে একমাত্র উইন্ডোজ ৯৫ OSR-2 ই ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল। ফ্যাট ৩২ কোন কনভার্সন টুল অফার করে না। এ জন্য ড্রাইভ পার্টিশন এবং রিফরম্যাটিংয়ের প্রয়োজন হয়। আপনি ডিস্ক পার্টিশনের জন্য উইন্ডোজ ৯৫-এর FDISK ব্যবহার করতে পারেন। এটি প্রয়োগের খারাপ দিকে হলো - এটি আপনার সমস্ত ডাটাকে মুছে ফেলে। FDISK প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রথমে বুট দিয়ে আপনার পিসিকে স্টার্ট করাতে হবে। তারপর প্রম্পট FDISK টাইপ করতে হবে। FDISK ম্যাসেজ দেখাবে Do you want to enable large hard drive support? এক্ষেত্রে Yes লিখুন, এরপরে আপনার ড্রাইভ ফ্যাট ৩২ হিসেবে ফরম্যাট হবে।
উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ ২০০০-এ কনভার্সন
যেহেতু উইন্ডোজ এনটি বা উইন্ডোজ ২০০০-এর ফাইল সিস্টেমে কনভার্ট করার জন্য কোন উইজার্ড নেই, তাই একাজ একজন সাধারণ ব্যবহারকারীর কাজে জটিল এবং সময় সাপেক্ষ বলে মনে হতে পারে। এটি করতে হলে শুরুতে অবশ্যই পিসিকে সিস্টেম বুট ডিস্কেটের সাহায্যে বুট করতে হবে এবং বুটিং প্রসেসের সময় Command line mode সিলেক্ট করতে হবে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, C: ড্রাইভকে এনটিএফএস-এ কনভার্সনের জন্য টাইপ করতে হবে "Convert C:/fs:ntfs.
FAT 16 এবং FAT 32 এর মধ্যে পার্থক্য
FAT 16 FAT 32
বেশিরভাগ ওএস এমএস-ডস উইন্ডোজ ৯৫, ৯৮, এনটি, ২০০০ ওএস/২ এবং ইউনিক্স এটিকে ব্যবহার করতে পারে। FAT ৩২ উইন্ডোজ ৯৫, ওএসআর২, উইন্ডোজ ৯৮ এবং উইন্ডোজ ২০০০-এ ব্যবহৃত হয়।
২৫৬ মে.বা-এর চেয়ে ছোট লজিক্যাল ড্রাইভের ক্ষেত্রে এই ফাইল সিস্টেম সবচেয়ে বেশি উপযোগী। ৫১২ মে.বা.-এর নিচে ড্রাইভকে ফ্যাট ৩২ সাপোর্ট করে না।
বিভিন্ন ডিস্ক কমপ্রেশন, যেমন Drive Space সাপোর্ট করে। ডিস্ক কমপ্রেশন সাপোর্ট করে না।
১) Static RAM বা ক্যাশ মেমোরী
২) Dynamic RAM
RAM এর পূর্ণ নাম (Random Access Memory)| ইহাকে আভ্যন্তরীন মেমরি বলে। কিন্তু ইহা অস্থায়ী অর্থাৎ বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে গেলে RAM সংরক্ষিত তথ্য সম্পূর্ণ ভাবে মুছে যায়। RAM অত্যন্ত সহজে তথ্য সংরক্ষণ করা যায় এবং সহজ ভাবেই র্যাম থেকে তথ্য মুছে দেয়া যায়। এজন্য RAM কে লিখন/পঠন মেমরিও বলা হয়ে থাকে।
বৈশিষ্ট্য -
o RAM উদ্বায়ী মেমরি।
o RAM প্রতিটি মেমরি স্থানের জন্য এক্সেস টাইম (Access time) বা নাগাল সময় সমান।
o সমান সুবিধায় র্যামে তথ্য সংরক্ষণ করা যায় এবং র্যাম থেকে তথ্য পঠন করা যায়।
RAM দুই ধরনের -
o স্ট্যাটিক RAM
o ডাইনামিক RAM
Static RAM (বা ক্যাশ Cache মেমরী) - মাইক্রোপ্রসেসরের কাজ ডাটা প্রসেস করা। এর যখন কোন ডাটার প্রয়োজন তখন সেই ডাটার এড্রেস মেমরি লোকেশন উল্লেখ করে তার জন্য অনুরোধ করে। একে আমরা বলি রিড অপারেশন। এই ডাটা প্রসেসের পর তার ফলাফলকে মেমরির কোথাও সংরক্ষণ করে রাখা হয়। কোথায় সংরক্ষণ করা হবে তা মাইক্রোপ্রসেসর উল্লেখ করে দেয়।
কম্পিউটারের গতি বা কার্যক্ষমতা নির্ভর করে প্রসেসর কত দ্রুত বিভিন্ন ডাটা মেনিপুলেট করতে পারে প্রধানতঃ তার উপর। একটু আগে আমরা দেখেছি ডাটা প্রসেসিং এর পুর্বে মাইক্রোপ্রসেসরকে মেমরী থেকে সে ডাটা পেতে হয় এবং প্রসেসিং এর পরে মেমরিতে তা সংরক্ষণ করতে হয়। এমনও হতে পারে যে ডাটা প্রসেস করতে মাত্র ২ টি ক্লক সাইকেলই যথেষ্ট। আবার এমনও দেখা যায় যে, ডাটা মেমরী থেকে পড়ে আনতে এবং তা আবার মেমরিতে জমা করতে ২০ টি ক্লক সাইকেল খরচ হয়ে যায়। এর কারণ হল সাধারণত যে মেমরি চিপগুলো (অর্থাৎ র্যাম) আমরা ব্যবহার করি তা ততটা দ্রুত গতি সমপন্ন হয় না। অর্থাৎ তারা মাইক্রোপ্রসেসর এর গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। এখানে উলে¬খ্য যে সাধারণ র্যাম-এর এক্সেস টাইম ৭০/৬০ ন্যানো সেকেন্ড।
ডাটা মাইক্রোপ্রসেসর-এর নিয়ন্ত্রণে আসা এবং তা জমা করার জন্য যে বিপুল সময়ের দরকার হয় তা আমরা অনেকখানি কমিয়ে ফেলতে পারি যদি আমরা ষ্ট্যাটিক র্যাম বা ক্যাশ মেমরী ব্যবহার করি। ক্যাশ মেমরি থাকে মাইক্রোপ্রসেসর এবং প্রধান মেমরি-এর মাঝামাঝি। ক্যাশ মেমরি সাধারণত আকারে ছোট, দামে বেশি এবং বেশ দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়। বাজারে বর্তমানে যে ক্যাশ মেমরি পাওয়া যায় তার এক্সেস টাইম ১৫ ন্যানোসেকেন্ড-এর মত। বাজারে বিভিন্ন আকারের (৫১২ কিলোবাইট থেকে ৬ মেগাবাইট) ক্যাশ মেমরি পাওয়া যায়।
ক্যাশ মেমরি দুই ধরনের হয় -
• ইন্টারন্যাল ক্যাশ মেমরি - এটা সিপিইউ-এর ভিতরে অবস্থিত। ইহাকে এল-১ (লেভেল-১) ক্যাশ মেমরি বলে। এর আকার ৫১২ কিলোবাইট পর্য্যন্ত হতে পারে।
• এক্সটারনাল ক্যাশ মেমরি (এল-২,এল-৩ মেমোরী) - এটা মাদারবোর্ডে বসানো থাকে। ইহাকে এল-২ (লেভল-২) ক্যাশ মেমরি বলে। এর আকার ৫১২ থেকে ২০০০ কিলোবাইট পর্য্যন্ত হতে পারে। কোন কমিপউটারে এক্সটারনাল ক্যাশ মেমরি থাকলে মাইক্রোপ্রসেসর রিড রিকোয়েস্ট ইস্যু করার সাথে সাথে ক্যাশ মেমরি থেকে সেই ডাটা দ্রুত মাইক্রোপ্রসেসর পৌঁছাতে পারে। বর্তমানে ডাবল ও কোয়াড কোর প্রসেসরে ১ -২ মেগাবাইট এল-৩ (লেভেল-৩) ক্যাশ ব্যবহৃত হচ্ছে।
এখানে উল্লেখ্য যে মাইক্রোপ্রসেসর যে ডাটার জন্য অনুরোধ করলো তা ক্যাশ-এ না থাকে তাহলে আবার মেইন মেমরি থেকে পড়ে নিতে হবে এবং এতে করে সেই আগের মতই অনেক সময়ের অপচয় হবে। তাহলে দেখা যাচেছ মাইক্রোপ্রসেসর-এর কখন কোন ডাটা প্রয়োজন হবে তা আগে থেকেই আমাদের জানতে হবে এবং সেইমত সেগুলোকে ক্যাশ-এ এনে রাখতে হবে। প্রকৃতপক্ষে এর উপরই নির্ভর করবে ক্যাশ-এর কার্যকারিতা এবং কর্মক্ষমতা। আমরা জানি কমিপউটারের প্রোগ্রাম হল কতক গুলো নির্দেশনা বা ইন্সট্রাকশন এর সমষ্টি। প্রোগ্রামগুলো যতক্ষণ ধরে চলে তার অধিকাংশ সময়ই ব্যয় হয় বিশেষ কতগুলো ইন্সট্রাকশন কে সমপাদন করার জন্য। এই ইন্সট্রাকশন গুলো বিভিন্ন ধরনের লুপ হতে পারে বা হতে পারে কিছু ছোট প্রোসিডিওর বা ফাংশন , যারা একে অপরকে সম্পাদন করছে বার বার । এই ইন্সট্রাকশন গুলো সাধারণত মেমরিতে পাশাপাশি অবস্থান করে। প্রোগ্রাম-এর এই ধর্মকে বলা হয় লোকালিটি অব রেফারেন্স। এখন মাইক্রোপ্রসেসর যখন কোন বিশেষ ইন্সট্রাকশনের উপর কাজ করছে তখন যদি আমরা ঐ ইন্সট্রাকশন এবং তার সাথে সমপর্ক যুক্ত অন্যান্য তথ্যকে ক্যাশ-এ এনে রেখে দেই তা হলে মাইক্রোপ্রসেসর বার বার ক্যাশ থেকেই তা পড়তে পারবে, দুরের কম গতি সমপন্ন মেইন মেমরি থেকে পড়তে হবে না। এতে করে অল্প সময়ে অনেক কাজ করা সম্ভব হবে। এখন ধরা যাক ক্যাশ মেমরি তথ্য দ্বারা পরিপুর্ণ এবং এই অবস্থায় মাইক্রোপ্রসেসর এমন কিছু তথ্য চাইল যা ক্যাশ-এ নাই। সেক্ষেত্রে মেইন মেমরি থেকে তা পড়ে মাইক্রোপ্রসেসরকে সাপ্লাই দিতে হবে এবং আগের মত এই তথ্য এবং তার আশে পাশের কিছু তথ্য (ডাটা বার ইন্সট্রাকশন) এনে ক্যাশ-এ রাখবে এই আশাতে যে মাইক্রোপ্রসেসর একটু পরেই আবার এখান থেকে তথ্য চাইবে। প্রশ্ন হলো পরিপুর্ণ ক্যাশ-এর কোন তথ্য টুকু মুছে ফেলে আমরা নতুন তথ্য রাখবো। এক্ষেত্রে বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করা হয়। আমরা লক্ষ্য করবো ক্যাশ-এ অবস্থিত তথ্য-এর কোন অংশটুকু সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা হচেছ না। যে অংশটুকু সবচেয়ে বেশি সময় অব্যবহৃত আছে তাকে আমরা বাদ দেব বা মুছে ফেলব (অবশ্যই প্রধান মেমরিতে একটা কপি রাখতে হবে)। এই পদ্ধতিকে বলা হয় এলআরইউ (LRU= Least Recently Used replacement algorithm)|
বর্তমানে যত নতুন নতুন মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি হচেছ সেগুলোতে বেশি বেশি করে ইন্টারন্যাল ক্যাশ ব্যবহার করা হচেছ তাদের পারফরমেন্স বৃদ্ধির জন্য। অনেক মাইক্রোপ্রসেসরে আবার ইন্সট্রাকশন এবং ডাটা এর জন্য আলাদা ক্যাশ ব্যবহার করা হচেছ। যেমন মটোরোলা -৬৮০৪০-এ ৪ কিলোবাইট করে ইন্সট্রাকশন ও ডাটা ক্যাশ রয়েছে। পাওয়ার পিসি ৬০৪ এর ইন্সট্রাকশন ডাটা ক্যাশ প্রতিটিই ১৬ কিলোবাইট। ইন্টারনাল ক্যাশ-এ তো আমরা হাত দিতে পারবো না। তবে এক্সটারনাল ক্যাশ-এর পরিমাণ বাড়িয়ে আমরা আমাদের পিসির কর্মদক্ষতা কিছুটা হলেও সাফল্যজনকভাবে বাড়াতে পারি।
বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটিক RAM-
• ASRAM (Asynchronous SRAM) - ইহাই সেই সনাতন এল-২ ক্যাশ মেমোরী যার access rate (20ns,15ns,12ns) DRAM এর চেয়ে বেশী।
• SSRAM/SBSRAM (Synchronous-Burst SRAM) - এই এল-২ ক্যাশ মেমোরীর access rate তুলনামুলক কম ( 8.5 &12ns) । ইহা 60-66 MHz স্পীডযুক্ত মাদারবোর্ডে দ্রূত কাজ করে।
• PBSRAM(Pipeline Burst SRAM)- ইহাই সবচেয়ে দ্রূতগতির ক্যাশ মেমোরী (access rate 4.5 ns to 8 ns) । ইহা 75 MHz স্পীডযুক্ত মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে।
(Dynamic RAM ) - ইনপুট ডিভাইস হতে আগত সব তথ্য রামে এসে জমা হয় এবং প্রক্রিয়াজাত হওয়ার জন্য অবস্থান করে। সিপিইউ অতি সহজে র্যাম থেকে তথ্য বা নির্দেশ নিয়ে ফলাফল তৈরি করে সংরক্ষণের জন্য আবার র্যামে পাঠায়। র্যামে তথ্য জমা থাকে অস্থায়ী ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে। এ জন্য র্যামে সব তথ্য থাকে অস্থায়ীভাবে। মাইক্রোপ্রসেসর সরাসরি র্যামের জন্য অস্থায়ী ঠিকানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কাজ করে বা তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে। এখানে সরাসরি (Random) তথ্য সংগ্রহ করার জন্য যাওয়া যায় (Access) বলে একে Random Access বলা হয়। কম্পিউটারের স্যুইচ বন্ধ করলে বা কোন কারণে বিদ্যুৎ প্রবাহ বিঘ্ন ঘটলে র্যামে সঞ্চিত সকল তথ্য বা প্রোগ্রাম মুছে যায়। মাদার বোর্ডে র্যামগুলো স্লটে ব্যাংক আকারে বসানো থাকে। বাজারে বর্তমানে সর্বোচচ ৬৪ -১২৮ মেগা-বাইট (MB-Mega Byte) মানের র্যাম পাওয়া যায়। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত র্যাম লাগিয়ে কম্পিউটারে অস্থায়ী মেমোরি বাড়ানো যায়। রামের ধারন ক্ষমতা বেশি হলে উন্নতর এপ্লিকেশন প্রোগ্রাম (যেমন- উইন্ডোজ এক্সপি, ফটোসপ ইত্যাদি ) নিয়ে দ্রূত কাজ করা যায়। র্যামের ক্ষমতা বেশি হলে কাজের গতি ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে উইন্ডোজ ভিত্তিক উন্নত প্রোগ্রাম চালনা করতে বেশী র্যাম এর প্রয়োজন হয়।
মেমোরী ষ্ট্রাকচার এবং প্যাকেজ ষ্টাইল - এক্সপানশন ডিভাইসের উপর ভিত্তি র্যামের ষ্ট্রাকচার বিভিন্ন রকমের হয় । নিম্নে বিভিন্ন প্যাকেজের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো -
o SIMM (Single In-Line Instruction Module) - ৩০ পিন বিশিষ্ট সিম প্যাকেজ ৮-বিট ডাটা ট্রান্সফার করে এবং ৪ মে:বা: র্যাম ধারন করতে পারে। ৭০ পিন বিশিষ্ট সিম প্যাকেজ ৩২-বিট ডাটা ট্রান্সফার কবে এবং ৩২ মে:বা: এবং তদোর্ধ র্যাম ধারন করতে পারে। বর্তমানে ইহার ব্যবহার নাই বললেই চলে।
o DIMM (Double In-Line Instruction Module) - ইহা ১৬৮ (উভয় পার্শ্বে ৮৪) পিন বিশিষ্ট এবং ৩২-৬৪ বিট ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। ইহা ৫১২ মে:বা: এবং তদোর্ধ র্যাম ধারন করতে পারে। বর্তমানে ইহাই সবচেয়ে বেশী প্রচলিত র্যাম।
o DIP (Dual In-Line Package) - বর্তমানে ইহার ব্যবহার খুব বেশী হয়না। তবে কোন কোন ভিডিও বোর্ডে ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ইহা বড় সাইজের বলে বেশ জায়গা দখল করে।
o SIP (Single In-Line Package) -এই ধরনের আইসি আর ব্যবহার হয় না বললেই চলে । ২৮৬ এবং ৩৮৬ মডেলের কমপিউটারের সময় এর আবির্ভাব হয়।
o SOJ (Single Outline "J" Lead)- ইহাও পুরাতন (২৮৬ এবং তার পুর্বের মডেলের) পিসিতে ব্যবহার হতো।
o TSOP (Thin, Small Outline Package)- ইহা ছোট এবং পাতলা বিধায় নোটবুক এবং পিসি কার্ডে ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্ন ধরনের ডাইনামিক RAM (Dynamic RAM )
• FPM DRAM (Fast Page Mode DRAM)- ইহা সাধারন DRAM এর মতই - আজকাল শুধু ভিডিও বোর্ডে এই র্যাম ব্যবহার হচ্ছে।
• EDO RAM (Extended Data Output RAM) - ইহা DRAM এর উন্নত সংস্করন। ইহা সাধারন DRAM এর চেয়ে ১৫-৩০% ভাল পারফামেন্স দেয় , তবে এজন্য EDO সাপের্টিং মাদারবোর্ড তথা চিপসেট লাগবে। ইন্টেলের Triton ছাড়াও আধুনিক অন্যান্য চিপসেট এই র্যাম সাপোর্ট করে।
• BEDO RAM (Burst Extended Data Output RAM) - ইহা EDO DRAM এর উন্নত ও শক্তিশালী ভার্সন । কিন্তু ইহা VIA chipset ছাড়া অন্য কোন চিপসেট সাপোর্ট করে না এবং ৬৬ মেহাহার্জ এর উপরে বাস সাপোর্ট করে না।
• SDRAM (Synchronous DRAM)- ইহা Pipeline Burst mode সাপোর্ট করে বলে ইহা দ্রূত গতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে ( Access rate 10 ns এবং ডাটা ট্রান্সফার রেট 100MB/Sec )। তদুপরি ইহা ১০০ মেগাহার্জ বাস স্পীড সম্পন্ন মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে। ফলে ইহা সবচেয়ে জনপ্রিয় ডি-র্যাম।
• CDRAM (Cached DRAM) - DRAM এবং Cache মেমোরী একই আইসিতে তৈরী বলে এল-২ ক্যাশ প্রয়োজন হয় না। ইহা EDRAM এর চেয়ে ১৫-২০% বেশী দ্রূত কাজ করে।
• VDRAM(Video DRAM) - ইহা ভিডিও মেমোরীতে সাধারন ডি-র্যামের চেয়ে ভাল পারফরমেন্স দেখায়। বিশেষ করে উচ্চ রিজলিউশন ( ১০২৪ 1024´ ৭৬৮ বা তার উর্দ্ধ) যুক্ত সিষ্টেমে।
• WDARM(Windows DRAM)- ইহা একটি ভিডিও ভিত্তিক মেমোরী ডিভাইস। ইহার ডাটা ট্রান্সফার রেট 640MB/Sec. ( প্রায় ৫০% বেশী) এবং দামেও সস্তা।
• Rambus DRAM : ইহা Rambus কোম্পানীর তৈরী নতুন পজম্মের বিশেষ ধরনের মেমোরী আর্কিটেকচার , যা Rambus Channel নামে পরিচিত। ইহা 500MB/Sec গতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে । কিন্তু ইহা বর্তমানে প্রচলিত মেমোরী আর্কিটেকচার সাপোর্ট করে না বলে ইহার ব্যবহার সীমিত ।
• DDR DRAM: আরডি র্যামের বিস্তর সমস্যা উপলব্ধি করে প্রসেসর নির্মাতা এএমডি এবং চিপসেট নির্মাতা কোম্পানি ভায়া বিকল্প পদ্ধতি হিসাবে এসডি র্যামের দ্বিতীয় প্রজন্ম ডিডিআর (ডাবল ডাটা রেট) এসডির্যাম তৈরী করেছে। এটি যদিও এসডির্যামের একটি উন্নত সংস্করণ তথাপি এটি আরডির্যামের প্রায় অনুরূপ ব্যান্ডউইডথ তথা ডাটা প্রবাহ প্রদান করতে সক্ষম । এসডির্যাম-টুতে প্রত্যেক ক্লক সাইকেলের উভয় অংশে (উত্থান ও পতন) ডাটা আদান- প্রদান সম্ভব হবে বলে এটিকে ডাবল ডাটা রেট (ডিডিআর) বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বর্তমানে কোর প্রসেসরের সাথে ডিডিআর র্যাম অবিচ্ছেদ্য হার্ডওয়ার হিসাবে বাজার জাত করা হচ্ছে।
স্থায়ী স্মৃতি- রম (ROM)
পূর্ণ নাম রিড অনলি মেমরি (Read Only Memory) । ইহা স্থায়ীভাবে উপাত্ত/তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত অ-উদ্বায়ী অর্ধপরিবাহী মেমরি। বর্তমানে এমন অনেক ধরনের রম উদ্ভাবিত হয়েছে- যাতে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষিত তথ্য মুছে আবার নতুন তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।
রম (ROM) এর বৈশিষ্ট্য -
• সাধারণত রমে নতুন উপাত্ত/তথ্য লিখা হয় না। কিন্তু যখনই প্রয়োজন রম থেকে উপাত্ত/তথ্য পড়ে নেয়া হয়।
• রম উদ্বাযী নয়। বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে গেলে রমে সংরক্ষিত উপাত্ত/তথ্য মুছে যায় না।
• সচরাচর পরিবর্তনযোগ্য তথ্য/উপাত্ত রমে সংরক্ষণ করা হয় না।
• সাধারণ রমকে একবার প্রোগ্রাম করা হলে তাতে আর কোন ধরনের পরিবর্তন সাধন সম্ভব নয়। হবে, তথ্য মুছে পুনঃ পুনঃ প্রোগ্রাম করা যায় এমন রমও বয়েছে।
• রমকে সাধারণত ফ্যাক্টরিতেই প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে।
চার ধরনের রমের নাম নিচে দেয়া হল -
• এমরম (MROM-Mask Programmable Read Only Memory)
• পিরম (PROM-Programmable Read Only Memory)
• ইপিরম (EPROM-Erasable Programmable Read Only Memory)
• ইইপিরম (EEPROM-Electrically Programmable Read Only Memory)
এম রমের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য -
1. ফটোগ্রাফিক মাস্ক ব্যবহার করে প্রোগ্রামের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। সাধারণত ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী ফ্যাক্টরিতেই এমরম প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে।
2. এমরম বেশ ব্যয় বহুল। হবে একই ধরনের প্রোগ্রাম সম্বলিত অনেক এমরমের ব্যবহার অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।
3. একবার প্রোগ্রাম করা হয়ে এমরমকে পুনঃ প্রোগ্রাম করা যায় না।
ইপিরমের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যঃ
• প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবহারকারী নিজেই ইপিরমে উপাত্ত/ তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে। সংরক্ষিত তথ্য মুছে ইপিরামকে পুনঃ প্রোগ্রাম করা সম্ভব।
• ইপিরম উদ্বায়ী নয় অর্থাৎ প্রোগ্রামকৃত তথ্য কোন অবস্থায়ই মুছে যায় না।
• ইপিরম তৈরিতে সাধারণত ফিল্ড একেই ট্রানজিস্টর (FET-Field Effect Transistor) ব্যবহার করা হয়।
• ইপিরম প্রোগ্রামের জন্য সাধারণত বিশেষ ধরনের বর্তণী প্রয়োজন হয়।
• সাধারণত অতি বেগুণী রশ্নি ব্যবহারের মাধ্যমে ইপিরমে সংরক্ষিত তথ্য মুছে দেয়া হয়।
ইইপিরমের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যঃ
• ব্যবহারকারী প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইইপিরমে উপাত্ত সংরক্ষণ করতে পারেন।এতে সংরক্ষিত তথ্য ইলেকট্রিক্যাল পদ্ধতিতে মুছে পুনঃ পুনঃ প্রোগ্রাম করা যায়।
• প্রোগ্রাম করার সময় ইইপিরমকে সকেট থেকে খুলতে হয় না।
• ইইপিরম প্রোগ্রামিং এবং এতে সংরক্ষিত তথ্য মুছতে ইপিরমের তুলনায় অনেক কম সময় লাগে।
বায়োস রম - বায়োস হচেছ Basic Input Output System এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সহজ ভাষায় এটা হচেছ ইন্সট্রাকশনের সেট অর্থাৎ ( পিরম PROM-Programmable Read Only Memory) বা এক গুচছ নির্দেশ এবং কিছু তথ্য যা আপনার কম্পিউটারকে নির্জীব অবস্থা থেকে বুট করতে সাহায্য করে এবং কম্পিউটার কমপোনেন্ট সমূহের মধ্যে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করে। এই ইন্সট্রাকশন গুলো সাধারণত একটি রম চিপ এ মাদার বোর্ডে বিল্ট -ইন থাকে, যাকে বায়োস -চিপ বলে।
ফ্লাস বায়োস রম - Flash BIOS কি ? সাধারণ বায়োস রম হচ্ছে EP-ROM (Erasable Programmable)| এ থেকে সাধারণ ভাবে কেবল পড়াই যায়, তথ্য লেখা যায় না। তাই বিশেষ উপায় Ultraviolet Ray EP-ROM Writer ছাড়া এই বায়োস পরিবর্তনের কোন উপায় নেই। বায়োস চিপের আপডেট সহজ করতে EEP-ROM (Electrically Erasable Programmable ROM) নামের নতুন ধরনের রম চিপের প্রবর্তন করা হয়েছে যার ডাটা ইলেকট্রিকালী পরিবর্তন করা যায় এবং এটা বায়োস চিপের কোন স্থানান্তর করা ছাড়াই সম্ভব। এধরনের বায়োসেই Flash BIOS নামে পরিচিত। এতে বায়োস র্নিমাতা কোম্পানীর Update patch এর মাধ্যমে সহজেই বায়োস রমকে আপডেট, Bug fix, Enhancement ইত্যাদি করে নেয়া যায়। সহজে ডাটা করাপশনের ভয় থাকে বলে সাধারণ অবস্থায় একে বিশেষ জাম্পারের মাধ্যমে রাইট প্রোটেক্টেড রাখা হয়।
চিপসেট Chipsets
চিপসেট Chipsets হচ্ছে একগুচ্ছ চিপসের সমন্বয়, যেগুলো মাদারেবোর্ডে সংযোজীত অবস্থায় একসাথে কাজ করে। এগুলো একটি প্রডাক্ট হিসাবে বাজারজাত করা হয় এবং এর উপরে মাদারবোর্ডের মান নির্ভর করে। পারসোনোল কমপিউটারের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে চিপসেট তৈরী করা হয় তার নাম নিয়াট চিপসেট। ইহা ইন্টেল প্রসেসর ৮০২৮৬ -এর জন্য তৈরী করে 'চিপস এন্ড টেকনোলজী' কোস্পানী। এর পরে সিস, ভায়া সহ অনেক কোম্পাণী কর্তৃক অনেক চিপসেট তৈরী হতে থাকে কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রীয় যে চিপস তা হচ্ছে ইন্টেলের (ট্রাইটন চিপসেট)। ইহা চিপসেটের বাজারে বিপ্লব ঘটায় ফলে সব কোম্পানী এই চিপসেট তৈরী করতে থাকে।
এখানে মাদারবোর্ডে চিপসেট দেখা যাচ্ছে। নর্থব্রিজ চিপসেটটি হিটসিংক ও ফ্যান দ্বারা ঢাকা আছে। সাউথব্রীজ চিপটিও হিটসিংক দিয়ে ঢাকা।
প্রসেসরের গতি দ্রুত বাড়তে থাকার ফলে ইন্টেল পেন্টিয়াম প্রসেসরের জন্য নতুন যে চিপসেটের জন্ম হয় তা হচ্ছে নর্থব্রীজ ও সাউথব্রীজ নামের একজোড়া চিপসেট। নর্থব্রীজ সিপিইউ-এর সাথে দ্রুতগতি সম্পন্ন ডিভাইস যেমন প্রধান মেমোরী এবং গ্রাফিক্স কন্ট্রোলারের সংযোগ সাধন করে এবং সাউথব্রীজ অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্ব সম্পন্ন যেমন, ইথারনেট, ইউএসবি ও অডিও ডিভাইসের সাথে সংযোগ সাধন করে। ইহা যেহেতু প্রসেসর এবং বাহিরের ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ সাধন করে তাই সিস্টেমের পারফরমেন্সের জন্য ইহার ভুমিকা অশেষ।
ডায়াগ্রামের মাধ্যমে নথর্ব্রীজ ও সাউথব্রীজের সংগে সিপিইউ, এজিপি, রাম ও অন্যান্য ডিভাইসের সাথে সংযোগ -এর পথ/বাস দেখানো হলো। চিপসেটের সাথে সিপিইউ-এর মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের পথকে ফ্রন্টসাইড বাস বলা হয়।
মাদারবোর্ড ও চিপসেট প্রস্তুতকারক স্বাধীনভাবে তাদের পন্য উৎপাদন করে। বর্তমানে যে সমস্ত কোস্পানী চিপসেট তৈরী করে তারা হলো - NVIDIA, AMD, VIA Technologies, SiS, Intel and Broadcom. নিচে বাজারে বর্তমান ইন্টেল চিপসেটের তালিকা দেওয়া হলো -
• P35 Express (for Intel Core 2 Duo/Quad/Extreme)
• Intel G31 Express (supports DDR2, officially supports up to 1066 MHz System Bus)
• Intel G33 Express (supports DDR2 and DDR3)
• Intel G35 Express (supports only DDR2)
• Intel X38
• Intel X48
• Intel P43
• Intel G43
• Intel P45
• Intel G45
• (Q4 2008) Intel X58
• (Q3 2009) Intel PCH
ইনপুট ইউনিট/ডিভাইস Input unit/Device
ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে বাহির থেকে কমিপউটারে তথ্য সরবরাহ করা হয় এবং কার্য্য সমপাদনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে কিবোর্ড, মাউস, লাইট প্রেন্ট, ডিজিটাইজার, জয়স্টিক এবং ট্রাকবল, টাচস্কীন সমপর্কে আলোচনা করা হল :-
কিবোর্ড (Keyboard) - কমিপউটারের কী-বোর্ড এবং সাধারণ টাইপ রাইটারের কী-বোর্ড দেখতে প্রায় একই রকম এবং টাইপ করার পদ্ধতিও একই রকম। টাইপ রাইটারের কী-বোর্ডের বোতাম গুলো শুধুমাত্র অক্ষর টাইপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। পক্ষান্তরে, কমিপউটারের কী-বোর্ডের বোতামের সাহায্যে টাইপ করা ছাড়াও কমিপউটারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নির্দেশ প্রদান করা হয় এবং আরো নানা রকম কাজে ব্যবহার করা হয়। কী-বোর্ডের যে সকল বোতাম চেপে কোন অক্ষর বা বর্ণ টাইপ করা হয় না, কিন্তু অক্ষর বা বর্ণ বিন্যাসের কাজ এবং অন্যান্য ধরনের কাজ করা হয়, সে সব বোতামকে বলা হয় মডিফইয়ার কী (Modifier Key) - যেমন, শিফট (Shift), অপশন (Option), কমান্ড (command), কন্ট্রোল (Ctrl) ,অল্টার (Alt) ইত্যাদি বোতাম। কি বোর্ডে সাধারনতঃ ১০১ টি বোতাম থাকে, তবে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ষ্টার্ট মেনু সচল করার উপযোগী কীবোর্ডে ১০৪ টি কী থাকে। বর্তমানে ইন্টারনেট চালাবার উপযোগী আর এক ধরনের কিবোর্ডে আরও অতিরিক্ত কি সেট করা থাকে।
মাউস (Mouse) : মাউস হচেছ ক্যাবল (Cable) বা তারের সাহায্যে কমিপউটারের সঙ্গে সংযুক্ত ছোট একটি যন্ত্রাংশ। তারের প্রান্ত ধরে যন্ত্রটি ঝুলিয়ে ধরলে দেখতে অনেকটা ইঁদুরের মতো দেখায়। হয়তো সে জন্যই এর নাম হয়েছে মাউস। মাউসটি কমিপউটারের পাশে রাখা হয়। মাউসটি নাড়াচাড়া করলে কমিপউটারের পর্দায় একটি তীর (Arrow) নড়াচড়া করে। তীরটির গতিবিধি বা চলাচল টেবিলের উপর রাখা মাউস নাড়াচাড়া করে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং পর্দার তীরটিকে বিভিন্ন নির্দেশের (Command) উপর ক্লিক করে কমিপউটারকে নির্দেশ প্রদান করতে হয়। এ ছাড়া মাউসের সাহায্যে পর্দায় লিখিত বিষয়, গ্রাফ, ছবি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণসহ আরো নানা প্রকার কাজ করা যায়। প্রতিটি মাউসে দুইটি অথবা তিনটি বাটন থাকে- বাম বাটন, ডান বাটন এবং মধ্যবাটন। বিভিন্ন বাটন দ্বারা বিভিন্ন কাজ করা হয় - যেমন, স্ক্রীনে কোথাও মাউস রেখে ডান বাটন চাপলে একটি মেনু দেখা দেয়, যাকে কনটেকস্ট মেনু বলে। মাউস এর কয়েকটি ইভেন্ট আছে - সিংগল ক্লিক, ডাবল ক্লিক, ট্রিপল ক্লিক এবং ক্লিক ও ড্রাগ। যেমন, এমএস ওয়ার্ডে কোন টেকস্ট এর উপর ১ বার ক্লিক করে কারসর বসানো হয় ; ২ বার ক্লিক করলে একটি ওয়ার্ড সিলেক্ট হয় ; তিনবার ক্লিক করলে পুরা প্যারাগ্রাফ সিলেক্ট হয় ইত্যাদি। আবার ক্লিক ও ড্রাগ করে ইচ্ছেছমত যেকোন অংশ সিলেক্ট করা যায়।
জয়স্টিক এবং ট্রাকবল (Joystick and Trackball)- ভিডিও গেমস খেলতে এই ডিভাইসটি ব্যবহার হয়। ইহা দ্বারা মনিটর স্ক্রীনের বিভিন্ন জাগায় কারসারকে সহজে সরানো যায়। অনেক কিবোর্ডে ট্রাকবল সংযুক্ত করা আছে।
মডেম (Modem)- মডেম হচেছ Modulator/Demodulator এর সংক্ষিপ্ত রূপ । ইহা একটি ছোট আকারের যন্ত্র। যন্ত্রটি সিগারেটের প্যাকেটের মতো ক্ষুদ্রাকৃতি থেকে বইয়ের আকার পর্যন্ত হতে পারে। কমিপউটার মোডেম যন্ত্রের সাহায্যে টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করে থাকে। মোডেম যন্ত্রটি কমিপউটারের ভাষাকে টেলিফোনের ভাষায়(অর্থাৎ এনালগ সিগনালকে ডিজিটাল সিগনালে) এবং টেলিফোনের ভাষাকে কমপউটারের ভাষায় রূপান্তরিত করে তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করে থাকে। এ জন্য তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণকারী উভয় প্রান্তের কমিপউটারের সঙ্গেই মোডেম যন্ত্র থাকতে হয়। টেলিফোন লাইনের তারটি সংযুক্ত করতে হয় মোডেম যন্ত্রের সঙ্গে এবং মোডেম যন্ত্রের তারটি সংযুক্ত করতে হয় কমিপউটারের সঙ্গে। অর্থাৎ মোডেম যন্ত্রটি টেলিফোন লাইন এবং কমিপউটারের মাঝখানে অবস্থান করে।
স্ক্যানার Scanner =স্ক্যানার মুলত প্রচলিত ফটোকপিয়ার মেশিনের মত। কিন্তু এর ব্যবহারিক পরিমন্ডল আরো বিশাল। অফিস আদালতে স্ক্যানার ব্যবহৃত হয় দলিল পত্র সংরক্ষণে; শৌখিন বা পেশাদার ডিজাইনারের কাছে প্রয়োজন পরে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দৃশ্যাবলী বা মুল্যবান চিত্রকর্ম সংরক্ষণে; কিম্বা প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ছবির মানকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনে। পুরনো বা নতুন কোন বিশাল গ্রন্থের তথ্যাবলী পুনবায় টাইপ না করে স্ক্যানার (ওসিআর প্রোগ্রামের) মাধ্যমে সব তথ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে ও স্ক্যানার অত্যনত গুরূত্বপুর্ণ র্ভুমিকা রাখতে সক্ষম।
স্টোরেজ ডিভাইস :
শব্দটির অভিধানিক অর্থ হলো - যার মাধ্যমে তথ্যাদি সংরক্ষণ রাখা যায়। কমপিউটারের জন্মলগ্ন থেকেই এটি কমপিউটারের একান্ত সঙ্গী। এটা ছাড়া কমপিউটার কল্পনাই করা যায় না। সফটওয়্যার হলো কমিপউটারের প্রাণ, আর এই প্রাণ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরণের স্টোরেজ ডিভাইস। স্টোরেজ ডিভাইসের কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে হার্ডডিস্ক ও ফ্লপি ডিস্কের কথা। ৮৭ সালের আগ পর্যন্ত ৫.২৫ ফ্লপি ডিস্ক ও ১০-২০ মে.বা. হার্ডডিস্কের অধিপত্য ছিলো সমস্ত বিশ্বজুড়ে। তখন একটি ১.২ মে.বা.ফ্লপি ডিস্কেই অপারেটিং সিস্টেম, ওয়ার্ড প্রসেসর, স্প্রেডশীট প্রোগ্রাম ছাড়াও আরও কিছু বাড়তী ফাইল সংরক্ষণ করা যেতো। সে সময় কমপিউটার ব্যবহারকারী গণ তাদের ১২ মেগাহার্টজ স্পীডের কমপিউটারের একটি ১.২ মে.বা. ফ্লপি ডিস্ক ঢুকিয়ে কাজ করতে বড়ই গর্ব বোধ করতেন। পরবর্তীতে ৩.৫ " ফ্লপি ডিস্ক ও ১০০-১২০ মেগাবাইটের হার্ডডিস্কের আগমনে পুর্বের ডিভাইস গুলোর ব্যবহার কমে যায় এবং সেই সাথে শুরু হলো ব্যবহারকারীদের চাহিদা মেটাতে প্রোগ্রাম সমুহ উন্নত করার প্রক্রিয়া। অপারেটিং সিস্টেম, সেপ্রডশিট, ওয়ার্ড প্রসেসর, গ্রাফিক্স প্রোগ্রাম দখল করতে লাগালো মেগাবাইট জায়গা। ফলশ্র্রুতিতে কমপিউটার বিজ্ঞানীগণ ভাবতে শুরু করলেন কিভাবে স্টোরেজ ডিভাইস সমুহের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা যায়। তাদেরই গবেষণার ফলস্বরুপ আবিষ্কৃতি হলো নতুন নতুন সব ডিভাইস।
Hard Disk : হার্ডডিস্ক- কমপিউটারের স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে যেটির কথা সর্ব প্রথমে আসে সেটি হলো এই হার্ডডিস্ক। এটি মুলতঃ একটি ম্যাগনেটিক স্টোরেজ ডিভাইস যেখানে প্রোগ্রাম সমুহ সংরক্ষণ করে চালানো হয়। সময়ের সাথে সেগুলোর ধারণ ক্ষমতা কেবল বৃদ্ধিই পায়নি কারিগরী উন্নয়নও ঘটছে। এই ডিভাইসটির যাত্রা শুরূ হয়েছিল ২০ মে.বা.ধারণা ক্ষমতা নিয়ে। অথচ বর্তমানে তার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১০০০ গিগাবাইট পর্যন্ত।
Floppy Disk : ফ্লপি ডিস্ক : প্রথম থেকে এই ডিভাইসটি এখনও পর্যন্ত বিশ্বে স্ট্যান্ডার্ড স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে টিকে আছে। ডিভাইসটি প্রথম তৈরি করে সনি কর্পোরেশন। ডিস্কটিতে চুম্কীয় পদ্ধতিতে ডাটা স্টোর করা হয়। প্রথম অবস্থায় একটি ডিস্কের ধারণ ক্ষমতা ছিলো ৭২০ কি.বা. (ডবল ডেনসিটি)। বর্তমানে ডিস্ক সমুহের ধারণ ক্ষমতা ১.৪৪ মে.বা. (হাই ডেনসিটি)। আমাদের দেশে স্টোরেজ ডিভাইসমুহের মাঝে হার্ডডিস্কের পরেই এটির স্থান। শুরতে ৫ ইঞ্চি ব্যাসের ফ্লপি ব্যবহার হতো । বর্তমানে ৩.৫ ইঞ্চি ডিস্ক ব্যবহৃত হচ্ছে।
CD ROM : সিডিরম - ৩.৫ ডিস্কের পরেই বাজারে যে স্ট্যান্ডার্র্ড ডিস্কের আগমন ঘটে সেটি হলো এই সিডিরম। এটি একধরণের অপটিকাল স্টোরেজ ডিভাইস যার মধ্যে ৭২০ মে.বা. পর্যন্ত তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। তবে এর দুইটি বিরাট অসুবিধা রয়েছে। প্রথমতঃ সিডিরমে সংরক্ষিত তথ্য শুধুমাত্র পড়া যায় -তাতে কোন পরিবর্তন করা যায় না। দ্বিতীয়তঃ এর এক্সেস টাইম হার্ডডিস্কের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। এই স্টোরেজ ডিভাইসটি মুলতঃ সফটওয়্যার সরবরাহ ও মাল্টিমিডিয়া প্রোগ্রামসমুহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে স্ট্যান্ডার্ড ডিভাইস হিসেবে সিডিরম ড্রাইভ সকল কমপিউটারের সাথে যুক্ত হয়েছে।
Pen Drive : পেন ড্রাইভ - এর অন্য নাম ইউ,এস,বি ফ্রাশ ড্রাইভ। ইহা এক ধরনের ফ্লাশ মেমোরী ষ্টোরেজ ডিভাইস যা ইউ,এস,বি ইন্টারফেস-এর সাথে সমন্বিত থাকে। এই ড্রাইভ বার বার খোলা ও লাগানো যায় এবং এর তথ্য মুছে লেখা যায়। ইহা ফ্লপি ডিস্ক থেকে ছোট এবং ওজন খুব কম (৩০ গ্রামের নীচে)। বর্তমানে এর ধারন ক্ষমতা ৮ গিগাবাইট - দিন দিন এর ক্যাপাসিটি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে , তেমনি দাম কমছে। কোন কোন প্রস্তুতকারক ১০ বছরের ডাটা সংরক্ষনের ওয়ারেন্টি দিচ্ছে - এতে ১০ লক্ষ বার ডাটা লেখা ও মোছার সুযোগ পাওয়া যাবে। ইহা সহজে বহনযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য বিধায় ডাটা ট্রান্সফারের জন্য আগের আমলের ফ্লপি ডিস্কের পরিবর্তে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অপারেটিং সিস্টেম
অপারেটিং সিস্টেম কি ? অপারেটিং সিস্টেম (সংক্ষেপে ওএস) মূলতঃ একটি সফটওয়্যার প্রোগ্রাম। তবে ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশীট ও অন্যান্য প্রোগ্রাম থেকে এটি আলাদা। একে বলা হয় মাষ্টার কন্ট্রোল প্রোগ্রাম। কমপিউটার যখন অন করা হয় তখন বুট করার জন্য প্রয়োজন হয় অপারেটিং সিস্টেম। বুট করার পর কমপিডউটার বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটি পুরো মেশিনের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখে। ওএস পিসির হার্ডওয়্যার ও এপ্লিকেশন প্রোগ্রামের মধ্যে যোগাযোগের সেতু হিসেবে কাজ করে। আপনি যখন ওয়ার্ডের কোন ফাইল খুলছেন, ওএস সে মূহুর্তে হার্ড ডিস্ক থেকে ফাইলটি খুঁজে আপনার তুলে ধরছে। আবার যখন গান শুনছেন,অপারেটিং সিস্টেম মিউজিক ফাইলটি সাউন্ড কার্ডে প্রেরণ করছে-ফলশ্রুতিতে স্পিকার থেকে গান ভেসে আসছে। অনুরূপভাবে আপনি যখন গেম খেলছেন তখনও সেই অপারেটিং সিস্টেমই বর্ণময় জটিল থ্রিডি গ্রাফিক্সকে ডিসপ্লে কার্ডে প্রেরণ করছে। এক কথায় কমপিউটারে আপনি যাই করছেন তাই নিয়ন্ত্রীত হচেছ অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা ।
অপারেটিং সিস্টেম কতটা জরুরী - ধরূন আপনার পিসিতে কোন অপারেটিং সিস্টেম নেই। এমতাবস্থায় ওয়ার্ডপ্রসেসর বা ফটোশপের মত প্রোগ্রাম গুলো কি কাজ করতে পারবে ? নিশ্চয় নয়। অথচ এই এপি¬কেশন প্রোগ্রামগুলোর ভেতরে যদি অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজনীয় কোড থাকত,তাহলে কিন্তু এরা নিজেরাই কাজ করতে পারতো। যেমন কীবোর্ড থেকে অক্ষর বোঝা,মনিটরে তা প্রদর্শন,হার্ডডিস্ক এক্সেস করে ফাইল পড়া বা লিখা প্রভৃতি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ইন্সট্রাকশন কোড যদি ওয়ার্ডপ্রসেসরে অন্তর্ভূক্ত করা হতো তাহলে এটি উইন্ডোজের সাহায্য ছাড়াই তার কাজগুলো করতে পারতো। বলাই বাহুল্য এভাবে বিভিন্ন এপ্লিকেশন প্রোগ্রামে যদি অপারেটিং সিস্টেম থাকত তাহলে প্রোগ্রামের সাইজ যেমন বেড়ে যাবে তেমনি একজন প্রোগ্রামারকেও অপারেটিং সিস্টেম তথা পিসির যাবতীয় হার্ডওয়্যার সমপর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হতো-যা মোটেই বাস্তব সম্মত নয়। বাস্তব অবস্থা হলো বিভিন্ন এপ্লিকেশন প্রোগ্রাম যেমন ফটোশপ বা ওয়ার্ড প্রসেসরের ভেতরে কেবল ঐ নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের জন্য প্রয়োজনীয় কোডগুলোই লিখে দেওয়া হয়, এর বেশি কিছু নয়।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম Windows Operating System
মাইক্রোসফটের কর্ণধার বিল গেটস সাহেব (যিনি আজকের বিশ্বের সবচেয়ে ধণী ব্যাক্তি) গত শতাব্দির আশির দশকের প্রথম দিকে আইবিএম পারসোনাল কমপিউটারের জন্য সহজবোধ্য ও সরল একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরী করে যথেষ্ট যশ, সম্মান ও পয়সা কামাই করেন। এর নাম ডস বা ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু ইহা অক্ষর ভিত্তিক হওয়ার কারনে সাধারন মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা লাভে ব্যর্থ হয়। ইতিমধ্যে এপেল কাম্পানী তাদের ম্যাকেনটশ কমপিউটারের জন্য ইউজার ফ্রেন্ডলি ও সহজ অপারেটিং সিস্টেম অপারেটিং চালু করলে বাজারে হৈছে পড়ে যায় এবং তাদের ব্যবসা মার খেতে থাকে। তাই ১৯৮৪ সালে তারাও চিত্র ভিত্তিক ইউজার ফ্রেন্ডলি চালু করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।
১৯৮৫ সালের দিকে উইন্ডোজ ১.০ বাজারে এটি ছিল ম্যাক প্রযুক্তির গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি। কিন্তু মাইক্রোসফটের এক্সিকিউটিভরা যে ধরনের সাড়া আশা করেছিলেন তা পেতে ব্যর্থ হন। উইন্ডোজ সাফল্য লাভ করে আপগ্রেড ভার্সন উইন্ডোজ ৩.১-এর মাধ্যমে, যার প্রবর্তন করা হয় ১৯৯২ সালে এবং উইন্ডোজ ৯৫ যার আগমন হয় ১৯৯৫ সনে। উইন্ডোজ ৩.১-এর ওপর উইন্ডোজ ৯৫ ছিল এক যুগান্তকারী আপগ্রেড। সেই যে শুরু তার পর থেকে তদেরকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পরে এক নিত্য নতুন ও যুগোপোযোগী অপারেটিং সিস্টেম উপহার দিয়ে চলেছে। আর এর বিক্রীর অর্থে আজ বিল গেটস বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধণী। এর পর উইন্ডোজ ৯৮, এনটি, ২০০০, এমই, এক্সপি এবং সর্বশেষ উইন্ডোজ ভিসতার মাধ্যমে অপারেটিং সিস্টেমের বাজারের প্রায় সবটাই দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে।
উইন্ডোজ বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে ব্যবসা সফল অপারেটিং সিস্টেম। যদিও এর অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, কিন্তু বিল গেটস এবং মাইক্রোসফটের অসাধারণ সফল ব্যবসায়িক নীতি একে ভীষণ জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমে রূপ দিয়েছে এবং এর ফলে প্রোগ্রামাররা কেবল উইন্ডোজের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করতে শুরু করায় অন্য অপারেটিং সিস্টেমগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। ১৯৯৭ সালের হিসাব বাজারের প্রায় ৮৬.৩ ভাগ দখলই মাইক্রোসফটের। সবচেয়ে ব্যবসা সফল অপারেটিং সেস্টেম হিসেবে উইন্ডোজ সিরিজের ওএস গুলোর নাম করলেও মাইক্রোসফটের প্রায় সব সফটওয়ারই বাগযুক্ত রিলিজের অভিযোগে অভিযুক্ত।
উইন্ডোজের বিভিন্ন ভার্শন :-
1. উইন্ডোজ ৩.১ - এপ্রিল ১৯৯২
2. উইন্ডোজ এনটি - আগস্ট ১৯৯৩
3. উইন্ডোজ ৯৫ - আগস্ট ১৯৯৫
4. উইন্ডোজ ৯৮ - জুন ১৯৯৮
5. উইন্ডোজ ২০০০ - ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০০
6. উইন্ডোজ এমই (মিলেনিয়াম এডিশন) - ১৯ জুন ২০০০
7. উইন্ডোজ এক্সপি (এক্সপেরিয়েন্স) - ২৫ অক্টোবর ২০০১
8. উইন্ডোজ ভিসতা – ৩০ জানুয়ারী ২০০৭
9. উইন্ডোজ ৭ সেভেন - ২২ অক্টোবর ২০০৯
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ক্রমবিকাশ - Chronology of Windows OS
নভেন্বর ১৯৮৩ : নিউইয়র্ক শহরের প্লাজা হোটেলে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন আইবিএম কম্পিউটারের জন্য নতুন প্রজন্মের অপারেটিং সিস্টেম মাইক্রোসফট উইন্ডোজের ঘোষণা দেয় যা গ্রাফিক্স ইন্টারফেস এবং একাধিক পরিবেশে কাজ করতে সক্ষম।
• নভেম্বর ১৯৮৩ : উইন্ডোজ ১.০ বাজারে ছাড়া হয।
• অক্টোবর ১৯৮৮ : ডেভিড কাল্টার মাইক্রোসফটে যোগদান করে তার আগের ডিজিটালের সহকর্মীদের সাথে এনটির জন্য কাজ শুরু করেন।
• জুন ১৯৮৯ : চাক হুইটমারের নেতৃত্বে একটি দল এনটির গ্রাফিক্সের কাজ শুরু করেন। প্রথমত দলটি সি++ দ্বারা কোড লেখা শুরু করলেও পরবর্তীতে কার্যদক্ষতার করণে সি দ্বারা কোড লেখা হয়।
• জুলাই ১৯৮৯ : এনটি টিমের তৈরি ইন্টেল i860 প্রসেসর সমৃদ্ধ একটি সিস্টেমে প্রথমবারের মত এনটির কিছু অংশ রান করানো হয়।
• জানুয়ারি ১৯৯০ : বিল গেটস উচু শ্রেণীর ডিজাইনারদের সাথে আলোচনায় ইন্টেলের ৩৮৬+ প্রসেসরে এনটি রান করানোর গুরুত্ব ব্যক্ত করেন এবং ইন্টেল i860 প্রসেসরের বদলে নতুন রিস্ক প্রসেসরের কথা বলেন।
• মে ১৯৯০ : উইন্ডোজ ৩.০ অবমুক্ত করা হয়। এতে উন্নত প্রোগ্রাম ম্যানেজার ও আইকন সিস্টেম , নতুন ফাইল ম্যানেজার, ১৬ কালার সাপোর্ট এবং উন্নত ও দ্রুতগতির অপারেশন অন্তভুক্ত হয়। এক বছরেই এর ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়।
• মার্চ ১৯৯১ : মাইক্রোসফট তার অনেক সহযোগীদের কাছে এনটির কিছু বিষয়াদি প্রকাশ করেন।
• ৮ মে ১৯৯১ : এন রিভার্সিতে প্রথমবারের মত একটি ডস প্রোগ্রাম (গেম) চালানো হয়।
• জুন ১৯৯১ : এনটিতে প্রথম উইন্ডোজ প্রোগ্রাম ওয়ার্ড রান করানো হয়।
এপ্রিল ১৯৯২ : উইন্ডোজ ৩.১ মুক্তি পায়। দুমাসে ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয় এবং ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এক নম্বর অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে প্রধান্য বজায় রাখে।
• অক্টোবর ১৯৯২ : এনটির প্রথম বেটা ভার্সন বাজারে ছাড়া হয়
• নভেম্বর ১৯৯২ : উইন্ডোজ এনটির জন্য প্রথম উইন্ডোজ ৩২ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট মুক্তি পায়।
আগস্ট ১৯৯৩ : অবশেষে উইন্ডোজ এনটি ৩.১ মুক্তি পায়।
• অক্টোবর ১৯৯৩ : মাইক্রোসফট এনটি ৩.১ এর জন্য প্রথম প্যাচ (Patch) প্রকাশ করে যেখানে ৯০ টিরও বেশী বাগের সমাধান দেয়া হয়েছে।
• ডিসেম্বর ১৯৯৩ : মাইক্রোসফট ও মটোরোলা যৌথভাবে পাওয়ার পিসি প্লাটফর্মের জন্য উইন্ডোজ এনটিকে ছাড়ার ঘোষণা দেয়। প্রায় ৩ লাখ কপি এনটি বিক্রি হয়।
• আগস্ট ১৯৯৪ : এনটির প্রথম আপগ্রেড (৩.৫) প্রকাশ করা হয়। উইন্ডোজ এনটির জন্য ৩২ বিটের ওয়ার্ড ও এক্সেল যুক্ত অফিসের প্রথম ভার্সন মুক্তি পায়। ব্যাক অফিসের কথাও ঘোষণা দেয়া হয়।
• ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ : প্রথমবারের মত পাওয়ার পিসি সমৃদ্ধ সিস্টেমে এনটি চালানো হয়।
• মে ১৯৯৫ : উইন ৯৫ এর জন্য তৈরি করা এপ্লিকেশন যাতে এনটিতে রান করতে পারে সেজন্য এনটির গুরুত্বপূর্ণ আপডেট (৩.৫১)- এর ঘোষণা দেয়া হয়।
• আগস্ট ১৯৯৫ : উইন্ডোজ ৯৫ প্রকাশ করা হয। এটিই উইন্ডোজের প্রথম ভার্সন যেখানে এমএস-ডসের প্রয়োজন নেই এবং ব্যবহারবিধি খুবই সহজ সরল। এতে টিসিপি/আইপি, ডায়াল আপ নেটওয়ার্কিং ও বড় ফাইল নেমের সুবিধা প্রদান করা হয়।
• সেপ্টেস্বর ১৯৯৬ : মাইক্রোসফট ঘোষণা করে যে নতুন ভার্সন এনটি ৫.-এ ৬৪ বিটের সাপোর্ট যুক্ত হবে।
• ডিসেম্বর ১৯৯৬ : পাওয়ার পিসিতে এনটির সাপোর্ট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়।
• সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ : মাইক্রোসফট পিডিসিতে এনটি ৫.০ এর প্রথম বেটা প্রকাশ করে।
জুন ১৯৯৮ : উইন্ডোজ ৯৮ প্রকাশ করা হয়। এতে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৪ কে বিল্টইন হিসেবে রাখা হয়।
• এপ্রিল ১৯৯৯ : উইন্ডোজ ২০০০ এর বেটা ৩ মুক্তি পায়।
• নভেম্বর ১৯৯৯: উইন্ডোজ ২০০০ রিলিজ ক্যান্ডিডেট ৩ (RC3) আমেরিকায় প্রকাশ করা হয়।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০০ : উইন্ডোজ ২০০০-এর মুল ভার্সন প্রকাশ ।
• ১৫ জুন ২০০০ : উইন্ডোজ সিই ৩.১। ইহা বেশী সংখ্যক ভাষা সাপোর্ট করে এবং ইহার মাল্টিমিডিয়া সক্ষমতা অধীক।
১৯ জুন ২০০০ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এমই-এর ফাইনাল ভার্শন বাজার জাত করে।
• জুলাই ২০০০ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ এর সার্ভিস প্যাক-১ বাজারে ছাড়ে।
• ১৬ মে ২০০১ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ এর সার্ভিস প্যাক-২ বাজারে ছাড়ে।
২৫ অক্টোবর ২০০১ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি বাজারে ছাড়ে। অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এনটি ও ২০০০ -এর কাঠামোতে তৈরী হলেও অন্য যে কোন ভার্শনের সাথে সামঞ্জস্য পুর্ন।
• আগষ্ট ২০০২ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ -এর সার্ভিস প্যাক-৩ বাজারে ছাড়ে।
• সেপ্টেম্বর ২০০২ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি- এর সার্ভিস প্যাক-১ বাজারে ছাড়ে
• ৭ নভেম্বর ২০০২ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর ট্যাবলেট পিসির সংস্করন বাজার জাত করে।
• ২৩ জুন ২০০৩ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ মোবাইল ২০০৩ ভার্শন বাজার জাত করে।
• ৩০ সেপ্টেম্বর : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর মিডিয়া সেন্টার সংস্করন বাজার জাত করে।
• ৯ জুলাই ২০০৪ : মাইক্রোসফট পামটপ কমপিউটারের জন্য উইন্ডোজ সিই ৫.০ সংস্করন বাজার জাত করে।
• ১৮ আগষ্ট ২০০৪ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর সার্ভিস প্যাক-২ বাজারে ছাড়ে।
• ফেব্রুয়ারী ২০০৫ - মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর ষ্টার্টার এডিশন কম দামে ইন্দোনেশীয়া ও মালয়েশিয়ার বাজারে ছাড়ে।
• ২৫ এপ্রিল ২০০৫ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি-এর প্রফেশনাল এডিশন বাজারে ছাড়ে।
• ২২ জুলাই ২০০৫ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিষ্টেমের পরবর্তী ভার্শন ভিসতার নাম ঘোষনা করে।
• ১১ জুলাই ২০০৬ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৯৮ , ৯৮ এসই ও এমই-এর জন্য সিকিউরিটি প্যাচ অবমুক্ত করে।
জনুয়ারী ২০০৭ : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ভিসতা অফিসিয়ালী বাজারে ছাড়ে। এ পর্য্যন্ত এই এডিশনের ৬ কোটি কপি বাজারে বিক্রী হয়েছে।
অক্টোবর ২০০৮ - প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সে মাইক্রোসফট তাদের সর্বশেষ অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৭ -এর ঘোষনা দেয়।
৯ জানুয়ারী ২০০৯ : অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৭ -এর বেটা ভার্শন রিলিজ করা হয়।
• ২২ অক্টোবর ২০০৯ : উইন্ডোজ ৭ আনুষ্ঠানিক ভাবে ফাইনাল ভার্শন বাজারে ছাড়া হয়। একই সাথে উইন্ডোজ সার্ভার ২০০৮ আর২ এডিশন বাজারজাত করা হয়।
আমরা অপেক্ষা করি বিল গেট আমাদের জন্য আর কি চমক নিয়ে হাজির হয়।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিষ্টেম ইনষ্টল করা
কম্পিউটারের দুইটি অংশ-একটি হার্ডওয়্যার অন্যটি সফটওয়্যার। সফটওয়্যার কম্পিউটারের প্রান। সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার একটি জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছু নয়। এতে প্রান আনতে হলে অপারেটিং সিষ্টেম লোড করতে হবে। এছাড়া অন্য কোন ব্যবহারিক প্রোগ্রাম চালানো সম্ভব নয়। তাই এই অধ্যায়ে অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে লোড করা হয় তা আলোচনা করবো । অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম বাজারে পাওয়া যায়- যেমন ডস, উইন্ডোজ, লিনাক্স, এস/২, ওয়ার্প, ইউনিক্স ইত্যাদি। তবে বর্তমানে পিসিতে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম সবচেয়ে জনপ্রিয়। সারা বিশ্বে প্রায় ৮০% পিসিতে এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। তাই আমরা এখানে উইন্ডোজ ৯৮ ইনষ্টল করার পদ্ধতি বর্ণনা করবো । আপনি যদি এই ইনষ্টল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বুঝতে পারেন তবে উইন্ডোজের যে কোন ভার্শন ইনষ্টল করা আপনার জন্য কঠিন হবে না।
পূর্ব প্রস্তুতিঃ-
১। যথাযথ ভাবে কম্পিউটার এসেম্বল করুন।
২। একটি ফ্লপি ড্রাইভ , হার্ডডিস্ক ড্রাইভ ও সিডি রম ড্রাইভ ইনষ্টল করুন।
৩। হার্ডডিস্ক ড্রাইভকে প্রয়োজনে যত পার্টিশন ও ফরম্যাট করুন। C:\> drive কে Active partition হিসাবে নির্ধারন করুন।
৪। একটি সিষ্টেম ডিস্ক/ ষ্টার্ট আপ ডিস্ক তৈরী করুন। এটা আপনি আপনার বন্ধুর কাছ থেকে পেতে পারেন অথবা অন্য কম্পিউটার থেকে তৈরী করে নিতে পারেন। যে কম্পিউটারে উইন্ডোজ ৯৮ লোড করা আছে তাতে একটি নতুন ফ্লপি ডিস্ক ঢুকিয়ে দিন। (অথবা অরিজিনাল উইন্ডোজ ৯৮ CD এর সাথে Startup Disk '98 নামে একটি ফ্লপি ডিস্ক থাকে সেটা দিয়ে কম্পিউটার Boot (On) করুন)।
o Start > Setting > Control মেনু থেকে Control Properties উইন্ডোতে প্রবেশ করুন।
o Add/Remove Programs আই কোনে ডাবল ক্লিক করুন। Add/Remove Programs Properties ডায়লগ বক্স পর্দায় আসবে।
o Startup disk ট্যাব ক্লিক করুন। Create disk কমান্ড বাটনে ক্লিক করুন।
o নিদের্শ মত কাজ করুন কিছুক্ষনের মধ্যই প্রয়োজনীয় ফাইল গুলো ফ্লপি ডিস্কে কপি হয়ে যাবে। তাহলে System disk তৈরী হল। Startup disk এ নিম্ন লিখিত ফাইল সমুহ থাকেঃ- Extract.exe, Fdisk.exe, Findramd.exe, drvspace.bin, Ebd, command.com, Autoexec.bat, Setramd, Aspi2dos.sys, Aspi4dos.sys, Aspi8dos.sys, Aspi8u2.sys,Aspicd.sys, Btcdrom.sys, Config.sys,Ebd.sys, Flashpt.sys, Himem.sys, IO.sys, Msdos.sys, Oakcdrom.sys, Ramdrive.sys, Readme.exe। এর মধ্যে IO.sys , Msdos.sys, command.com হচ্ছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ফাইল ।
o ডস থেকে System File তৈরী করা - কোন চালু কম্পিউটার থেকে System disk তৈরী করার জন্য ফ্লপি ড্রাইভে একটি ডিস্ক ঢুকিয়ে দিন এবং কম্পিউটার রিষ্টার্ট করুন। স্ক্রীনে কার্সর দেখা মাত্র F8 বোতাম চাপুন । কিছু পরে ৬ টি অপশন বিশিষ্ট একটি মেনু দেখা যাবে।
Microsoft Windows 98 Startup Menu
1. Normal
2. Logged (Bootlog.txt)
3. Safe Mode
4. Step by step configuration
5. Command Prompt Only
6. Safe mode command prompt only
Enter a Choice 1
ডাউন এরো কি চেপে Safe mode সিলেক্ট করুন এবং ইন্টার চাপুন অথবা <5> বোতাম চাপুন। একটু পরে ডস মোডে C:\> প্রস্পট দেখা যাবে। C:\> প্রস্পটে CD DOS লিখে ইন্টার চাপুন এবং পরে C:\>Dos/Format A:/S লিখে ইন্টার চাপুন। অথবা শুধু C:/> Sys A: লিখুন। একটি মেসেজ দেখা যাবে , এখন
৫। অপারেটিং সিস্টেম সমৃদ্ধ সিডি সংগ্রহ করুন। ইহা Autorun ও হতে পারে। বর্তমানে বাজারে উন্নত ফিচার সমৃদ্ধ Windows 98 SE ভার্সন বাজারে পাওয়া যাচেছ।
অপারেটিং সিস্টেম ইনষ্টল করার ধাপ সমূহ -
১। সিস্টেম ষ্টার্টআপ ডিস্কটি ফ্লপি ড্রাইভে প্রবেশ করিয়ে দিন।
২। কম্পিউটার রি-ষ্টার্ট করুন। কিছুক্ষনের মধ্যে স্ক্রীনে তিনটি অপশন বিশিষ্ট একটি মেনু দেখা যাবে। যাতে সিডি রম ড্রাইভ অপশন থাকবে কিনা, নির্ধারন করতে হবে।
Microsoft Windows 98 Startup Menu
1. Start computer with CD ROM support
2. Start computer without CD ROM support
3. View help file
Enter a Choice 1
আমরা সিডি রমের একটি ভার্চুয়াল ড্রাইভ রাখর বলে ১ নং অপশনটি সিলেক্ট করার জন্য <1> বোতাম চাপব। একটু পরেই স্ক্রীনে A:\> প্রম্পট দেখা যাবে।
৩। এখন ফ্লপি ডিস্ক থেকে সিস্টেম ফাইল ড্রাইভে ট্রানন্সফার করতে হবে। যদি হার্ড ড্রাইভ গুলি ফরম্যাট না করা থাকে তবে ফরম্যাট করার সাথেই System ট্রানন্সফার করা যাবে। সেজন্য A:\> প্রম্পটে "FORMAT C:/S" টাইপ করে Enter করতে হবে। আর যদি ফরম্যাট করা থাকে তবে A:\> Sys C: লিখে Enter দিতে হবে।
৪। স্ক্রীনে সতর্ক বানী দেখা যাবে যে, All data well be lost (Y/N)|
৫। মনিটরে ফরম্যাট হওয়ার প্রোগ্রেস দেখা যাবে এবং কিছুক্ষনের মধ্যেই ফাইল ট্রানন্সফার শেষে স্ক্রীনে A:\> প্রমপ্ট দেখা যাবে। আমরা যদি A:\>C: লিখে এন্টার দেই তবে C:\> প্রমপ্ট পর্দায় দেখা যাবে। C:/> ড্রাইভে সত্যিই System File ট্রান্সফার য়েছে কিনা যাচাই করার জন্য C:\>Dir/O/P লিখে এন্টার দিলে স্ক্রীনে ফাইল লিষ্ট দেখা যাবে।
৬। এবার Windows 98 ইনষ্টল করার পালা - আমরা CD ROM ড্রাইভ থেকে Windows 98 ইনষ্টল করব বলে সিদ্ধন্ত নিয়েছে এবং তাই একটি ভাচুয়াল CD ROM ড্রাইভ তৈরী করেছি। এটা কোন ড্রাইভ তা নিধারন করার জন্য একটি উইন্ডোজ ৯৮ সিডি ড্রাইভে প্রবেশ করান এবং A:/> প্রস্পটে পযায়ক্রমে D:, E:, F:, G: ড্রাইভের নাম লিখে ইন্টার প্রেস করুন এবং প্রত্যেক প্রস্পট DIR লিখে ইন্টার বোতামে চাপ দিব। তাতে যে প্রস্পটির ডিরেক্টরীতে Windows 98 ফোল্ডার পাওয়া যাবে তাকে আমরা সিডি রম ড্রাইভ বলে গন্য করব। মনে করি F: হচেছ সিডি ড্রাইভ।
৭। সিডি ড্রাইভে প্রবেশের জন্য A:\> প্রস্পটে F: টাইপ করে ইন্টার বোতামে চাপ দিই। F:\> প্রস্পট পর্দায় দেখা দিলে Setup টাইপ করে আবার ও ইন্টার চাপি। সাথে সাথেই উইন্ডোজ ৯৮ সেটআপ প্রোগ্রাম চালু হয়ে যাবে। পুরা প্রোগ্রাম ইনষ্টল হতে কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতা অনুপাতে ৩০ মিনিট থেতে ১ঘন্টা সময় লাগতে পারে। এসময়ে স্ক্রীনে প্রদর্শিত নির্দেশ মোতাবেক নিম্নলিখিত কাজ গুলি করতে হবে -
o ব্যক্তিগত ও কোম্পানির নাম লিখতে হবে।
o কোন এলাকায় এবং কোন ভাষায় সেটআপ হবে তা উলে¬খ করতে হবে।
o উইন্ডোজ ফোল্ডারটি কোন ডিরেক্টরীতে থাকবে তা উলে¬খ করতে হবে।
o লাইসেন্স নং/ কোড নম্বর দিতে হবে।
o System disk তৈরী করবে কিনা তা নির্ধারন করতে হবে।
o রিজওনাল টাইম সেটিং করতে হবে।
o কোন ধরনের ইনষ্টল হবে (Typical, custom or Compact) তা নির্দ্ধারন করতে হবে।
o এর মধ্যে কম্পিউটার দুই তিন বার আপনা আপনি রি-ষ্টার্ট করবে ,সুতরাং ভয় পাবার কিছু নাই। প্রত্যেকটি নির্দেশকে ভালভাবে বুঝবার চেষ্টা করুন এবং সেই মতে কাজ করুন। তাড়া হুড়ো করে কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না।
৮। অবশেষে আপনার কাংক্ষিত এবং বহুল পরিচিতি ষ্টার্ট আপ উইন্ডাটি স্ক্রীনে দেখা যাবে।
৯। আপনি ইচ্ছে করলে দ্বিতীয় কোন হার্ডডিস্ক থেকেও উইন্ডোজ ৯৮ লোড করতে পারেন (যদি আপনার সিডি ড্রাইভ না থাকে)। এক্ষেত্রে সেই হার্ডডিস্ক টিকে আপনার কম্পিউটারে পাইমারী স্লেভ অথবা সেকেন্ডারী মাষ্টার/ স্লেভ হিসেবে ইনষ্টল করতে হবে এবং COMS সেটআপের মাধ্যমে configure করতে হবে। আপনার নতুন হার্ডডিস্কে (C:\> প্রস্পটে) সিস্টেম ফাইল ট্রান্সফার করার পর উক্ত হার্ডডিস্কের (যাতে Win98 ফোল্ডার কপি করা আছে) ড্রাইভের নাম খোজ করুন- মনে করি তা F:/> ড্রাইভ। এবার F:\> ড্রাইভের উইন্ডোজ ৯৮ ফোল্ডারে ঢুকার জন্য A:\> Win98 (যদি ফোল্ডারের নাম তাই হয়) টাইপ করুন এবং এন্টার চাপুন। আবার টাইপ করুন A:\> Windows 98/Setup, Windows setup program চালু হয়ে যাবে।
উইন্ডোজ এম.ই Windows ME
উইনডোজের ক্রম বিকাশের ক্ষেত্রে মিলেনিয়াম এডিশন একটি ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ। আসলে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ 95/98 ধারার অর্থাৎ উইন্ডোজ 9-এক্স সিরিজের নতুন অপারেটিং সিস্টেম (ওএস)। এটা তৈরী করা হয়েছে মূলত: হোম ইউজারদের জন্য। এর বিল্ড নাম্বার ৪.৯০.৩০০০। উইন্ডোজ ৯৫ বা ৯৮ যারা ব্যবহার করেছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন মাইক্রোসফটের এই ওএসগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর সহজ ব্যবহারযোগ্যতা । অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা যাতে কোনো রকম প্রশিক্ষণ গ্রহণ ছাড়াই তার কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে তার ব্যবস্থা করে দেওয়াই মাইক্রোসফটের কাজ। উইন্ডোজ-এর নতুন এ ভার্সনটিও এই ধারারই বাহক। অর্থাৎ উইন্ডোজ এম.ই আগের চেয়ে আরও সহজ আর ইউজার ফ্রেন্ডলি। এতে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার, নতুন ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। আর সেগুলো ব্যবহারের সহজতম ফিচারসমূহ। আর এর ব্যবহার পদ্ধতি বদল হয়নি মোটেও (কেবলমাত্র ব্যবহার সুবিধাজনক করার জন্য নতুন কিছু ফিচারের ব্যবহার পদ্ধতিতে সামান্য অদল বদল ঘটেছে), ফলে উইন্ডোজ ৯৫ বা ৯৮ এর ব্যবহারকারীগণও একই রকম স্বাচ্ছন্দের সাথে ব্যবহার করতে পারেন এই উইন্ডোজ এম.ই। এই ভার্সনে পূর্বের বাগগুলো ফিক্স করার চেষ্টা করা হয়েছে । মাইক্রোসফটের ভাষ্যমতে সে চেষ্টায় তারা সফল। তবে তাদের সাফল্যে আসল বিচার করবেন ইউজারগণ।
উইন্ডোজ এম.ই ফিচারসমূহ -
উইন্ডোজ এম.ই-তে অনেক নতুন নতুন সফটওয়্যার আর ফিচারসমূহ যুক্ত করা হয়েছে একথা আগেই বলা হয়েছে। তবে সেই ফিচার আর সেগুলো ব্যবহার করে ইউজারদের কী ধরনের লাভ হতে পারে তা এখনও বলা হয় নি। উইন্ডোজের এ ভার্সনের মূল উন্নতিটা হয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া সংক্রান্ত কাজে অনলাইন কর্মকাণ্ডে আর কিছু নেটওয়্যার্কিং ফিসংক্রান্ত কাজে অনলাইন কর্মকাণ্ডে আর কিছু নেটওয়্যার্কিং ফিচারে।
এতে উইন্ডোজ মুভি মেকার নামে যে সফটওয়্যারটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেটির সাহায্যে অতি সহজে অন্য স্টোরেজ থেকে মুভি কম্পিউটারে প্রবেশ করানো যায়। এর সাহায্যে অডিও ও ভিডিও এডিটিং করা যায় এনালগ বা ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে, ভিসিআর থেকে অথবা ওয়েব থেকে মুভি ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে। আর তারপর তা ইমেইল করে পাঠাতে পারবেন বন্ধু বা স্বজনকে|
অন্য কোনো থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ছাড়াই আপনি আপনার কম্পিউটারে স্ক্যানার বা ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ছবি ইম্পোর্ট করতে পারবেন। আর এই ছবি হার্ডড্রাইভে সেভ করার আগে তার প্রিভিউ দেখে নিতেও পারবেন।
এতে আরেকটি বড়সড় সংযোজন হলো মিডিয়া প্লেয়ার ৭। এর সাহায্যে অধিকাংশ জনপ্রিয় স্ট্রিমিং আর লোকাল অডিও /ভিডিও ফরম্যাট উপভোগ করা যায়। এর সাহায্যে আপনি আপনার মিউজিক ক্যাটালজিং আর অর্গানাইজ তো করতে পারবেনই; অধিকন্তু নিজের মিউজিক কালেকশন শুনতে শুনতে (বা দেখতে দেখতে) বিরক্ত হয়ে গেলে ৩০০০-এর মতো ইন্টারনেট রেডিও স্টেশন বেছে নিয়ে শুনতে পারেন নতুন নতুন সঙ্গীত।
ডাইরেক্ট এক্স ৭-এর নতুন ভার্সনও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আপনার এই অপারেটিং সিস্টেমে। ফলে আপনার গেমের শব্দ আর দৃশ্যসমূহকে আরও বাস্তবসম্মত করে তোলে। ফলে উইন্ডোজ এম.ই পরিণত হয়েছে হাইকালার গ্রাফিক্স, 3D অ্যানিমেশন, সারাউন্ড সাউন্ড আর 3D গেমিং-এর জন্য একটি আদর্শ প্লাটফর্ম।
এতদিন Help নাম নিয়ে যে উইজার্ডটি ব্যবহারকারীদের নানা কাজে আর সমস্যায় সাহায্য করত তার নাম এখন Help and Support- শুধু নামে নয়, পরিবর্তন এসেছে আঙ্গিকেও। এতে রয়েছে ওয়েব ভিত্তিক রিসোর্স, ফলে লোকাল হেল্পে ডাটাবেজ থেকে সাপোর্ট পেতে ব্যর্থ হলেও ওয়েবে সরাসরি যোগাযোগ করেও জেনে নেওয়া যাবে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান আর প্রশ্নের উত্তর।
উইন্ডোজ ৯৮ বা ৯৫ -এ প্রায়ই দেখা যেতো ইউজার অজ্ঞতাবশত মুছে ফেলেছেন সিস্টেমের জন্য অতি প্রয়োজনীয় কোনো ফাইল। ফলে সিস্টেম আনস্ট্যাবল হয়ে পড়ত বা ক্ষেত্রবিশেষে বুট করতেও সক্ষম হতো না। উইন্ডোজ এম.ই এ ঝামেলা থেকে পুরোপুরি মুক্ত। এর সিস্টেম ফাইল প্রোটেকশন ফিচার ভুল করে সিস্টেম ফাইলকে মুছে ফেলা থেকে বাঁচাবে।
আপনি হয়ত সিস্টেম সেটিংসে এমন কোনো পরিবর্তন করে ফেলেছেন ভুলবশত, যা আপনার পিসির পারফরমেন্সকে মারাক্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আপনি যদি উইন্ডোজ এম.ই -এর ব্যবহারকারী হোন, তাহলে আপনার চিন্তার কিছু নেই। আপনাকে যা করতে হবে তা হলেঅ সিস্টেম রিস্টোর-কে অ্যঅক্টিভেট করা। পরবর্তীতে উইন্ডোজ রিস্টার্ট করলেই আপনি ফিরে যাবেন আগের অবস্থায়।
উইন্ডোজ এম.ই-এর হার্ডওয়্যার ইনস্টলেশনের উইজার্ড আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ আর কার্যকর উপায়ে হার্ডওয়্যঅর ইনস্টল করতে পারে। এক্ষেত্রে ইউজারের তেমন কোনো ভূমিকাই পালন করতে হয় না। আর উইন্ডোজ এম.ই তখনই কনফিগার করে নেয় ডিভাইসগুলো। ফলে বারবার উইন্ডোজ রিস্টার্ট করার ঝামেলা নেই।
উইন্ডোজের মেনুগুলো এখন আগরে চেয়ে স্মার্ট আর বুদ্ধিমান তারা সবসময়ই আপনার কর্মকাণ্ড খেয়াল করে। আতঃপর যে মেনুগুলো আপনি বেশি ব্যবহার করেন সেগুলো থাকে চোখের সামনে। আর অপেক্ষাকৃত কম ব্যবহৃত হয় যেগুলো সেগুলোও থাকে তবে কিছুটা আড়ালে।
মাইক্রোসফট তার পার্টনার ও সাপোর্টিং হার্ডওয়্যার কোম্পানিগুলোর হার্ডওয়্যারের সাথে আরও বেশি কম্প্যাটিবল করার চেষ্টা করেছে মিলেনিয়ামের এই ওএস টিকে।ফলে কোনো নতুন হার্ডওয়্যার সিস্টেমে আসা মাত্র এম.ই নিজেই দেখে নেয় সেটি সঠিকভাবে কাজ করবে কি না। ফলে ইউজারকে কম্প্যাটিবিলিটি নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না।
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৫.৫ উইন্ডোজ এম.ই-এর সঙ্গে বিল্ট ইন এটি ব্রাউজিং পারফরমেন্স, সার্চিং স্পিড ইত্যাদি বিবেচনায় পূর্বের ভার্সন অপেক্ষা উন্নততর। এর মাধ্যমে ওয়েব পেজ প্রিন্টিং ও সহজসাধ্য হয়েছে।
আউটলুক এক্সপ্রেসের সাহায্যে আগের চেয়ে দ্রুততার সাথে মেইল আনা নেওয়া করা যায়, হট-মেইলের অ্যাকাউন্টে অ্যাকসেস করা যায়, নিউজ গ্রুপে জয়েন করা যায়। আর এবই করা যায় ডেস্কটপ থেকে সরাসরি। এমএসএন ম্যাসেঞ্জার আপনাকে জানিয়ে দেবে কখন আপনার বন্ধু এলো অনলাইনে। ফলে আপনি ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজ পাঠাতে পারবেন, রিয়েল টাইম চ্যাট করতে পারবেন অথবা ভিডিও কনফারেন্সিং করা যেতে পারে নেটমিটিং কনফএরন্সিং সফটওয়্যারের সাহায্যে। এ সফটওয়্যারগুলো উইন্ডোজের সাথেই পাওয়া যায় বিনামূল্যে। এর সাহায়্যে আপনি অনলাইনে গেমও খেলতে পারবেন বিশ্বের অন্য প্রান্তের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বির সাথে। এম.ই -এর সাথে Back gammon, Hearts, spades, checker ইত্যাদি গেমের ইন্টারনেট ভার্সন দেওয়া আছে।
এতে রয়েছে একটি হোম নেটওয়ার্কিং উইজার্ড যার সাহায্যে খুব সহজেই আপনি তৈরি করতে পারবেন একটি সফল ছোট হোম নেটওয়ার্ক।
ইন্টারনেট কানেকশন শেয়ারিং (ICS)-Gi মাধ্যমে আপনি সহজেই একটি মাত্র ইন্টারনেট কানেকশন থেকে একাধিক পিসিতে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া যাবে। এমনকি অন্য পিসিগুলোতে উইন্ডোজ ৯৫ বা ৯৮ ইনস্টল করা থাকলেও
উইন্ডোজ এম.ই আপনাকে ইথারনেট, ওয়্যারলেস, হোম PNA সহ প্রায় সব ধরনের হোম নেটওয়ার্ক টেকনোলজির মাধ্যমেই নেটওয়ার্ক তৈরির সুবিধা প্রদান করে।
উইন্ডোজ এম.ই হলো সর্বপ্রথম অপারেটিং সিস্টেম যাতে ব্যবহার করা হয়েছে ইউনিভার্সাল প্লাগ এন্ড পে¬ ডিভাইস। ফলে এটি কেবলমাত্র কম্পিউটার অ্যাকসেসরিজ কেই ডিটেক্ট করে না, সাথে সাথে সব ধরনের গ্যাজেট, অ্যাপ¬ায়ান্স, ওয়্যারলেস ডিভাইসকেও ডিটেক্ট ও ইনস্টল করতে পারে। নতুন TCP/IP স্ট্যাকের অন্তর্ভুক্তিকে উইন্ডোজ এম.ই দিতে পারছে আগের চেয়ে আরও স্ট্যাবল আর সিকিউরড ইন্টারনেট অ্যাকসেস।
ডসের পরিসমাপ্তি -
উইন্ডোজের এই মিলেনিয়অম এডিশনে যে কয়টি বড় পরিবর্তন ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম হচেছ ডস-এর আংশিক বিদায়। পার্সোনাল কম্পিউটিং-এর সূচনাকারী এই অপারেটিং সিস্টেমটি দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবহারকারীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম দাঁড়িয়ে আছে ডস প্লাটফর্মের ওপর-এ ধরনের একটা বদনামও প্রচলিত ছিল। তা সত্ত্বেও মাইক্রোসফট উইন্ডোজের সাথে এতদিন ডসকে রাখার কারণ মূলত পুরনো ইউজারদের পছন্দকে গুর"ত্ব দেওয়া আর তাদের নতুন এনভায়রনমেন্টের সাথে খাপ খাইয়ে নেবার সুযোগ করে দেওয়া। সমপ্রতি মাইক্রোসফট উদ্যোগ নিয়েছে ডসকে বিদায় জানানোর। আর সেই সিদ্ধান্তের প্রাথমিক ফলাফল হলো উইন্ডোজ এম.ই।
এখন থেকে ইউজাররা আর উইন্ডোজকে এমএসডস মোডে রিস্টার্ট করার কোনো অপশন শাট ডাউন মেনুতে খুঁজে পাবে না। বাকি তিনটা অর্থাৎ শাট ডাউন, রিস্টার্ট আর স্ট্যান্ডবাই মোডগুলো অবশ্য থাকছে আগের মতই। অথবা উইন্ডোজ স্টার্ট আপের সময় F8 কী চেপে ধরেও ডস মোডে কম্পিউটার চালু করার কোনো অপশনও থাকছে না। এতে করে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ডস ফিচারের সমস্যা থেকে যেসম মুক্তি পাবে তেমনিভাবে স্টার্টআপ বা শাটডাউনও হয়ে উঠবে আগের চেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন। মাইক্রোসফট অবশ্য অনেকদিন যাবৎই সত্যিকার অর্থে ৩২ বিটের অপারেটিং সিস্টেম তৈরির জন্য চেষ্টা করছিল ডসকে বাদ দেয়ার। কিন্তু ডসের বেশ কিছু অ্যাপি¬কেশন এখন পর্যন্ত অত্যন্ত জনপ্রিয় বলেই তারা উইন্ডোজ 95/98 বা ৯৮ সেকেন্ড এডিশন থেকে ডসকে বাদ দেয়নি। এম.ই-তে ডস বাদ পড়ায় এতে পার্টিশন ম্যাজিক ৫.০১-এর মতো ডসভিত্তিক জনপ্রিয় সফটওয়্যারগুলো চলবে না। কারণ এগুলো চালানোর জন্য প্রয়োজন হয় রিয়েল মোড ডস, যা এম.ই-তে অনুপস্থিত। ডসপ্রেমী যারা, তরা হয়তো এরই মাঝে উইন্ডোজ এম.ই সম্বন্ধে বেশ খানিকটা আগ্রহ হারিয়েছেন। তাদের জন্য খবর হলো যে, মাইক্রোসফট উইন্ডোজ থেকে ডস ঠিকই বাদ দিচেছ, তবে তা কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে। অর্থাৎ উইন্ডোজ ডস থাকছে না ঠিকই, কিন্তু ডসকে যারা পছন্দ করেন অথবা ডসের অ্যাপি¬কেশনগুলো যাদের কাঝে অত্যন্ত প্রিয় তারা ঠিকই ডস ব্যবহার করতে পারবেন। পরস্পরবিরোধী এই কথাটি একটু ব্যাখ্যা করে বললেই ব্যাপারটি পরিষ্কার বোঝা যাবে। অর্থাৎ এম.ই-এর সাথেও ডস আছে। তবে তা ৯৮ বা ৯৫-এর মতো প্রকাশ্য অবস্থায় নেই। আছে লুকিয়ে। আপনাকে শুধু একটি বুটডিস্ক বানিয়ে নিতে হবে কষ্ট করে। বুটডিস্ক বানানোর জন্য একটি ভালো ফ্লপিডিস্ক নিন এবং তা ফরম্যাট করুন। এরপর সি ড্রাইভের Windows/command/ebd ফোল্ডারে গিয়ে io.sys এবং Command.com ফাইলগুলো ঐ ফ্লপিতে কপি করে নিন। এরপর আপনার বায়োস ফাইলগুলোকেও একই ফ্লপিতে কপি করে নেন। এরপর ফ্লপির সাহায্যে আপনার পিসিটি রিবুট কর"ন। তাহলেই আপনি ফিরে পাবেন আপনার চির পরিচিত কমান্ড প্রম্পট এনভায়রনমেন্ট। এতে আপনি ডসের সকল অ্যাপি¬কেশনগুলোও চালাতে পারবেন। আর যারা এত ঝামেলায় যেতে চান না তাদের জন্য তো রইলই Ms-dos প্রম্পট। স্টার্ট মেনুতে Program/Accessories পাথ ফলো করলেই পেয়ে যাবেন তা। তবে ডস প্রম্পটে ডসের অ্যাপি¬কেশনগুলো চালানো যাবে না।
গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস -
উইন্ডোজ ২০০০ আর উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশনের রিলিজের মাঝে সময়ের ব্যবধানমাত্র 4/5 মাস। আর হয়তোবা সে কারণেই উইন্ডোজ ২০০০ আর উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশনের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। এর ধূসর উইন্ডো আউট অত্যন্ত চমৎকার। আর মাইকম্পিউটার, রিসাইকল বিন, মাই ডকুমেন্টস, মাই নেটওয়ার্কপে¬স প্রভৃতি আইকনগুলো নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে ডেস্কটপ আরও সুন্দর আর আকর্ষনীয় হয়েছে। স্টার্ট মেনুর লম্বালম্বি নীল বারটিতে উইন্ডোজ এম.ই-এর লেঅগোটি স্টার্ট মেনুর আবেদন বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকগুণ। আর স্টার্ট মেনুও আগের চেয়ে স্মার্ট হয়ে উঠেছে। এটি স্বয়ংক্রীয়ভাবেই অল্প ব্যবহৃত আইকনগুলো লুকিয়ে রাখে আর বেশি ব্যবহৃত আইকন আর শর্টকাটগুলো প্রদর্শন করে।
এই স্মার্ট ফিচারটি অবশ্য অনেকেই পছন্দ করেন না। তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। অর্থাৎ এ ফিচারটি ডিসেবল করে রাখার ব্যবস্থা আছে। স্টার্ট মেনুতে কিছু কিছু আইকনের জন্য টুলটিপস রয়েছে। অর্থাৎ আপনি যদি মাইস পয়েন্টারটি আইকনের ওপর স্থাপন করেন তাহলে উক্ত আইকনের কার্যকারিতা বিশে¬ষণ করে এক বা দুই লাইন দেখতে পাবেন। উইন্ডোজের আগের ভার্সনগুলোর আরেকটি দুর্বলতা হলো যে এর সিস্টেম ট্রে বা টাস্কবারের আইকনগুলোতে ট্যাব কী-এর সাহায্যে নেভিগেট করা যেতো না। ফলে সেগুলো ব্যবহার করার জন্য মাউস ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না। এম.ই তে সে অসুবিধাও দূর করা হয়েছে। ফলে ট্যাব কী ব্যবহার করেই টাস্কবার থেকে চালু করতে পারবেন মিডিয়া পে¬য়ার বা দেখে নিতে পারবেন দিনের তারিখ বা কন্ট্রোল করতে পারবেন মিউজিক ভলিউম। কন্ট্রোল প্যানেল, প্রিন্টার প্রভৃতি ফোল্ডারে স্টার্ট মেনু থেকে সরাসরি প্রবেশ করা যায়। স্টার্ট মেনুতে আইকনখুব বেশি হয়ে গেলে অর্থাৎ এক কলামে জায়গা না হলে স্টার্ট মেনুকে স্ক্রল টাইপ ভিউ অথবা মাল্টিকলাম ভিউয়ের মাধ্যমে দেখা যায়।
উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারে দুটি নতুন বাটন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো Copy to আর Move to আর বাদ পড়েছে তিনটি বাটন। এগুলো হলো কার্ট, পেস্ট আর কপি বাটন। অবশ্যনতুন বাটন দুটি দ্বারাই আরও সহজে কম সময়ে বাদ পড়া তিনটি বাটনের কাজ করা যায়। কোনো ফাইল বা ফোল্ডারকে কপি করতে চাইলে তাকে সিলেক্ট করে Copy to বাটনে ক্লিক করে ok করলেই ইচেছমত ফোল্ডারে কপি হয়ে যায়। একইভাবে Move to আইকনের মাধ্যমে কার্ট পেস্টের কাজটা করা যায়। তবে কপি, কাট, পেস্ট ফিচারগুলো টুলবারে না থাকলেও তা একেবারে বাদ দেওয়া হয়নি। এগুলো আপনি পাবেন রাইট ক্লিক মেনু কিংবা ফোল্ডারের Edit মেনুতে। বিভিন্ন ফোল্ডারের বাম পাশে মাই কম্পিউটার, মাই ডকুমেন্টস, মাই নেটওয়ার্ক পে¬সের লিংক রয়েছে। ফলে যে কেউ খুব সহজেই সরাসরি এসব লিংক ক্লিক করার মাধ্যমে এগুলোতে এক্সেস করতে পারে।
উইন্ডোজ এক্সপি হলো "eXPerience" –এর সংক্ষেপ।
উইন্ডোজ ২০০০ প্রফেশনাল ও উইন্ডোজ এমই-র উত্তরসুরী হিসাবে ইহা বাজারে আত্মপ্রকাশ করে। সাধারন ভোক্তাদের জন্য ইহাই প্রথম মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম যা উইন্ডোজ এনটি কার্নেল ও আর্কিটেক্সারের উপরে প্রতিষ্ঠিত। ২০০১ সালের ২৫ অক্টোবর ইহা রিলিজ করা হয় এবং ২০০৬ সালের মধ্যে ইহার প্রায় ৪০ কোটি কপি বিক্রী হয়। এই সময় উইন্ডোজের পরবর্তী এডিশন ভিসতা বাজোরে আসে। ২০০৮ সালের জুন মাসের ৩০ তারিখে খুচরা বাজারে ইহার বিক্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে বন্ধ ঘোসনা করা হয়। অবশ্য কাষ্টম বিল্ট পিসিতে ইহা ২০০৯ সালের জানুয়ারী পর্য্যন্ত চালু ছিল।
উইন্ডোজ এক্সপির অনেকগুলি ভার্শনের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো “হোম এডিশন’, যা বাসার ব্যবহারীদের জন্য প্রস্তুত। এর পরে উইন্ডোজ এক্সপি প্রফেশনাল এডিশন ,যা বিজনেস ও ইন্টারপ্রাইজ ক্লায়েন্টদের জন্য তৈরী। ইহা উইন্ডোজ সার্ভার ডোমেইন ও দুইটি প্রসেসর সাপোর্ট করতো। উইন্ডোজ এক্সপি মিডিয়া সেন্টার এডিশন-এ বিশেষ মাল্টিমিডিয়া ফিচার যুক্ত থাকার কারনে টিভি রেকর্ড করা ও দেখা যায় ; ডিভিডি মুভি উপভোগ করা যায় এবং মিউজিক শোনা যায়। উইন্ডোজ এক্সপি ট্যাবলেট পিসি এডিশন ট্যাবলেট পিসি প্লাটফর্মের এপ্লিকেশনগুলি চালানোর উপযোগী করে তৈরী। এছাড়াও উইন্ডোজ এক্সপি ৬৪ বিট এডিশন (আইটেনিয়াম প্রসেসরের জন্য) এবং উইন্ডোজ এক্সপি প্রফেশনাল ৬৪ বিট এডিশন (x86-64 প্রসেসরের জন্য) নামে আরোও দুইটি ভার্শন তৈরী করা হয়।
এনটি ভিত্তিক উইন্ডোজ –এর ভার্শন গুলির নিরাপত্তা ও দক্ষতা উইন্ডোজ ৯-এক্স ভিত্তিক ভার্শনের চেয়ে ভালো। উইন্ডোজ এক্সপির সব এডিশনে আগের এডিশনের চেয়ে গ্রাফিক্স ইউজার ইন্টারফেস অরো উন্নত করে ডিজাইন করেছে। এছাড়া এতে অবৈধ কপি করার চেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ও উইন্ডোজ মিডিয়া প্লোয়ার এর সাথে সমন্বিত করার ফলে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। পরে সার্ভিস প্যাক -১ ও ২ এবং ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৮ –এর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হয়।
উইন্ডোজ এক্সপি ডেভেলপমেন্ট কালীন সময়ে এর কোডনাম ছিল ‘হুইসলার” । ২০০৯ সালের আগষ্ট মাসের তথ্য অনুযায়ী উইন্ডোজ এক্সপি ছিল সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম (মার্কেটের প্রায় ৬৬%)। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী উইন্ডোজ এক্সপি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে বাজারের প্রায় ৮৫% দখল করেছিল ।
উইন্ডোজ ভিসতা
২০০২ সালের জুলাই মাসে যখন এই অপারেটিং সিস্টেমের কথা ঘোষনা করা হয় , তখন এর নাম কোডনাম ছিল “লংহর্ণ” । নভেম্বর ২০০৬ সালে এর নির্মান কাজ শেষ হলে পরবর্তী তিন মাসে ইহা কমপিউটার হার্ডওয়ার প্রস্তুতকারক, ব্যবসায়ী মহল ও খুচরা বিক্রেতাদের হাতে পেছে যায়। ত্রিশে জানুয়ারী ২০০৭ সালে ইহা সারা বিশ্বের বাজারে পাওয়া যায়। উইন্ডোজ এক্সপির পরে দির্ঘ্য প্রায় ৫ বছর পর এই অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আসে, যা উইন্ডোজের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী সময়। উইন্ডোজ ভিসতায় ব্যাপক পরিবর্তন ও নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। বিশেষ করে “উইন্ডোজ এরো” নামে গ্রাফিক্স ইউজার ইন্টারফেস ও ভিজুয়াল ষ্টাইল আলাদা মর্য্যাদার দাবীদার। সার্চ ফাংশনকে রিডিজাইন করা হয়েছে, উইন্ডোজ “ডিভিডি মেকার” সহ মাল্টিমিডিয়া টুলসকে অলাদা করে সাজানো হয়েছে এবং নেটওয়ার্কিং, অডিও, প্রিন্ট ও ডিসপ্লে সাবসিস্টেমকে নতুন রুপ দেওয়া হয়েছে। উইন্ডোজ ভিসতায় ডটনেট ফ্রেমওয়ার্কের ৩.০ ভার্শন যোগ করা হয়েছে যার মাধ্যমে সফটওয়ার ডেভেলপররা উইন্ডোজ এপিআই-এর সাহায্য ছাড়াই তাদের এপ্লিকেশন লিখতে পারবে।
উইন্ডোজ ভিসতার আর একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর সিকিউরিটিকে আরো সুসংহত করা। উইন্ডোজ এক্সপি এবং অণ্যান্য এডিশনের দুর্বল দিকগুলি, যেমন দুর্বল নিরাপত্তা, ম্যালওয়ার, ভাইরাস –এর আক্রমন ও বাফার ওভারফ্লো প্রভৃতি সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এর কিছু নেগেটিভ দিকও আছে যা তদেরকে সমালোচনার মুখামুখী করেছে। অবৈধ কপি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় বেশী কড়াকড়ি, প্রাক-ভিসতা হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার-এর সাথে সামঞ্জস্যের অভাব, উচু সিস্টেম রিকয়ারমেন্ট ইত্যাদির কারনে সব ধরনের ব্যবহারকারীর পক্ষে ইহার গ্রহনযোগ্যতা কম। এই সমস্ত কারনে উইন্ডোজ ভিসতার জনপ্রিয়তা উইন্ডোজ এক্সপির চেয়ে কম – এপর্য্যন্ত ব্যবহারকারী প্রায় ২০ কোটি । আগষ্ট ২০০৯ –এর সমীক্ষা অনুযায়ী উইন্ডোজ ভিসতা বাজারের ২৩% দখল করে আছে আর উইন্ডোজ এক্সপির দখলে ৬৯%।
উইন্ডোজ ৭ (সেভেন)
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ-এর সর্বশেষ ভার্শন হলো উইন্ডোজ ৭ (সেভেন) । প্রস্তুতিপর্বে এর কোডনাম ছিল ব্লাকবোম্ব ও ভিয়েনা। মেনুফ্যাকচারারদের কাছে ২২ জুলাই ২০০৯ তারিখে ইহা অবমুক্ত করা হয়্এবং ২২ অক্টোবর ২০০৯ সালে ইহার ফ্ইনাল ভার্শন রিলিজ করা হয়। এর সাথে উইন্ডোজ সার্ভার ২০০৮ (রিলিজ-২) ও বাজারে এসেছে। উইন্ডোজ ভিসতা রিলিজের প্রায় তিন বছর পরে এই এডিশন বাজারে ছাড়া হলো। সেই চিরন্তন প্রথার মতোই এই ভার্শনেও নতুন নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – মাল্টি-টাচ সাপোর্ট, উইন্ডোজ শেলকে রিডিজাইন করে নতুন টাস্কবার, হোমগ্রুপ নামে নতুন নেটওয়ার্কিং সিস্টেম। আগের ভার্শনে Windows Calendar, Windows Mail, Windows Movie Maker, and Windows Photo Gallery নামে যেসব এপ্লিকেশন অপারেটিং সিস্টেমের সাথে ইমবিডেড থাকতো তা আর এই ভার্শনে থাকবে না বরং এগুলি আলাদাভাবে “ free Windows Live Essentials suite নামক এপ্লিকেশন-এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
উইন্ডোজের বিভিন্ন ভার্শনের সর্বনিম্ন সিস্টেম রিকয়ারমেন্ট –
উইন্ডোজ ভার্শন প্রসেসর মেমোরী বা রাম গ্রাফিক্স কার্ড হার্ডডিস্ক স্পেস
এমই পেন্টিয়াম ২ ৩০০ মে.হার্জ ৬৪ মেগাবাইট SVGA (৮০০X৬০০) ২ গিগাবাইট
এক্সপি ৩০০ মেগাহার্জ ১২৮ মেগাবাইট SVGA (৮০০X৬০০) ১.৫ গিগাবাইট
ভিসতা ১০০০ মেগাহার্জ ১ গিগাবাইট ডিইরেক্ট-এক্স ৯.০ ক্যাপিবল
ভিডিও রাম ৩২ মেগাবাইট ২০ গিগাবাইট
সেভেন ১ গিগাহার্জ; ৩২ বিট প্রসেসর ১ গিগাবাইট ডিইরেক্ট-এক্স ৯.০ ক্যাপিবল প্রসেসর
১৬ -২০ গিগাবাইট
উইন্ডোজ ফাইল সিস্টেম
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে বর্তমানে ৩ ধরনের FAT (File Allocation Table) ব্যবহার করা হয়। যেমন, FAT 16, FAT 32 এবং NTFS| এদের মধ্যে ফ্যাট ১৬ হলো সবচেয়ে পুরানো এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত। ফ্যাট ৩২ উইন্ডোজ ৯৫-এর পরের ভার্সনগুলোর সাথে বের হয়েছে এবং এটি ফ্যাট ১৬ অপেক্ষা বেশি কার্যকরী। উইন্ডোজ এনটির ফাইল সিস্টেমে ব্যবহার করা হয় এনটিএফএস পদ্ধতি তবে এটি বর্তমানে উইন্ডোজএর ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম।
একজন সাধারণ ব্যবহারকারী হার্ড ড্রাইভের স্পেস ছাড়া ফাইল সিস্টেম সংক্রান্ত আর কোনো ব্যাপারে চিন্তিত না হলেও পারেন। যারা পিসিতে ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করেন তারা সহজেই সেটি ফ্যাট ৩২-তে রূপান্তর করে হার্ড ড্রাইভের স্পেস বাড়াতে পারেন। মাইক্রোসফটের মতে ফ্যাট ১৬ থেকে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করা উইন্ডোজ ৯৮ ভিত্তিক পিসিগুলোর জন্য একটি প্রধান সিস্টেম এনহ্যান্সমেন্ট পদ্ধতি। এর ফলে আপনি ১০-২৫% পর্য্যন্ত হার্ড ড্রাইভের জায়গা অতিরিক্ত ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ ২০০০-এর ব্যবহারকারীরা সাধারণত তাদের ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম এনটিএফএস থেকে ফ্যাট ১৬ বা ফ্যাট ৩২-তে সুইচ করে না। কিন্তু যেসব ব্যবহারকারী উইন্ডোজ এনটি/উইন্ডোজ ২০০০ ছাড়া উইন্ডোজের আগের কোন ভার্সন একই সাথে ব্যবহার করতে চান তাদরে ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করতে হবে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে ফাইল সিস্টেম পিসির ঠিক কি কাজে লাগতে পারে।
ফাইল এলোকেশন টেবিল - FAT ফ্যাট হচেছ সেই গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি ক্ষেত্রের একটি (অন্যগুলো হচেছ- বুট রেকর্ড, পার্টিশন টেবল, মাস্টার বুট রেকর্ড, রুট ডিরেক্টরি) যা পিসির হার্ড ড্রাইভ অর্গানাইজেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়। যদি পিসিকে একটি লাইব্রেরি হিসেবে কল্পনা করা হয় তাহলে ফাইল সিস্টেম হচেছ সেটির কার্ড ক্যাটালগ। ফাইল এলোকেশন টেবল আপনার হার্ড ডিস্কে সেভ করা সব রকম ফাইল , ফোল্ডারগুলোর এড্রেস, বিষয়বস্তু এবং স্ট্যাটাস সম্পর্কে তথ্য জমা রাখে।
এই ফাইল এলাকেশন টেবল বিভিন্ন ক্লাস্টারের (হার্ড ড্রাইভে ফাইলের জন্য রিজার্ভকৃত জায়গা) ফাইল এবং ফোল্ডারগুলো লোকেট করে রাখে। ক্লাস্টার হলো ডাটা সেভ করার জন্য অপারেটিং সিস্টেম কর্তৃক নিধারিত সবচেয়ে ক্ষুদ্র একক। ক্লাস্টারগুলো সবচেয়ে ছোট ইউনিট।
ফ্যাট ১৬ (FAT 16) - যেহেতু এই পদ্ধতি সবচেয়ে আগে বের হয়েছে তাই এটিকে অনেকে শুধু ফ্যাটও বলে থাকে। ১৯৭৭ সালে ডিস্কেটে ডাটা অর্গানাইজ করার জন্য উদ্ভাবিত এই ১৬ বিট ফাইল সিস্টেম ডস, উইন্ডোজ, লিনআক্স, ওএস/২, উইন্ডোজ এনটি ইত্যাদি বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করতে সক্ষম। তবে এটির খারাপ দিক হলো- এর মাধ্যমে বড় বড় হার্ড ডিস্কগুলোকে ম্যানেজ করা যায় না। ৭০-এর দশকে পিসির হার্ড ডিস্কগুলো ছিলো বেশ ছোট কিন্তু ৮০র দশক থেকে আজ পর্য্যন্ত হার্ড ড্রাইভের আয়তন যেভাবে বাড়ছে সেক্ষেত্রে ফ্যাট ১৬-এর ৬ জি.বা.নিয়ে কাজ করার ক্ষমতা একেবারেই অপ্রতুল বলে বিবেচিত হয়।
ফ্যাট ৩২ (FAT32) - উইন্ডোজ ৯৫-এর একটি ভার্সনের সাথে মাইক্রোসফট বাজারে ছাড়ে ফ্যাট ৩২ যাতে ফ্যাট ১৬-এর কম হার্ড ডিস্ক স্পেস ম্যানেজ করার অসুবিধাটি সমাধান করা হয়। ফ্যাট ৩২-তে ক্লাস্টার আয়তন ফ্যাট ১৬-এর চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে ছোট- ফলে ডিস্ক স্পেস আরো ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ডিস্ক ফেইলিওর সম্ভাবনাও এই ফ্যাট ৩২-এ কম, কারণ এটি ফ্যাট ৩২-এর ব্যাকআপ কপি ব্যবহারে সক্ষম।
ফ্যাট ৩২ পদ্ধতি ২ টেরাবাইট (১ টেরাবাইট = ১ ট্রিলিয়ন বাইট) আয়তন পর্য্যন্ত হার্ড ডিস্ককে ম্যানেজ করতে পারে। এছাড়া ফ্যাট ১৬ শুধু মাত্র ৫১২ টি ফাইল এবং ফোল্ডারের রুট ডিরেক্টরি ম্যানেজ করতে পারতো। অন্যদিকে ফ্যাট ৩২ আনলিমিটেড রুট ডিরেক্টরি সাপোর্ট করে। ফ্যাট ১৬-এ সবসময় রুট ডিরেক্টরিকে হার্ডড্রাইভের প্রথমে স্থান দিতে হয়- ফলে যদি সেই জায়গাটি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সিস্টেম ফেইলিওর সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্যাট ৩২-এর ক্ষেত্রে এই অসুবিধা নেই। কারণ এতে ডিরেক্টরি সরানোর অপশন দেয়া আছে।
এনটিএফএস (NTFS) - ঠিক মতো পুরো সিস্টেমের ডাটা ম্যানেজ করা ছাড়াও এনটিএফএস পদ্ধতি সিকিউরিটির দিক থেকেও বেশ উন্নত। এজন্য এটি হাই-এন্ড সার্ভারগুলোতে ব্যবহৃত হয়। যদিও প্রথমে এটি উইন্ডোজ এনটির জন্য ডিজাইন করা হয়েছিলো- তবে এখন এটি উইন্ডোজ ২০০০-এ ব্যবহার করা স্বাভাবিকভাবেই হার্ড ডিস্কের স্পেস ভালোভাবে ব্যবহারের জন্য ক্লাস্টার আয়তন আরো ছোট করা হয়েছে। তবে এনটিএফএস এবং ফ্যাট ১৬ আর ফ্যাট ৩২-এর মধ্যে আরো কিছু ক্ষেত্রে বেশ পার্থক্য রয়েছে। যেমন - নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফাইল শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে এনটিএফএস কিছু স্পেসিফিক লেভেল ব্যবহার করে। যেমন - read only, read/write অথবা deleting| এছাড়া এনটিএফএস লোকাল কমিপউটারগুলোতে প্রতিটি ফাইল এবং ডিরেক্টরি রক্ষা করার অপশন ব্যবহারকারীকে দিয়ে থাকে- অথচ ফ্যাট ৩২-এ শুধুমাত্র নেটওয়ার্কে একটি ফাইল রক্ষা করতে পারে। কিন্তু আপনার টার্মিনালে অন্য কোনো অবৈধ ব্যবহারকারী বসে সেই ফাইল এক্সেস করলে তা প্রতিহত করতে পারে না। এছাড়া এনটিএফএস -এর ফল্ট টলারেন্স পদ্ধতি বেশ উন্নত। এটি হার্ডড্রাইভে সংরক্ষিত ফাইলের কপিগুলোর সাথে তুলনা করে প্রায় সাথে সাথেই যেকোনো ধরনের হার্ড ডিস্ক এরর শুধরে নিতে পারে। যদি যেকোন একটি কপি না ম্যাচ করে তাহলে-এনটিএফএস সেই সেকশনটি বাদ দিয়ে সেই একই ফাইলের কপি হার্ড ডিস্কের অন্য ড্রাইভে আবার লিখে রাখে।
ফাইল সিস্টেম সমুহের পার্থক্য -
এই তিনটি ফাইল সিস্টেমের মধ্যে মুল পার্থক্য হলো এগুলোর হার্ড ডিস্কের জায়গা ঠিকমতো ব্যবহার করার পদ্ধতির মধ্যে। হার্ড ড্রাইভের আয়তনের সাথে সাথে ক্লাস্টার সাইজও বদলে যেতে পারে। তবে আপেক্ষিক ক্লাস্টার আয়তন সব সময় এই থাকবে। ফ্যাট ১৬-এর ক্লাস্টার সবচেয়ে বড় তারপর ফ্যাট ৩২-র এবং সবচেয়ে ছোট হলো এনটিএফএসএর। উদাহরনস্বরুপ বলা যায় যদি আমরা একটি ১ জি.বা.-এর হার্ড ডিস্ককে নেই তাহলে এর ক্লাস্টার সাইজ হবে ফ্যাট ১৬এর জন্য ৩২ কি.বা, ফ্যাট ৩২-এর জন্য ৪ কি.বা. এবং এনটিএফএস এর জন্য ১-২ কি.বা।
ফলে একটি ২ কি.বা. আয়তনের ফাইল ফ্যাট ১৬-এ ১টি ক্লাস্টার ৩২ কি.বা. এর মধ্যে ২ কি.বা. ব্যবহার করবে আর ৩০ কি.বা. নষ্ট করবে। ফ্যাট ৩২-এর ক্ষেত্রে ক্লাস্টার আয়তন হলো ২ কি.বা. এবং এনটিএফএস-এর ক্ষেত্রে কোনো ড্রাইভ স্পেসই নষ্ট হয় না। ক্লাস্টারের এই অব্যবহৃত অংশটিকে --বলে।
আপনার কমপিউটারে ফ্যাট কোনটি ? এটি দেখার জন্য My Computer-এ ক্লিক করে তারপর সাধারণত C: ড্রাইভের উপর রাইট বাটন ক্লিক করুন ও properties এ চলে যান। সেই ডায়ালগ বক্সে আপনি দেখবেন পিসিতে কোন ফাইল সিস্টেমটি কাজ করছে? ফ্যাট-১৬ নাকি ফ্যাট-৩২ ।
কোন ফ্যাট পদ্ধতি বেছে নিবেন ?
যদি আপনার পিসির ওএস উইন্ডোজ ৯৮ হয়ে থাকে তাহলে ফ্যাট ৩২ ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে যদি আপনার হার্ডড্রাইভটিতে মোট ৮ জি.বা. বা এর কম জায়গা কিংবা কিছু পার্টিশন থাকে। কারণ ফ্যাট ৩২ ব্যবহার করলে অপেক্ষাকৃত অনেক ডিস্ক স্পেস কাজে লাগানো যায়।
মাইক্রোসফটের মতে ফ্যাট ১৬-এর পরিবর্তে ফ্যাট ৩২ ব্যবহার করলে ১০-১৫% হার্ড ডিস্ক স্পেস নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যায় এবং কয়েক শত মে.বা. পর্য্যন্ত জায়গা বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া দ্রুত লোডিং এবং কম সিস্টেম রিসোর্স ব্যবহারের জন্যও ফ্যাট ৩২ জনপ্রিয়। যদি আপনার পিসিতে উইন্ডোজ ৯৫ থাকে তাহলে দেখে নিন সেটি OEM সার্ভিস রিলিজ ২ ভার্সন কিনা, যেটি প্রথম ফ্যাট ৩২ সাপোর্ট করা শুরু করে। এটি পরীক্ষা করার জন্য My Computer -এর রাইট বাটন ক্লিক করে Properties-G দিয়ে General.CL-এর মধ্যে দেখুন 4.00, 450B অথবা 4.00.430.C লেখা আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে বোঝা যাবে যে আপনার ফাইল সিস্টেম ফ্যাট ৩২-এ কনভার্ট করা যাবে- নয়ত নয়। আপনি যদি উইন্ডোজ ৯৫ থেকে (যেটি ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করে) আপগ্রেড করে উইন্ডোজ ৯৮ ব্যবহার শুরু করেন তাহলে আপনি ফ্যাট ৩২ অথবা ফ্যাট ১৬ যে কোনটিই ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ফ্যাট ১৬ ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম হিসেবে কাজ করবে- যদি না আপনি ফ্যাট ৩২ কে স্পেসিফাই করে দেন। মাইক্রোসফট অটোমেটিক্যালি ফাইল সিস্টেম কনভার্ট করার ব্যবস্থা রাখেনি।
সেটওয়ার্ক এনভায়রনমেন্টের কারণে সাধারণত উইন্ডোজ এনটি ব্যবহারকারীরা ডিফল্ট ফাইল সিস্টেম এনটিএফএস-কে বদলায় না। তবে একই মেশিনে যদি উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ ৯৮ লোড করা থাকে এবং দুটি ওএস-ই যদি একই পার্টিশন এক্সেস করতে যায় তখন সেই পার্টিশানের জন্য ফ্যাট ১৬ ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু, যদি শুধু উইন্ডোজ এনটি লোড করা একটি মেশিনে নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অন্য ওএস দ্বারা এক্সেস করা হয় তাহলে ফ্যাট ব্যবহারের দরকার নেই। যদিও উইন্ডোজ ৯৮ বা উইন্ডোজ ৯৫ সরাসরি এনটিএফএস ড্রাইভগুলো পড়তে পারে। আর যদি আমরা হার্ড ডিস্কের সাইজকে ধর্তব্যের মধ্যে আনি তাহলে ২০০ মে.বা-এর কোন একটি ভার্সন এনটিএফএস-এর পরিবর্তে ব্যবহার করা উচিত। উইন্ডোজ ২০০০-এর জন্য এনটিএফএস ব্যবহার করা হয়- কারণ এর সিকিউরিটি ব্যবস্থা ফ্যাট ১৬ বা ফ্যাট ৩২-এর চেয়ে অনেক উন্নত।
ফ্যাট ১৬ কেন প্রয়োজন ?
প্রশ্ন উঠতে পারে, ফ্যাট ৩২ বা এনটিএফএস যদি এতই ভালো হয় তবে কেন ফ্যাট ১৬ এখনও ব্যবহৃত হচেছ ? এর কারণ হলো ফ্যাট ১৬ ছাড়া অন্য কোন ফাইল সিস্টেম উইন্ডোজ এর একাধিক ভার্সন যেমন-উইন্ডোজ এনটি, 3.x, ৪.০ বা উইন্ডোজ ৩.০ ডায়াল বুট করতে পারে না বা একসাথে চালাতে পারে না। এছাড়া এনটিএফএস ইউজার একটি মেশিন এমএস-ডস অথবা উইন্ডোজ 9.x বুট করতে পারে না অথচ ফ্যাট ১৬-এর সিস্টেম তা পারে। উইন্ডোজ ৯৮ এনটিএফএস-এ বুট করতে পারে না, কিন্তু উইন্ডোজ ৯৮ এবং এনটিএফএস উভয়ই ফ্যাট ১৬-এর ড্রাইভগুলো রিড করতে পারে। তাই ডুয়াল বুটিং করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ফ্যাট ১৬-এর যেকোন ভার্সন মেশিনে প্রয়োগ করতে হবে।
একবার যদি ফ্যাট ১৬ থেকে ফ্যাট ৩২ বা এনটিএফএস-এ ফাইল সিস্টেমকে কনভার্ট করেন তাহলে তা পুনরায় কনভার্ট করার কোন সহজ টুল নেই। আবার ফ্যাট ১৬ ফিরে যেতে হলে আপনার হার্ড ড্রাইভকে রিপার্টিশন এবং রিফরম্যাট করতে হবে এবং ওএস আর জরুরী ফাইলগুলোকে রিইনস্টল করতে হবে। কারণ রিপার্টিশনের ফলে হার্ড ড্রাইভ থেকে সমসত ডাটা মুছে যায়।
উইন্ডোজ ৯৫/৯৮ কনভার্সনের বিভিন্ন দিক -
আপনার হার্ড ডিস্ক যদি কোন পুরানো কমপ্রেশন প্রোগ্রাম (যেমন-মাইক্রোসফট ড্রাইভস্পেস অথবা ড্রাইভস্পেস ও) ব্যবহারের মাধ্যমে কমপ্রেসড অবস্থায় থাকে তাহলে সেটিকে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করা যাবে না। যদি আপনার হার্ড ডিস্ক স্থানান্তরযোগ্য হয় এবং এমন কোন ওএস-এর সাথে ব্যবহার করা হয় যা ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল নয় তাহলে ফ্যাট ৩২-এর ড্রাইভটি এক্সেস করতে পারবেন না। আপনার ল্যাপটপে হাইবারনেট” ফিচারটি ব্যবহৃত হয়ে থাকলে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করলে এই ফিচার অফ হয়ে যেতে পারে।
যদি কোনো কারণে আপনি উইন্ডোজ ৯৮ আন ইনস্টল করে উইন্ডোজ-এর এমন কোন ভার্সন ইনস্টল করতে যান, যেটি ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল নয়, আপনি কিন্তু সেটি করতে পারবেন না। এমন অনেক সফটওয়্যারই আপনার পিসিতে থাকতে পারে যেগুলো ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল নয়। সেগুলোর আপগ্রেড ভার্সন সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন।
উইন্ডোজ ৯৮-এ ফ্যাট ৩২-এর কনভার্সন
আপনি এই কনভার্সনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করলে আপনার এই কাজ আরো সহজে সমপন্ন করা সম্ভব।
প্রথমেই একটি বুট ডিস্ক বানিয়ে নিন। এজন্য ডিস্কেট ড্রাইভে একটি খালি ডিস্ক ঢুকান। তারপর ক্লিক করে ক্রমান্বয়ে Start, Settings, Control Panel এবং সবশেষে এবং সবশেষে Add/ Remove Software-এ চলে যান। তারপর যথাক্রমে Startup Disk এবং Create Disk-এ ক্লিক করুন। আপনি পুরো সিস্টেম ব্যাকআপের সুযোগও এই কনভার্সন প্রসেসের সময় পাবেন।
কনভার্সন প্রসেসের শুরুতে যথাক্রমে Start, Programs, Accessories এবং System Tools-এ ক্লিক করুন। ড্রাইভার কনভার্টার উইজার্ড আপনাকে জিজ্ঞেস করবে যে আপনি কোন ড্রাইভকে কনভার্ট করতে চান এবং C:/FAT 16- কে ডিফল্ট হিসেবে দেখাবে। যদি এটি ঠিক হয়ে থাকে, Next -এ ক্লিক করুন। তখন ওয়ার্নিং পাবেন যে কিছু এন্টিভাইরাস এবং ডিস্ক ইউটিলিটিজ ফ্যাট ৩২-তে কাজ করে না। এরপর উইজার্ড পুরো সিস্টেমটাকে চেক করে সেই ধরনরে ইনকমপ্যাটিবল প্রোগ্রামগুলোর একটি লিস্ট তৈরি করে। তারপর স্ক্রীণে ম্যাসেজ আসবে আপনি ফাইলগুলোকে ব্যাকআপ করতে চান কিনা। যদি চান, তাহলে Create Backup-এ ক্লিক করে ডিস্ক ইউটিলিটি চালিয়ে দিন।
এই ব্যাকআপের কাজ শেষ হবার পরে স্ক্রীণে মেসেজ আসবে যদি আপনি ড্রাইভটিকে কনভার্ট করতে চান তাহরে অবশ্যই এমএস-মোডে মেশিন রিস্টার্ট করতে হবে। তারপরের কাজগুলো করবে কমিপউটার নিজে। প্রথম ধাপে একটি নীল স্ক্রীণ দেখা যাবে যেটি বলবে আপনার সিস্টেম মোট কি কি কাজ করছে যার ফলে পুরো ফাইল সিস্টেমকে ফ্যাট ৩২-তে কনভার্ট করা যায়। এরপর পিসি রিস্টার্ট হবে এবং স্বয়ংক্যীয়ভাবে ডিস্ক-ডিফ্র্যাগমেন্টর চালানো শুরু করবে। এজন্য প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগবে। তারপর মেসেজ আসবে যে কনভার্সন প্রক্রিয়া সফলভাবে শেষ হয়েছে।
তবে মনে রাখবেন, যদি হার্ড ড্রাইভে কোন এরর থাকে তাহলে কনভার্টার প্রোগ্রাম আর চলবে না। এ সমস্যা দূর করার জন্য স্ক্যান ডিস্ক চালিয়ে দেখতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যাতে Automatically fix errors বক্সটি সিলেক্ট করা থাকে।
উইন্ডোজ ৯৫-এ ফ্যাট ৩২ কনভার্শন
এটা সবসময় মনে রাখতে হবে যে উইন্ডোজ ৯৫-এর বিভিন্ন ভার্সনের মধ্যে একমাত্র উইন্ডোজ ৯৫ OSR-2 ই ফ্যাট ৩২ কমপ্যাটিবল। ফ্যাট ৩২ কোন কনভার্সন টুল অফার করে না। এ জন্য ড্রাইভ পার্টিশন এবং রিফরম্যাটিংয়ের প্রয়োজন হয়। আপনি ডিস্ক পার্টিশনের জন্য উইন্ডোজ ৯৫-এর FDISK ব্যবহার করতে পারেন। এটি প্রয়োগের খারাপ দিকে হলো - এটি আপনার সমস্ত ডাটাকে মুছে ফেলে। FDISK প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রথমে বুট দিয়ে আপনার পিসিকে স্টার্ট করাতে হবে। তারপর প্রম্পট FDISK টাইপ করতে হবে। FDISK ম্যাসেজ দেখাবে Do you want to enable large hard drive support? এক্ষেত্রে Yes লিখুন, এরপরে আপনার ড্রাইভ ফ্যাট ৩২ হিসেবে ফরম্যাট হবে।
উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ ২০০০-এ কনভার্সন
যেহেতু উইন্ডোজ এনটি বা উইন্ডোজ ২০০০-এর ফাইল সিস্টেমে কনভার্ট করার জন্য কোন উইজার্ড নেই, তাই একাজ একজন সাধারণ ব্যবহারকারীর কাজে জটিল এবং সময় সাপেক্ষ বলে মনে হতে পারে। এটি করতে হলে শুরুতে অবশ্যই পিসিকে সিস্টেম বুট ডিস্কেটের সাহায্যে বুট করতে হবে এবং বুটিং প্রসেসের সময় Command line mode সিলেক্ট করতে হবে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, C: ড্রাইভকে এনটিএফএস-এ কনভার্সনের জন্য টাইপ করতে হবে "Convert C:/fs:ntfs.
FAT 16 এবং FAT 32 এর মধ্যে পার্থক্য
FAT 16 FAT 32
বেশিরভাগ ওএস এমএস-ডস উইন্ডোজ ৯৫, ৯৮, এনটি, ২০০০ ওএস/২ এবং ইউনিক্স এটিকে ব্যবহার করতে পারে। FAT ৩২ উইন্ডোজ ৯৫, ওএসআর২, উইন্ডোজ ৯৮ এবং উইন্ডোজ ২০০০-এ ব্যবহৃত হয়।
২৫৬ মে.বা-এর চেয়ে ছোট লজিক্যাল ড্রাইভের ক্ষেত্রে এই ফাইল সিস্টেম সবচেয়ে বেশি উপযোগী। ৫১২ মে.বা.-এর নিচে ড্রাইভকে ফ্যাট ৩২ সাপোর্ট করে না।
বিভিন্ন ডিস্ক কমপ্রেশন, যেমন Drive Space সাপোর্ট করে। ডিস্ক কমপ্রেশন সাপোর্ট করে না।
Lekha porte shomoshsha Hoi
ReplyDelete